Thank you for trying Sticky AMP!!

প্যাট কামিন্সের মা মারিয়া কামিন্স গত বছরের মার্চে মারা গেছেন

মাকে রেখে ভারতে যাওয়া কামিন্সের জীবনে কঠিনতম মুহূর্ত

ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়, অ্যাশেজ ধরে রাখা, আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়, আইসিসির বর্ষসেরা খেলোয়াড়—২০২৩ সাল প্যাট কামিন্সকে দুহাত ভরিয়ে দিয়েছে।

এত অর্জনের বছরেই কামিন্স তাঁর মহামূল্যবান মানুষটিকে হারিয়েছেন; মমতাময়ী মা। গত বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়া দলের ভারত সফরে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির মাঝপথে মারা যান কামিন্সের মা মারিয়া কামিন্স। ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন মারিয়া। তাঁর অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শেষেই দেশে ফেরেন কামিন্স; কিন্তু মাকে বাঁচাতে পারেননি।

মৃত্যুর প্রায় এক বছর হতে চললেও এত দিন মা হারানোর বেদনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেননি কামিন্স। মায়ের মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর শুধু ইনস্টাগ্রামে পারিবারিক কয়েকটি ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘মা তোমায় অনেক ভালোবাসি। তুমি চিরকাল আমাদের হৃদয়ে থাকবে।’

Also Read: মৃত্যুশয্যায়ও ‘গ্রন্থাগারের নীরবতা’ মনে পড়বে কামিন্সের

অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অবশেষে এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন। মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পডকাস্ট ‘দ্য ইমপারফেক্টস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, অসুস্থ মাকে রেখে ভারত সফরে যাওয়ার সময়টা তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিনতম মুহূর্ত ছিল। মায়ের জীবনের শেষ দিনগুলোতে তাঁকে আরও সময় দিতে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব ছাড়ার কথাও ভেবেছিলেন কামিন্স।

৩০ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলার বলেছেন, ‘আমি যখন (ভারতগামী) বিমানে উঠেছি, তখনই বুঝতে পেরেছি যে আমাকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই (দেশে) ফিরে আসতে হবে। (মাকে রেখে) অনেক দূরে যাচ্ছি...সহজেই বলতে দিতে পারি, এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল। সম্ভবত এটা আমি ১২ মাস ধরেই অনুভব করেছি। যখন আমি দূরে খেলতে গিয়েছি, তখনই মনে হয়েছে, সময় এখানে সীমাবদ্ধ। তাই বাড়িতে থাকার চেয়ে কোথাও খেলতে যাওয়াকে প্রাধান্য দিয়েছি।’

Also Read: এবার হায়দরাবাদের অধিনায়ক কামিন্স

মা মারিয়া বেশি দিন বাঁচবেন না, সেটা বুঝতে পেরেছিলেন কামিন্স। কিন্তু যতটা সম্ভব, জীবনের শেষ দিনগুলোতে মাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছিলেন। এ জন্য ভারত সফরে দুই টেস্ট খেলেই তাঁর কাছে ফেরার কারণ গোপন রেখেছিলেন, ‘বিশেষ করে সেই সময়টায় (মাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছিলাম), যখন আমরা মোটামুটি জেনে গিয়েছিলাম তাঁর সময় ঘনিয়ে আসছে। আমি জানতাম, মা–বাবা একসঙ্গে বসে আমার খেলা দেখেন। সেটাই আমাকে (ভারতে) যেতে ও সেখানে খেলতে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল। আমি এটাও জানতাম, যেকোনো সময় আমাকে ফিরতি বিমানে উঠতে হতে পারে। আমি দুই সপ্তাহ ভারতে ছিলাম ঠিকই, কিন্তু আমার মন ভারতে ছিল না। পুরোটা সময় বাড়িতেই মন পড়ে ছিল।’

মা, বাবা ও স্ত্রীর সঙ্গে প্যাট কামিন্স

অসুস্থ মায়ের পাশে থাকতে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্বও ছাড়তে চেয়েছিলেন, ‘আমি আমার ম্যানেজার ও আশপাশের কয়েকজনকে ডাকলাম, যাদের কথা আমি সাধারণত শুনে থাকি এবং তারাও আমাকে ডাকলে সাড়া দিই। ম্যানেজার বলল, “আপনি কেন (ভারত ছেড়ে) বাড়ি ফিরে এলেন, সেটার কারণ জানানো দরকার।” আমি বললাম, এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তখন (ম্যানেজার) বলল, “নাহ, আপনি এখানে অনেক চাপের মধ্যে আছেন। কারণটা ব্যাখ্যা করা উচিত।” তখন আমি বললাম, মানুষ কী ভাবছে, সেসব বিষয়কে আমি একদমই পাত্তা দিচ্ছি না। প্রায় ছয়–সাত দিন পর যখন জানতে পারলাম, আমি আর ভারতে যাব না, তখন আমি বললাম যে আমার মা গুরুতর অসুস্থ এবং তাঁকে উপশমমূলক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

Also Read: প্যাট কামিন্সের অন্য ভুবন: পরিবেশ আন্দোলন ও রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনা