Thank you for trying Sticky AMP!!

আশরাফুল আনসারী ও ফজিলাতুন নেছা

চাকরি ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা আনসারী

রংপুরের বাসিন্দা আশরাফুল আনসারী আগে কাজ করতেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে। চাকরির সুবাদে বিভিন্ন দেশে যেতে হতো তাঁকে। যেসব দেশে যেতেন যাওয়ার আগে সেখানকার বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের জন্য নিয়ে যেতেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের তৈরি পোশাক ও বিভিন্ন পাটজাত পণ্য। এ কাজ করতে গিয়ে একসময় নিজেই এসব পণ্য বানাতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পাশাপাশি দেশে থাকা তাঁর স্ত্রী ফজিলাতুন নেছাও শেখেন সেলাইয়ের কাজ। একসময় নৌবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দেন আনসারী। এরপর এই দম্পতি মিলে গড়ে তোলেন শতরঞ্জি ও পাটজাত পণ্য উৎপাদনের প্রতিষ্ঠান লিডিং স্টাইল।

Also Read: হাজার থেকে শতকোটি টাকার ব্যবসা রাজা গ্রুপের

বর্তমানে এই দম্পতি শতরঞ্জি, শাল, ব্যাগ, ফ্লোরম্যাটসহ বিভিন্ন পাটজাত পণ্য তৈরি করেন। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিক্রেতাদের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি দেশেও যাচ্ছে তাদের পণ্য। নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করতে আশরাফুল আনসারী ও ফজিলাতুন নেছা অংশ নেন এ বছরের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) মেলায়। সেখানেই গত বুধবার কথা হয় তাঁদের সঙ্গে।

আশরাফুল আনসারী ১৯৯২ সালে নৌবাহিনীতে রেগুলেটরি বিভাগে চাকরি শুরু করেন। ২১ বছর চাকরি শেষে ব্যবসা শুরু করার জন্য ২০১২ সালে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। অন্যদিকে নৌবাহিনী থেকেই সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নেন তাঁর স্ত্রী ফজিলাতুন নেছা। পাশাপাশি পাটজাত পণ্য ও শতরঞ্জি তৈরিতে হাত পাকান তিনি।

Also Read: নারী উদ্যোক্তারা কেন পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না

চাকরি ছেড়ে ২০১৩ সালের শুরুতে নিজ জেলা রংপুরে চলে যান আনসারী ও ফজিলাতুন নেছা। এরপর মাত্র ২ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেন লিডিং স্টাইল নামের প্রতিষ্ঠান। রংপুরের মডার্ন মোড়ে নিজেদের বাসাকেই প্রথম কারখানা হিসেবে ব্যবহার করেন এই দম্পতি। পরে লালমনিরহাটের কাকিনা ও কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পঞ্চাশ শতকের বেশি জায়গায় নিয়ে গড়ে তোলেন আলাদা দুটি কারখানা। পণ্য তৈরির পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য চিলমারীতে স্থাপন করেছেন আনসারী ইনোভেটিভ লার্ন ফর ওমেন নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

মাত্র পাঁচ–ছয়জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করা লিডিং স্টাইলে বর্তমানে কাজ করছে সাড়ে তিন শর বেশি শ্রমিক। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন ২ কোটি টাকার বেশি।

দেশের অভ্যন্তরে বছরে সাড়ে ৪ কোটি টাকার মতো পণ্য বিক্রি করে লিডিং স্টাইল। বিভিন্ন ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুসারে পণ্য তৈরি করে তারা। এ ছাড়া তাদের থেকে এসব পণ্য কিনে কিছু ব্যবসায়ী বিদেশে রপ্তানিও করেন। এভাবে বছরে আয় হয় ৭ কোটি টাকার বেশি। দেশ ও বিদেশের বিক্রি মিলিয়ে বছরে প্রায় ১২ কোটি টাকার মতো পণ্য বিক্রি করেন এই দম্পতি। ফজিলাতুন নেছা জানান, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, কম্বোডিয়া, ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে তাঁদের তৈরি পণ্য।

এ বছর এসএমই মেলায়ও গ্রাহকদের থেকে বেশ সাড়া পেয়েছেন তাঁরা। আনসারী জানান, মেলায় ১০ লাখ টাকার বেশি নগদ বিক্রি ও ৫০ লাখ টাকার মতো ক্রয়াদেশ পেয়েছে তাঁদের প্রতিষ্ঠান।

দেশের বাজারে সাফল্যের পর এই দম্পতি এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি পণ্য রপ্তানির পরিকল্পনা করছেন। তাঁরা বলেন, ‘আমাদের পণ্য বিভিন্ন ক্রেতার মাধ্যমে ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। তাই এখন আমরা নিজেরাই রপ্তানিতে যেতে চাই।’

Also Read: ব্রেক্সিটের কারণেও যুক্তরাজ্যে খাবারের দাম বাড়ছে