Thank you for trying Sticky AMP!!

গৌতম বোঝালেন ২০ লাখ কেন ৬ কোটি ২০ লাখ

আমি পেরেছি! গৌতমের গর্জন! ছবি: এএফপি
>

১৭ বলে দরকার ৪৩—রাজস্থানের এমন সমীকরণ কাল মিলিয়ে দিয়েছেন কৃষ্ণাপ্পা গৌতম। ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ১১ বলে ৩৩ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলে। বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেন ২০ লাখের দাম নিলামে উঠে গিয়েছিল ৬ কোটি ২০ লাখ!

১৮তম ওভারের প্রথম বলটি করার পর মোস্তাফিজুর রহমান কি দুঃস্বপ্নেও ভেবেছিলেন আরও একবার গাঢ় বিষাদে ছেয়ে যাবে মুম্বাইয়ের নীল একাদশ! আগের ওভারে ১ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে জসপ্রীত বুমরা যে কাজটা ৭০ শতাংশ সেরে রেখেছিলেন, পরের ওভারের প্রথম বলে ক্লাসেনকে ফিরিয়ে দিয়ে মোস্তাফিজ বাকি ৩০ শতাংশও সেরে ফেললেন। ৭ বলের মধ্যে ১ রানে ৩ উইকেট নেই রাজস্থান রয়্যালসের। ১৭ বলে দরকার ৪৩।

উইকেটে সাত ও আট নম্বর ব্যাটসম্যানের রেকর্ডও মন্দ নয়। নতুন ইংলিশ সেনসেশন জোফ্রা আরচার আইপিএল অভিষেকে বল হাতে ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে মুম্বাইয়ের রানটা ১৬৭ রানের মধ্যেই আটকে রেখেছিলেন। ব্যাট হাতেও ঝড় তোলার ক্ষমতা আছে তাঁর। কিন্তু যাঁকে নিয়ে সেভাবে আশা করেনি রাজস্থান, আগের চার ইনিংসে ১৫ রান করা সেই কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ঘটিয়ে দিলেন অবিশ্বাস্য কাণ্ড। কাল যা হলো, তা ‘মিরাকল’ তো বটেই।

৪টি চার ও ২ ছক্কায় ১১ বলে ৩৩ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলে গৌতম রাজস্থানকে জিতিয়েছেন ৩ উইকেটে। আরও একবার ম্যাচের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত আশা ধরে রেখেও পরাজিত দলে নিজেদের আবিষ্কার করেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। তাতে নিজেদের দায় আছে। আছে প্রতিপক্ষের কোনো না কোনো ব্যাটসম্যানের অতিমানবীয় কিছু করে ফেলাও। কাল যেটা করলেন গৌতম।

ত্রিশের কোঠায় পা দেওয়া এই স্পিনার অলরাউন্ডার এবার আইপিএল নিলামেই চমকে দিয়েছিলেন। ভিত্তিমূল্য ছিল ২০ লাখ। সেই তাঁকে নিয়েই শুরু হলো টানাটানি। শেষে বিক্রি হলেন ৬ কোটি ২০ লাখ রুপিতে! ৩১ গুণ বেশি দামে! নিলামের খোঁজ তো আর সবাই রাখে না। তাই গৌতমকে আসলে কালই চিনল সবাই।

এবারই প্রথম আইপিএল খেলছেন। এর আগে এমন কিছু করেননি যে তাঁকে নিয়ে হইচই হবে। এত এত তারকার ভিড়, নিজ দলেই তো তিনি অনেকটা আড়ালে। কাল তাঁর জন্য মঞ্চ প্রস্তুত ছিল। আর তাতেই সিনেমার শেষ দৃশ্যে দেয়াল ফুঁড়ে হাজির হওয়া নায়কের মতো দেখা দিলেন তিনি। শুরুটা করলেন মোস্তাফিজের করা সেই ১৮তম ওভারের শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে।

ওই ওভারে ১৫ রান তুলেও কাজটা সহজ হয়নি মোটেও। ১২ বলে ২৮ টি-টোয়েন্টিতেও কঠিন। তার ওপর ১৯তম ওভারটি যদি করতে আসেন বুমরা। কিন্তু নিজের আগের ওভারে ওই অবিশ্বাস্য ৬টি বল করা বুমরা এবার দিয়ে বসলেন ১৮ রান!‍ তিনটি চার হজম করলেন। এর দুটি গৌতমের ব্যাটে। গৌতম যা-ই করছেন, বল চলে যাচ্ছেন সীমানায়!

৬ বলে ১০ দরকার। দ্য ম্যান উইথ গোল্ডেন আর্ম হার্দিক পান্ডিয়াকে ডেকে নিলেন রোহিত শর্মা। প্রথম বলেই নিজের বলে নিজে কঠিন একটা ক্যাচ লুফে আবারও ম্যাচ জমিয়ে তোলার আভাস দিলেন পান্ডিয়া। এ অবস্থায় কেউ পারলে পান্ডিয়াই পারবেন! ৫ বলে দরকার ১০। কিন্তু না, এ রাত যে গৌতমের হবে বলে অনেক আগেই লিখে রাখা! পান্ডিয়ার পরের বলে থার্ড ম্যানে চার। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলটাকে যেন শুধু পথ দেখালেন গৌতম। পরের বল ডট। তিন বলে ৬। আর একটি ডট বল হলে কমপক্ষে একটি বাউন্ডারি লাগবেই—এমন সমীকরণের সামনে পড়বে রাজস্থান। এবার গৌতমের সপাটে ছক্কা!

শুধু ওইভাবে জিতিয়েছেন বলে নয়, এমন নার্ভ ছেঁড়া মুহূর্তে একবারের জন্যও গৌতমকে নার্ভাস দেখায়নি। ম্যাচ শেষে তো বললেন, ‘দলের সবাই, অধিনায়ক, খেলোয়াড় সবাই আমাকে বলছিল নিজের ওপর আস্থা রাখতে। নিজের সামর্থ্যের ওপর আস্থা রাখতে। এবার আইপিএলে ব্যাট হাতে প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে পারছিলাম না। আশা করি এটা মাত্রই শুরু।’