Thank you for trying Sticky AMP!!

এসএসসি ২০২২ - ভূগোল ও পরিবেশ | অধ্যায় ২ : সৃজনশীল প্রশ্ন

অধ্যায় ২

শরতের মেঘমুক্ত রাতের আকাশ। সানজিদ বাসার ছাদে বসে আকাশে বিভিন্ন আলোর খেলা দেখছিল। সে লক্ষ করল, কিছু আলোকবিন্দু মিটমিট করে জ্বলছে। কোনোটি আবার স্থির হয়ে জ্বলজ্বল করছে। এতে সানজিদের কৌতূহল বেড়ে গেল। সে লক্ষ করল, মহাকাশের উত্তর-দক্ষিণ বরাবর সাদা আলোর দীর্ঘ একটি রাস্তা দেখা যায়। হঠাৎ সে দেখতে পেল, যেন একটি তারা তার দিকেই ছুটে আসছে।

প্রশ্ন

. সূর্যের নিকটতম নক্ষত্রের নাম কী?

খ. কৃত্রিম উপগ্রহ বলতে কী বোঝো?

গ. সানজিদের দেখা মিটমিট করে জ্বলতে থাকা আলোগুলো আসলে কী? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. সানজিদের দেখা সাদা আলোর দীর্ঘ পথ ও তার দিকে ছুটন্ত তারার ঘটনা দুটির মধ্যে একটি সম্পর্ক স্থাপন করো।

উত্তর

ক. সূর্যের নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টারাই।

খ. মানুষের তৈরি বিভিন্ন উপগ্রহ আছে, যেগুলো পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। এদের কৃত্রিম উপগ্রহ বলে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস সংগ্রহ, তথ্য আদান–প্রদান, গোয়েন্দা নজরদারি, খনিজ সম্পদের সন্ধান, পরিবেশদূষণ নির্ণয় ইত্যাদি কাজে এসব কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়।

গ. সানজিদের দেখা মিটমিট করে জ্বলতে থাকা আলোগুলো হলো নক্ষত্র।

নক্ষত্রের নিজের আলো আছে বলে এদের আকাশে মিটমিট করে জ্বলতে দেখা যায়। মহাকাশে অসংখ্য নক্ষত্র রয়েছে। নক্ষত্রগুলো হলো জ্বলন্ত গ্যাসপিণ্ড। এরা হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে তৈরি। এই গ্যাস অতি উচ্চ, প্রায় ৬০০০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জ্বলছে। এদের আলো ও উত্তাপ আছে। সূর্য এমন একটি নক্ষত্র। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব অন্য সব নক্ষত্রের চেয়ে অনেক কম বলে একে এত বড় দেখায়। সূর্যের প্রখর আলোর জন্য দিনের বেলায় অন্যান্য দূরবর্তী নক্ষত্র দেখা যায় না।

পৃথিবী থেকে দেখলে মনে হয়, নক্ষত্রগুলো যেন একই সমতলে অবস্থান করছে। কিন্তু পৃথিবী থেকে এরা বিভিন্ন দূরত্বে অবস্থান করছে। নক্ষত্রের আকার, আকৃতি, ঘনত্ব ও মহাকর্ষ বল বিভিন্ন হয়। কোনো কোনো নক্ষত্রের আকার গোল, কোনোটি সর্পিল, আবার কোনোটি অবয়বহীন। কোনোটির ঘনত্ব ও মহাকর্ষ বল অত্যধিক। সানজিদের দেখা মিটমিট করে জ্বলতে থাকা আলোগুলো আসলে এ ধরনের নক্ষত্র।

ঘ. সানজিদের দেখা সাদা আলোর দীর্ঘ পথ হলো ছায়াপথ আর ছুটন্ত তারা হলো উল্কা। উভয়ই মহাকাশের অংশবিশেষ। শীতকালে রাতের বেলা পরিষ্কার আকাশে লক্ষ করলে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর সাদা আলোর দীর্ঘ পথ লক্ষ করা যায়। তারকাখচিত এই আলোর পথই হলো ছায়াপথ। আমাদের সৌরজগৎ এ ছায়াপথেরই অন্তর্গত।

একটি ছায়াপথ লক্ষ কোটি নক্ষত্রের সমষ্টি। রাতের মেঘমুক্ত আকাশে অনেক সময় মনে হয় যেন নক্ষত্র ছুটে যাচ্ছে বা মনে হয়, কোনো নক্ষত্র যেন খসে পড়ল। এ ঘটনাকে নক্ষত্রপতন বা তারা খসা বলা হয়। এরা আসলে কোনো নক্ষত্র নয়, এদের নাম উল্কা। মহাশূন্যে অজস্র জড়পিণ্ড ভেসে বেড়ায়। এসব জড়পিণ্ড অভিকর্ষ বলের আকর্ষণে প্রচণ্ড গতিতে (সেকেন্ডে প্রায় তিন কিলোমিটার) পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে।

বায়ুর সংস্পর্শে এসে বায়ুর সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে এরা জ্বলে ওঠে। সুতরাং সানজিদের দেখা মহাকাশে সাদা আলোর দীর্ঘ পথ হলো নক্ষত্রের সমাবেশ ছায়াপথ আর ছুটন্ত তারকার মতো বস্তুটি হলো উল্কাপিণ্ড।

মো. শাকিরুল ইসলাম, প্রভাষক, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

এই অধ্যায়ের প্রকাশিত পূর্বের সৃজনশীল প্রশ্ন