Thank you for trying Sticky AMP!!

নিহত জিয়ার হোসেনের স্বজনেরা। বুধবার কুমারখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন

ডিসি-এসপির কাছে বাবা হত্যার বিচার চাইলেন সন্তানেরা

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় মারা যাওয়া জেলে জিয়ার হোসেনের (৪৫) হত্যার বিচার চেয়েছেন তাঁ স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনেরা। জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা ও পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিবের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা এই দাবি জানান।

আজ বুধবার বেলা একটার দিকে কুমারখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে তাঁদের সাক্ষাৎ হয়। এ সময় কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

Also Read: কুমারখালীতে নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু

সাক্ষাৎকালে নিহত ব্যক্তির মেজ মেয়ে শিলা খাতুন বলেন, ‘সুষ্ঠু তদন্ত করে আমার বাপের হত্যার বিচার আপনারা করবেন।’ স্ত্রী রিনা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই। আপনারা সঠিক বিচার করবেন।’ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক বিচারের আশ্বাস দেন।

এর আগে গত শুক্রবার সকালে জেলে জিয়ার হোসেনের ওপর হামলা হয়। গত সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জিয়ার হোসেন কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের বের কালোয়া গ্রামের মৃত কেঁদো শেখের ছেলে।

স্বজনদের অভিযোগ, নৌকায় ভোট দেওয়ায় গত শুক্রবার সকালে সাবেক ইউপি সদস্য খালেক ও তাঁর সন্তানদের নেতৃত্বে জিয়ার হোসেন ও তাঁর ভাই আলতাফ হোসেনকে গুলি করে আহত করা হয়। ওই ঘটনায় গত শনিবার ১৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন জিয়ারের ছোট ভাই ইয়ারুল হোসেন।

ডিসি-এসপির কাছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বের কালোয়া গ্রামে নিহত জিয়ার হোসেন হত্যার বিচার চান স্বজনেরা

হত্যাকাণ্ড কেন্দ্র করে বের কালোয়া গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রেপ্তার ও হামলার আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন আসামিপক্ষের লোকজন। বুধবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেকের বাড়িতে নারী ও শিশুরাও নেই। কারও বাড়িতে তালা ঝুলছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকার মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আসামিপক্ষের চাঁদ আলীর স্ত্রী মেরিনা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তবে ইউপি সদস্য খালেকের সমর্থক। এ জন্য ভয়ে তাঁর স্বামী-সন্তানেরা পালিয়েছেন। তাঁর দাবি, গ্রেপ্তার ও হামলার আতঙ্কে অর্ধশতাধিক বাড়ির লোকজন পালিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বের কালোয়া গ্রামের আবদুল খালেকের সঙ্গে মৃত কেঁদো শেখের ছেলেদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ১০-১৫ বছর ধরে সামাজিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। পদ্মা নদীতে মাছ ধরা, যেকোনো নির্বাচনসহ বিভিন্ন অজুহাতে প্রায়ই সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার সকালে বের কালোয়া মোড়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ালে দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়ার মারা যান। এর আগে ২০২১ সালে একই জায়গায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় করা মামলা এখনো আদালতে বিচারাধীন।

Also Read: কুমারখালীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে দুই ভাই আহত

নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই ও মামলার বাদী ইয়ারুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক ইউপি সদস্য খালেক ও তাঁর ছেলেদের সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। তাঁরা জেলেদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা দাবি করতেন। তাঁরা বিভিন্ন অজুহাতে মানুষের ওপর হামলা করে আসছেন। এবার নৌকায় ভোট দেওয়ায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেছেন। তিনি সুষ্ঠু বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছেন।

কুমারখালী থানার ওসি আকিবুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Also Read: নির্বাচনী সহিংসতায় ১৫ প্রাণহানি: এইচআরএসএস