Thank you for trying Sticky AMP!!

খুঁজে দেখোতো এখানে সোনালি অনুপাত দেখতে পাও কিনা?

স্বর্ণাক্ষরে সোনালি অনুপাত | গণিত ইশকুল

গণিত অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি

আজ আমরা গণিতের একটি মজার সংখ্যা সম্পর্কে জানব। তা হলো ‘সোনালি অনুপাত’। অনেকেই হয়তো নাম দেখে চিনে ফেলেছ। এটি কেন মজার, তা নিচে বলছি।

সবাই পাইয়ের (π) মান সম্পর্কে জানো। অর্থাৎ দশমিকের পরে অসীম সংখ্যক মান চলে আসে! ঠিক এ রকমই আরেকটি সংখ্যা হলো সোনালি অনুপাত, যাকে গ্রিক অক্ষর φ (ফাই) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এর মান হলো φ = ১.৬১৮০৩৩৯৮...। অর্থাৎ পাইয়ের মতো দশমিকের পরে এটির মান আসতেই থাকবে!

হাজার বছর ধরে এটি শুধু গণিতজ্ঞদেরই নয়, চিত্রশিল্পী, স্থপতি ও সংগীতজ্ঞদেরও চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে! আমরা জানি, সর্বত্রই গণিত বিদ্যমান। তার একটা উদাহরণ হলো এই সোনালি অনুপাত। কোথায় নেই সোনালি অনুপাত?

শামুকের খোলস, সমুদ্রের ঢেউ, সূর্যমুখীর মাঝে, হাতের তালুতে...বলে শেষ করা যাবে না!

এমনকি আবার মৌচাকের স্ত্রী ও পুরুষের সংখ্যা, মৌমাছির ও খরগোশে বংশানুক্রমও হলো এই সোনালি অনুপাত!

এই অনুপাত সম্পর্কে প্রথম ধারণা দিয়েছিলেন আমাদের জ্যামিতির গুরু ইউক্লিড। তাঁর লেখা এলিমেন্টসে প্রথম সোনালি অনুপাতের ধারণা পাওয়া যায়।

এ তো গেল সোনালি অনুপাত নিয়ে কথা, এবার আসি এটাকে অনুপাত বলা হচ্ছে কেন, সে কথায়!

ধরো, একটি কাঠিকে তুমি দুই ভাগে ভাগ করলে, যাতে বড় অংশ ও ছোট অংশের ভাগফল ও এই কাঠির সম্পূর্ণ অংশ ও বড় অংশের ভাগফলের সমান হয়। তাহলে তুমি এটিকে সোনালি অনুপাত বলতে পারো।

এবার নিশ্চয় বুঝেছ কেন এটিকে সোনালি অনুপাত বলা হচ্ছে?

একটা মজার তথ্য জানিয়ে রাখি, এই সোনালি অনুপাতের সঙ্গে আবার ফিবোনাচ্চি ধারার খুব ভালো সম্পর্ক আছে! হ্যাঁ ঠিকই শুনেছ! যদি ফিবোনাচ্চি ধারার কোনো পদকে তার আগের পদ দ্বারা ভাগ করা হয়, তাহলে সোনালি অনুপাতের কাছাকাছি একটি মান পাওয়া যাবে এবং যত এগোতে থাকবে, তত এই মান নিখুঁত হবে (এভাবে এগোতে এগোতে একসময় এটির মান স্থির হয়ে যাবে, এটি খুঁজে বের করার দ্বায়িত্ব তোমাদের!)

যেমন—

১৩ ÷ ৮ = ১.৬২৫

২১ ÷ ১৩ = ১.৬১৫৩৮৪৬...। অর্থাৎ যত বাড়তে থাকবে, তত কাছের মান পেতে থাকবে!

পৃথিবীর বিভিন্ন স্থাপনা ও শিল্পকর্মের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই সোনালি অনুপাত ব্যবহার করা হয়।

আরো একটা মজার তথ্য জানিয়ে রাখি, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি তাঁর বিভিন্ন চিত্রকর্মে এই সোনালি অনুপাত ব্যবহার করেছেন! এ ছাড়া আইফেল টাওয়ার, তাজমহল, মিসরের পিরামিডসহ বর্তমানে বিভিন্ন মসজিদ ও মন্দিরে এই অনুপাত ব্যবহার করা হয়। সংগীতের ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার আছে। যেমন ভায়োলিন, স্পিকার ও বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র তৈরিতে সোনালি অনুপাত ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের লোগোকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য সোনালি অনুপাত ব্যবহার করছে। যেমন হোন্ডা, অ্যাপল, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ইত্যাদি।

মানুষের দেহে সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি জিনিস ডিএনএতেও সোনালি অনুপাতের দেখা পাওয়া যায়! তোমরা যদি তোমাদের আঁকা আয়ত, চতুর্ভুজ বা বিভিন্ন অঙ্কনকে আরও সুন্দর করতে চাও, তাহলে তাতে সোনালি অনুপাতের প্রয়োগ করতে পারো, এতে চিত্রটা আরও সুন্দর দেখাবে।

আজ এখানেই শেষ করছি। তোমাদের জীবন সোনালি অনুপাতের মতো সুন্দর হোক, এ কামনা করি!

Also Read: পিথাগোরাসের উপপাদ্য কি আসলেই পিথাগোরাসের আবিষ্কার | গণিত ইশকুল