Thank you for trying Sticky AMP!!

চট্টগ্রামে বিতর্কিত সেই জাহাজভাঙা ইয়ার্ডে উচ্ছেদ অভিযান

পাঁচ একর বনভূমির জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা জাহাজভাঙা ইয়ার্ড উচ্ছেদে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড তুলাতুলী এলাকায়, ২৯ মে

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সলিমপুর উপকূলে বনের জায়গা ইজারা দেওয়া সেই বিতর্কিত জাহাজভাঙা ইয়ার্ডে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সোমবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে কোহিনূর স্টিল ইয়ার্ডে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন।
অভিযানের সময় সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহদাত হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম ও সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন।

ইউএনও শাহদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশে এখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। এখানে গাছপালা আছে। ইজারা দেওয়ার সময় পাকা স্থাপনা করার অনুমতি দেওয়া না হলেও পাকা স্থাপনা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই ইজারার নবায়নও করা হয়নি।

কোহিনূর স্টিলকে গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ৫ একর জমি ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। ইজারার চুক্তিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষে স্বাক্ষর করেছিলেন ইউএনও শাহদাত ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল। এই ইজারার বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে বনের জায়গা দাবি করে আসছিল বন বিভাগ।

এর আগে ২০১৯ সালে একই জায়গায় ৭ দশমিক ১০ একর বনের জমি বিবিসি স্টিল নামে অপর একটি জাহাজভাঙা কারখানাকে ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। তখন বন বিভাগ তাতে আপত্তি জানায়। প্রথমবারের ইজারা বাতিলের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ইজারা বাতিলের নির্দেশ দেন।

ওই ইজারা বাতিলের পর নতুন করে একই ব্যক্তি, অর্থাৎ বিবিসি স্টিলের মালিক আবুল কাশেম কোহিনূর স্টিল নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ইজারার আবেদন করেন। পরে জেলা প্রশাসন ওই প্রতিষ্ঠানকে ৫ একর বনভূমি ইজারা দেয়। তখনকার জেলা প্রশাসক ছিলেন মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।

বনের জায়গা এভাবে ইজারা দেওয়ার বিষয়ে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‌‘প্রথমে ব্যর্থ পরে কৌশলে ইজারা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

চট্টগ্রামে নতুন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান দায়িত্ব নেওয়ার পর বিতর্কিত এই জায়গাটিতে কোহিনূর স্টিলকে দেওয়া ইজারা চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। এর মধ্যে ইয়ার্ডে গড়ে তোলা হয় একটি দ্বিতল ও একটি একতলা দালান। বসানো হয় হুইচ পাইপ। জাহাজ আনার জন্য যাবতীয় প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

একই জায়গা নতুন করে ইজারা দেওয়ায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আদালত অবমাননার আবেদন জানায়।

জানতে চাইলে বেলার আইনজীবী হাসানুল বান্না প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমে বিবিসি ইয়ার্ডকে ইজারা দিয়েছিল। পরে তা আদালত বেআইনি ঘোষণা করেন। এরপর আবার একই জায়গা একই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান কোহিনূর স্টিলকে ইজারা দিলে আদালত অবমাননার আবেদন জানানো হয় বেলার পক্ষে।

Also Read: প্রথমে ব্যর্থ, পরে ‘কৌশলে’ ইজারা

সোমবার (আজ) এ নিয়ে উচ্চ আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের কাছে দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে। এখন রাষ্ট্রপক্ষ উচ্ছেদ শুরু করতে পারে।

সোমবারের অভিযানে পাকা স্থাপনা আংশিক ভাঙা হয়। এ সময় ইয়ার্ডের লোকজন তাতে বাধা দিতে এলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেন। তবে স্থাপনা পুরোপুরি উচ্ছেদ করা হয়নি।

জানতে চাইলে ইউএনও শাহদাত হোসেন বলেন, উচ্ছেদ শুরু করা হয়েছে। দু–এক দিনের মধ্যে আবার উচ্ছেদ চালানো হবে।