Thank you for trying Sticky AMP!!

ভেসে উঠল শিশু মাহিরের লাশ, এখনো নিখোঁজ আরেক শিশু

ডুবে যাওয়া ট্রলারটিকে ক্রেনের সাহায্যে তোলা হচ্ছে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার রসকাঠি এলাকায়

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ দুই শিশুর মধ্যে একজনের লাশ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ২০০ মিটার দূরে লাশটি ভেসে ওঠে। পরে মাওয়া ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা লাশটি উদ্ধার করেন।

লাশটি শিশু মাহিরের (৫)। সে সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দী ইউনিয়নের খিদিরপুর এলাকার রুবেল শেখের ছেলে। এ নিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো।

Also Read: মুন্সিগঞ্জে বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারডুবির ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে মামলা

এর আগে সকাল আটটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সুবচনী এলাকায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তুরান (৮) নামের আরেক শিশু। আর এখনো নিখোঁজ আছে তুরানের ছোট বোন নাভা (৫)।

মাওয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আবদুল মতিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পুলিশ উদ্ধার অভিযান চালিয়ে আসছে। নিখোঁজ তিন শিশুর সন্ধানে রোববার রাত আটটা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলে। সোমবার ভোর থেকে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। এ সময় ঘটনাস্থলের দুই কিলোমিটার দূরে সুবচনী এলাকায় তুরানের লাশটি ভেসে ওঠে। লাশটি পরিবারকে হস্তান্তর হয়েছে। নিখোঁজ অন্য দুই শিশুর সন্ধান চলছিল। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলের ২০০ মিটার ভাটিতে মাহিরের লাশটি পাওয়া যায়। লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিখোঁজ নাভার সন্ধান চলছে।

ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও যাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা হলেন উপজেলার লতাব্দী ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের শাহজাহানের স্ত্রী মোকছেদা বেগম (৪০), একই এলাকার আফসার উদ্দিনের স্ত্রী এপি আক্তার (২৮), তাঁর বড় বোন পপি আক্তার (৩০), পপির দুই ছেলে সাকিবুল (১০), সজীবুল (৪), একই এলাকার শাহাদাতের মেয়ে হুমায়রা (৫ মাস) এবং ফিরোজ সরকারের ছেলে ফারিয়ান (৮)।

শনিবার সকালে লতাব্দী ইউনিয়নে নারী–শিশুসহ ৪৬ জন ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে ভ্রমণে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে লতাব্দীর দিকে যাচ্ছিল। রাত আটটার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি তলিয়ে যায়।

হতাহতের এ ঘটনায় রোববার বিকেলে দুজনের নাম উল্লেখসহ সাতজনকে আসামি করে লৌহজং থানায় মামলা করেন ছেলে মাহির, দুই বোন, দুই ভাগনে হারানো রুবেল শেখ। মামলায় বেপরোয়া গতিতে বাল্কহেড চালিয়ে মৃত্যু ঘটানো এবং জানমালের ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় নাম উল্লেখ করা দুই আসামি হলেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জাহিদ শিকদার (৫২) ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাপ্পু চোকদার (৪০)। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ওই এলাকায় অবৈধ বাল্কহেড চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেন। বাকি পাঁচ আসামি অজ্ঞাত, তাঁরা বাল্কহেডটির মালিক, চালক ও চালকের সহকারী।

মামলার বিষয়ে লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য মাওয়া নৌ পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে তারা।