Thank you for trying Sticky AMP!!

লামায় ম্রোপাড়ায় হামলাকারীদের শাস্তির দাবি ৪২ বিশিষ্টজনের

বান্দরবানের লামায় সরইয়ের রেংয়েনপাড়ার হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর ম্রোদের একটি ঘর

বান্দরবানের লামা উপজেলার ম্রোপাড়ায় লুটপাট, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৪২ বিশিষ্টজন। আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়। এতে ম্রো জাতিসত্তার মানুষদের ওপর হামলায় দায়ী রাবার কোম্পানি ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়।

গত রোববার রাতে রেংয়েন ম্রোপাড়ায় হামলা চালিয়ে লুটপাট, সাতটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। শীতের রাতে হামলার সময় পাড়ার নারী-পুরুষ ও শিশুরা পালিয়ে রক্ষা পেলেও তাদের ঘরবাড়ি থেকে কাপড়চোপড়, মালামাল হামলাকারীরা নিয়ে গেছে।

গত বছরের ২৬ এপ্রিল রেংয়েনপাড়া, লাংকমপাড়া ও জয়চন্দ্র ত্রিপুরাপাড়ায় ৩৫০ একর জুমের জমি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে। সেই সময় কোম্পানির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা মামলায় কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার এবং ম্রো ও ত্রিপুরাদের পুনর্বাসনের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, হামলার আগে রোববার সন্ধ্যায় লামা থানার উপপরিদর্শক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা পাড়াবাসীদের শাসিয়ে যান, এ এলাকায় বাড়িঘর করা যাবে না। সব ভেঙে ফেলা হবে। এরপরই রাতে রাবার কোম্পানির লোকজন ম্রোপাড়ায় হামলা চালান। তাই পাড়ার মানুষ এত অসহায়ত্বের মধ্যে থেকেও পুলিশের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত পাড়ার আদিবাসীদের অভিযোগ, জমি দখলের জন্য লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির লোকজন তাঁদের ফসলে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়েছে। এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করতে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক স্থানীয় সরকারের উপপরিচালকে প্রধান করে গঠিত পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটি লিজ বাতিলসহ ছয় দফা সুপারিশ দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি। বরং গত ৬ সেপ্টেম্বর আদিবাসীদের পানির একমাত্র উৎস পাহাড়ি ঝিরির পানিতে বিষ মেশানো হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

Also Read: লামায় ম্রোপাড়ায় আবার হামলা, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট

এ অবস্থায় আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা, রাবার কোম্পানির অবৈধ লিজ অবিলম্বে বাতিল করাসহ সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিদাতারা হলেন হামিদা হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুলতানা কামাল, অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, খুশী কবির, জেড আই খান পান্না, আবুল বারকাত, ইফতেখারুজ্জামান, স্বপন আদনান, শিরিন হক, সেলিম সামাদ, মেঘনা গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, শাহীন আনাম, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, রানা দাশগুপ্ত, সুব্রত চৌধুরী, পারভীন হাসান, কাজল দেবনাথ, তবারক হোসাইন, রেহনুমা আহমেদ, শামসুল হুদা, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সারা হোসেন, সঞ্জীব দ্রং, শহিদুল আলম, জাকির হোসেন, অধ্যাপক বীনা ডি কস্টা, অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, তাসনিম সিরাজ মাহবুব, আকমল হুসেন, সাদাব নুর, অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, জোবাইদা নাসরীন, নাসের বখতিয়ার, হানা শামস আহমেদ, রেজাউল করিম চৌধুরী, দীপায়ন খীসা, মুক্তাশ্রী চাকমা, রোজিনা বেগম ও লেলুং খুমী।

Also Read: ৪৮টি ম্রো পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ