Thank you for trying Sticky AMP!!

সঞ্চয় ভাঙার পরও বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে

স্বর্ণা চো সান

নিজে কিছু করার স্বপ্ন থেকেই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোডে পারলার খুলেছিলেন স্বর্ণা চো সান। ১২ বছরের চেষ্টায় একটু একটু করে দাঁড় করান তাঁর স্বপ্নের পারলার রূপান্তর। বেশ বড় একটা জায়গা ভাড়া নিয়েই পারলারটা তৈরি করেছিলেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এই নারী। কিন্তু তাঁর এক যুগের এই ব্যবসায় সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি দিল করোনা। গত বছর মার্চে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন তিনি। সেই ক্ষতি একটু একটু করে কাটিয়ে উঠছিলেন। কিন্তু করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের ফলে আবারও বড় ধরনের আতঙ্ক ভর করেছে স্বর্ণার মনে।

নতুন বিধিনিষেধ আরোপে প্রথম দিন গত সোমবার পারলার বন্ধ ছিল। বাকি দুই দিন অল্প সময়ের জন্য খুললেও গ্রাহক ছিল না বললেই চলে। তাতে প্রতিদিনই লোকসান বাড়ছে স্বর্ণার। কারণ, পারলার বন্ধ থাকলেও দৈনন্দিন খরচ বন্ধ নেই। স্বর্ণার বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরে। তিনি বলেন, ২৬ বছর আগে ঢাকায় এসেছেন। ঢাকায় এসে নামকরা দুটি পারলারে কাজ করেছেন। পরে নিজের ব্যবসা দাঁড় করান। সবকিছু ভালোই চলছিল। দুই সন্তানের পড়ালেখা, সংসার খরচ—সবই পারলারের আয়ে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু করোনা এসে সব ওলটপালট করে দিল। স্বর্ণা জানান, গত বছর করোনার কারণে সরকারি ছুটির সময়ে তিন মাসের মতো পারলার বন্ধ ছিল। এরপর খুললেও প্রায় আট মাস তেমন কোনো আয়ই হয়নি। তাই বাড়িভাড়া, পারলারভাড়া, কর্মীদের বেতন আর সংসার চালাতে গিয়ে সঞ্চয় যা কিছু ছিল, তা উজাড় হয়ে যায়। অবস্থা এখন এতই খারাপ, বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে।

স্বর্ণার পারলারে ১২ জনের মতো কর্মী ছিলেন। করোনার ধাক্কা সামাল দিতে গত বছরই অর্ধেক কর্মী বাদ দিতে হয়। এখন ছয়-সাতজন কর্মী দিয়ে পারলার চালানো হচ্ছে। স্বর্ণা বলেন, ‘বিধিনিষেধের কারণে বিকেলের পরই পারলার বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কত দিন এ অবস্থা চলবে, জানি না। সামাজিক ও বিয়েশাদির অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদেরও আয় একেবারে কমে গেছে। কারণ, এখন দিনে দু-একজন গ্রাহক যাঁরা আসেন, তাঁরা সামান্য কাজ করান। তাতে আয়ও কম। সঞ্চয় যা ছিল, এরই মধ্যে তা ভেঙে ফেলেছি। কারও কাছে হাতও পাততে পারছি না। তাই চলমান বিধিনিষেধ যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে কীভাবে টিকে থাকব, জানি না।’

স্বর্ণার মতে, ‘বড় পারলারগুলো হয়তো বিপর্যয় সামাল দিতে পারবে। আমার মতো ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা যাঁরা আছেন, তাঁদের সহায়তা ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন।’

Also Read: ভরা মৌসুমে মাথায় হাত