Thank you for trying Sticky AMP!!

কিছু ব্যাংক নারীদের জন্য পণ্য এনেছে, এটা লোকদেখানো

কর্মশালার ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক লীলা রশিদ বলেছেন, এসএমই খাত নিয়ে যত আলোচনা হয়, বাস্তবে ততটা না। আর নারী উদ্যোক্তা তো আরও কম। ব্যাংকগুলোতে সব বড় ঋণ নিয়ে আলোচনা হয়, সেখানে এসএমইর কোনো অবস্থান নেই। নারী উদ্যোক্তার ঋণ তো আরও নেই। কিছু ব্যাংক নারীদের জন্য নতুন পণ্য এনেছে, এটা লোকদেখানো। এসব ব্যাংকে নারীদের ঋণ সামান্যতম।

বাংলাদেশ ওমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডব্লিউসিসিআই) আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল কর্মশালায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সঞ্চালনা করেন বিডব্লিউসিসিআইয়ের সভাপতি সেলিমা আহমাদ।

লীলা রশিদ বলেন, ‘সহজেই যেন ট্রেড লাইসেন্স খোলা যায়, এ জন্য আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দিয়েছি। যাঁরা অনলাইনে ব্যবসা করেন, তাঁদের ট্রেড লাইসেন্স খোলার বিষয়টি তথ্যপ্রযুক্তি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবে। ব্যবসায় নামতে হলে আগে নথিপত্র তৈরি করতে হবে। এ জন্য সবচেয়ে ভালো হলো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা, যা নথিপত্র তৈরিতে সহায়তা করতে পারে।’

Also Read: এসএমই দিবসে নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে আলোচনা

লীলা রশিদ আরও বলেন, ‘ব্যাংক খাত পুরুষ–নিয়ন্ত্রিত, ঠিক সমাজের মতোই। নারীরা ব্যবসা করলে অনেকে মনে করেন এর পেছনে স্বামী, বাবা বা ছেলে রয়েছেন। এই মিথ আমাদেরই ভাঙতে হবে। করোনায় প্রণোদনা প্যাকেজে এসএমই খাতের ঋণ কম বিতরণ হয়েছে। নারীদের ঋণ তো আরও কম। কেউ বলেন সুদহার কম। আবার কেউ বলছেন, বড়দের দেওয়া শেষ হলে ছোটদের দেওয়া হবে। নারী উদ্যোক্তাদের ঋণের জন্য ব্যাংকে যেতে হবে। ব্যাংক ঋণ না দিলে তাদের কাছে লিখিত নিতে হবে। এর কারণ জানতে হবে। নারী উদ্যোক্তারা এসব কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তারা বলেন, বিকাশ থেকে রকেটে টাকা নেওয়া যায় না। আবার খরচও অনেক বেশি। এদিকে ব্যাংকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির টাকা পেতে ২৪ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। যাঁরা অনলাইনে ব্যবসা করেন, তাঁরা কোনো ঋণ পাচ্ছেন না। নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংকগুলো ঋণ দিচ্ছে না। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে পণ্য পৌঁছাতে ৭ দিনের বেশি সময় লেগে যাচ্ছে।

ব্যাংক খাত পুরুষ–নিয়ন্ত্রিত, ঠিক সমাজের মতোই। নারীরা ব্যবসা করলে অনেকে মনে করেন এর পেছনে স্বামী, বাবা বা ছেলে রয়েছেন।
লীলা রশিদ, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

Also Read: করোনাকালেও লাভের মুখ

কর্মশালায় বিকাশের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদির বলেন, ‘আমাদের সেবায় যত ডিজিটাল লেনদেন করবেন, খরচ ততই কমবে। তাই নিজ থেকেই খরচ কমানোর পরিকল্পনা করতে হবে। নারী উদ্যোক্তারা মার্চেন্ট হিসাব খুলতে পারেন। এসব হিসাবে লেনদেনের কোনো সীমা নেই। অনেকেই বলছেন, বিকাশ থেকে অন্য এমএফএসে টাকা পাঠানো যায় না। আশা করছি, আগামী সপ্তাহেই এই সুবিধা চালু হয়ে যাবে। আবার বিকাশ থেকে এখন ছোট আকারে ঋণও পাওয়া যাচ্ছে।’

কামাল কাদির আরও বলেন, এখন ঘরে বসে হিসাব খোলা যাচ্ছে। এর ফলে নারীদের হিসাব খোলা রাতারাতি বেড়ে গেছে। কারণ, অনেকেই নিজের পরিচয়পত্র ও ছবি অন্যের কাছে দিতে চান না। বিকাশের ৪ কোটি ৮০ লাখ হিসাবের মধ্যে ৩৯ শতাংশ নারীদের। মোবাইল ব্যবহারের চেয়ে বিকাশ ব্যবহার কোনো অংশেই কঠিন না। তাই ব্যবসার ক্ষেত্রে বিকাশ ব্যবহারে আহ্বান জানান তিনি।

বিডব্লিউসিসিআইয়ের সভাপতি সেলিমা আহমাদ বলেন, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য ডিজিটাল ইকোনমিকে এগিয়ে নিতে হলে নারী উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে।

কর্মশালায় আরও অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত সচিব খন্দকার আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদসহ আরও অনেকে।