Thank you for trying Sticky AMP!!

ঈদের দিনে কী করব

ফজরের নামাজ আদায়: ঈদের দিনটি শুরু করতে হবে ভোরে ফজর নামাজ জামাতে আদায় করার মধ্য দিয়ে। সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বরাতে বলা হয়েছে যে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এশা ও ফজর নামাজের মধ্যে কী আছে, তারা সেটা জানতে পারলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এই দুই নামাজের জামাতে শামিল হতো। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)

 ফিতরা দেওয়া: ঈদের নামাজের আগেই ফিতরা দেওয়া বড় ইবাদত। প্রত্যেক প্রাপ্ত বা অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, গোলাম-আজাদ সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করতে হবে। শিশুর পক্ষ থেকে তার অভিভাবক ফিতরা আদায় করবেন।

 পরিচ্ছন্ন হওয়া: ঈদের দিন গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা একান্ত প্রয়োজন। কেননা এ দিন সব মানুষ নামাজ আদায়ের জন্য মিলিত হন। ইমাম মালেক (রহ.) বলেছেন, আমি আলেমদের কাছ থেকে শুনেছি, তারা প্রত্যেক ঈদে সুগন্ধি ব্যবহার ও সাজসজ্জাকে মোস্তাহাব বলেছেন। এ দিনে যেহেতু সব মানুষ একত্র হন, তাই উচিত হলো, তার প্রতি আল্লাহর যে নিয়ামত তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের জন্য নিজেকে শোভনভাবে সজ্জিত হওয়া।

 খাবার গ্রহণ: ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ আদায়ের আগে খাওয়া এবং ঈদুল আজহার দিন ঈদের নামাজের আগে কিছু না খেয়ে নামাজ আদায়ের পর কোরবানির গোশত খাওয়া সুন্নত। হজরত বুরাইদা (রা.)–র বরাতে বলা হয়েছে, নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আবার ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের আগে খেতেন না।

Also Read: সুরা ইয়াসিনের সার কথা

হেঁটে মসজিদে যাওয়া: ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য তাড়াতাড়ি মসজিদ বা ঈদগাহে যেতে হবে। হেঁটে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত। হজরত আলী (রা.)–র বরাতে এক হাদিসে বলা হয়েছে, ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম এভাবে আমল করেন। তাদের মতো হলো, পুরুষ ঈদগাহে হেঁটে যাবেন, এটা মুস্তাহাব।

তাকবির দেওয়া: হাদিসে প্রমাণ আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছানো পর্যন্ত তকবির পড়তেন। তকবির পড়া ঈদের নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যেতেন। নামাজ শেষ হয়ে গেলে আর তকবির পড়তেন না। শেষ রমজানের সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত তকবির পড়তে হবে। বিশেষভাবে মসজিদের উদ্দেশে বের হওয়া এবং সেখানে নামাজের অপেক্ষায় থাকার সময় গুরুত্বের সঙ্গে তকবির পড়তে হবে।

Also Read: সুরা জুমার সারকথা

নামাজ পড়া: ঈদের দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হলো ঈদের নামাজ আদায় করা। ঈদের নামাজ ওয়াজিব। একজন ঈমানদার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বেশি আনন্দিত হয়ে থাকে। হাদিসে আছে, নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে বের হয়ে দুই রাকাত ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। ঈদের নামাজ জামাতে আদায় করতে হবে। ঈদের নামাজের পর ইমাম দুটো খুতবা দেবেন। খুতবা শোনাও ওয়াজিব। ঈদের নামাজ আদায়ের পর নিজের এবং জীবিত-মৃত সব মুসলমানের জন্য দোয়া করা উত্তম।

 এক পথে গিয়ে অন্য পথে ফেরা: মসজিদ বা ঈদগাহের দিকে এক পথে গিয়ে অন্য পথে ফিরে আসা সুন্নত। হজরত জাবের (রা.) বলেছেন, নবী করিম (সা.) ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন। (সহিহ বুখারি) অর্থাৎ, যে পথে তিনি ঈদগাহে যেতেন, সে পথে ফিরে না এসে অন্য পথে ফিরতেন, যাতে দুই দিকের পথের লোকদেরই সালাম দেওয়া যায় এবং তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়।

 শুভেচ্ছা বিনিময়: ঈদ উপলক্ষে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো শরিয়ত অনুমোদিত একটি বিষয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবারা ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়ামিনকুম।’ এর অর্থ, আল্লাহতায়ালা আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন।

 অভাবীকে খাওয়ানো: এতিমের খোঁজখবর নেওয়া, তাদের খাওয়ানো এবং সম্ভব হলে নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া। এটা ইমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। একই সঙ্গে নিজ পরিবার–পরিজনকে সময় অতিবাহিত করা, আত্মীয়স্বজন, মা-বাবার সঙ্গে দেখা করা ও খোঁজখবর নেওয়া, পাড়া–প্রতিবেশী, গরিব–অসহায় নির্বিশেষে সবার খোঁজখবর নেওয়া ও কুশল বিনিময় করা, সম্ভব হলে পরস্পরকে দাওয়াত দেওয়া, আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা, ঝগড়া–বিবাদ–কলহ–হিংসা–বিদ্বেষ ভুলে সবার সঙ্গে মোলাকাত করে একাকার হয়ে যাওয়া।

Also Read: সুরা কাওসারে তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে