Thank you for trying Sticky AMP!!

সিংড়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টকে হাতুড়িপেটার অভিযোগ

হামলার খবর শুনে আহত কর্মী মহিদুল ইসলামকে দেখতে যান ঈগলের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলামের (ঈগল প্রতীক) এক নির্বাচনী এজেন্টের ওপর হামলা হয়েছে। তাঁকে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংড়া উপজেলার বলিয়াবাড়ি-চানপুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এই আসনের নৌকার প্রার্থী তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের কর্মী-সমর্থকেরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে এসে এই হামলা চালান বলে ঈগলের শিবির থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। হামলার শিকার ব্যক্তির নাম মহিদুল ইসলাম (৩৮)। তিনি উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের চান্দু মিয়ার ছেলে।

ঈগলের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সিংড়া পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। তাঁর প্রধান এজেন্ট কামরুল অভিযোগ করেন, তিনি মহিদুল ইসলামকে কলম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচনী এজেন্ট মনোনীত করেছেন। আজ দুপুরে তাঁর ওই এজেন্ট বলিয়াবাড়ি-চানপুর এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় কলম ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানীর নেতৃত্বে ১০টি মোটরসাইকেলে করে নৌকার কর্মীরা সেখানে যান। তাঁরা মহিদুল ইসলামকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে যান। স্থানীয় লোকজন পরে তাঁকে উদ্ধার করে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

Also Read: সরেজমিন নাটোর-৩: প্রতিমন্ত্রী কেন ক্ষমা চাইছেন 

তবে গোলাম রাব্বানী মহিদুল ইসলামকে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা মিথ্যাচার। তিনি কথিত ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।

ঈগলের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, হামলার খবর শুনে তিনি হাসপাতালে মহিদুল ইসলামকে দেখতে গিয়েছিলেন। তাঁর পায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শফিকুল বলেন, ‘এভাবে প্রতিদিনই নৌকার কর্মীরা আমাদের এজেন্ট ও কর্মীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে। তবে এসব করে তারা জয় ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’

যোগাযোগ করা হলে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, এ ব্যাপারে কেউ তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগ দেননি।

Also Read: নাটোর-৩ আসন: নৌকা ও ঈগলের সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ১১

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের সারদানগর ও তেরবাড়িয়া গ্রামে ঈগলের কর্মীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। গভীর রাতে নৌকার ২০-২৫ জন কর্মী সারদানগরে ঈগলের কর্মী মো. সোহাগ হাসানের বাড়িতে হামলা করেন। সোহাগ প্রথম আলোকে বলেন, দরজা ভেঙে ঘর থেকে বের করে সোহাগকে মারধর করেন। পরে তাঁকে এলাকা ছেড়ে যেতে বলেন। ভোট শেষ হওয়ার আগে গ্রামে ফিরলে বিপদ হবে বলে হুমকি দেন। মারধরে তাঁর পা ফুলে গেছে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে।

একই রাতে তেরবাড়িয়া গ্রামে ঈগলের আরেক কর্মী সাজ্জাদ প্রামাণিকের বাড়িতেও হামলা চালান নৌকার কর্মীরা। এই বাড়িতে এসেছিলেন সাজ্জাদ ও তাঁর ছেলেকে খুঁজতে। সাজ্জাদের ছোট ছেলে সাব্বির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১৫-২০ জন নৌকার কর্মী হঠাৎ বাড়ির ভেতর ঢুকে বাবা ও বড় ভাই শামীম হোসেনকে খুঁজতে থাকেন। তাঁদের না পেয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যায়। তারপর থেকে ভয়ে বাবা ও ভাই এলাকাছাড়া।

Also Read: সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রী আসার আগের রাতে ঈগলের সব পোস্টার ছিঁড়ে নিল দুর্বৃত্তরা

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পথসভা ও গণসংযোগে ভোটারদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চান নৌকার প্রার্থী ও প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ। তিনি টানা তিন মেয়াদে এই আসনের সংসদ সদস্য।

গতকাল বুধবার দুপুরে সিংড়ায় নিজের বাসভবনে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। পথসভায় ভোটারদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু জায়গায় মানুষ অসম্মানিত, প্রতারিত ও নির্যাতিত হয়েছে। এসব ঘটনায় কয়েকজন জনপ্রতিনিধির নাম এসেছে। তবে আমার কারণে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলেই বিশ্বাস করি। তারপরও আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আমি নিজে যখন ক্ষমা চাচ্ছি, তখন ভোটাররা বলছেন, তুমি তো অপরাধ করো নাই। তবে এই দায় আমার এড়ানোর সুযোগ নেই। তার খেসারত আমাকে দিতে হচ্ছে।’

Also Read: জরিমানা করায় থানার সামনে প্রতিমন্ত্রীর কর্মীদের বিক্ষোভ