Thank you for trying Sticky AMP!!

আজ কেমন করবেন সাকিব

১০ বছর ধরে ‘নিশ্চুপ’ সাকিব, আজ কি গর্জে উঠবেন

বিপিএল ইতিহাসে সাকিব আল হাসানের অবস্থান কোথায়, নতুন করে বলার কিছু নেই। ৯ আসরের ৪টিতেই টুর্নামেন্ট-সেরা, বিপিএলে সাকিবের সব কথা বলে দেয় এই পরিসংখ্যানই। আর এবারের বিপিএলে ভয়ংকর শুরুর পরও তো তিনি লিখেছেন প্রত্যাবর্তনের গল্প। তবে গল্পের মধ্যেও গল্প থাকে।

সাকিব ৯ আসরের মধ্যে ৪টিতেই সিরিজ-সেরা এটা যেমন সত্য, তেমনি ২০১৩ বিপিএল ফাইনালের পর থেকে বিপিএল নকআউটে সাকিব যে গড়পড়তা পারফরম্যান্সও করতে পারেননি, এটাও সত্য। আজ বিপিএলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে সাকিব এই নকআউট ধাঁধার উত্তর দিতে পারবেন? নাকি ‘সত্য’ আরও প্রতিষ্ঠিত হবে।

বিপিএলের প্রথম আসরেই সাকিব নকআউটে খেলেন। সেবার বিপিএল হয়েছিল প্লে-অফ পদ্ধতিতে নয়, সেমিফাইনাল পদ্ধতিতে। সেই টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের বিপক্ষে খুলনার হয়ে ১৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪১ বলে ৮৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন সাকিব।

বল হাতে অবশ্য এর আগে ৪ ওভারে ৪৫ রান খরচ করেছিলেন, নিয়েছিলেন ১ উইকেট। খুলনা সেই ম্যাচে হারলেও সাকিবের এমন ব্যাটিং নজর কেড়েছিল সবার। কারণ, সেই ঢাকা বোলিং–শক্তিতে ছিল অনেক এগিয়ে। মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে ছিলেন সেই সময়ের সেরা দুই স্পিনার সাঈদ আজমল ও শহীদ আফ্রিদি।

Also Read: কোটি টাকার হৃদয়ের কোটি টাকার ব্যাটিং

২০১৩ সালে সাকিব খেলেন ঢাকার হয়ে। ফাইনালে ব্যাট হাতে ২৯ বলে ৪১ রান করার পর বল হাতে ৩ ওভারে ২১ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। সিলেটের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ারে সাকিব ব্যাট হাতে ২১ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন। তবে যেহেতু প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে গেলে দলগুলো ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ পায়, তাই এই ম্যাচকে নকআউট হিসেবে ধরা যাচ্ছে না।

২০১২ সালে টুর্নামেন্ট–সেরার পুরস্কার গাড়ি জেতার পর সাকিব

২০১৩ মৌসুমের পর থেকেই নকআউট ম্যাচে সাকিব একেবারে নিষ্প্রভ। ফিক্সিং কেলেঙ্কারির জেরে ২০১৪ সালে হয়নি বিপিএল। ২০১৫ সালে বিপিএল আবার ফেরার পর রংপুরের হয়ে খেলেন সাকিব। পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে নিষ্প্রভ থাকা সাকিব দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে করেন ১০ বলে ১৩ রান। বল হাতে নেন ২৯ রানে ১ উইকেট। বরিশালের কাছে সেই ম্যাচে ৫ উইকেটে হেরে যায় রংপুর। ৯ বছর পর আবার আজ সেই বরিশালের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে রংপুর। পার্থক্য শুধু আগের বরিশালের নাম ছিল বরিশাল বুলস, এবার ফরচুন বরিশাল।

Also Read: সাকিব–তামিম, নাকি তামিম–ফারুকি

২০১৬ সালে সাকিব আবার ঢাকায় ফেরেন। চ্যাম্পিয়ন হয় তাঁর দল। তবে ফাইনালে আবারও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন সাকিব, করেন ৭ বলে ১২। বল হাতে যদিও ৩০ রানে নেন ২ উইকেট।

২০১৭ বিপিএলেও ফাইনালে ওঠে সাকিবের ঢাকা। তবে রংপুরের বিপক্ষে সেই ফাইনালে সাকিব থাকেন দর্শক হয়ে। ক্রিস গেইলের সহজ ক্যাচ মিস করেন, পরে সেই গেইল অপরাজিত থাকেন ৬৯ বলে ১৪৬ রান নিয়ে। যেদিন গেইল খেলেন, সেদিন ম্যাচের ফল আর বলতে হয়! সেদিন ৩ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নেওয়া সাকিব ব্যাট হাতে করেন ১৬ বলে ২৬।

২০১৭ বিপিএল ফাইনালে গেইলের সামনে সাকিব থাকেন দর্শক হয়ে

২০১৮ সালেও সাকিব ছিলেন ঢাকার। সেবার এলিমিনেটরে সাকিব বল হাতে ৪ ওভার বল করে ১১ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। ব্যাট হাতে আউট হন প্রথম বলেই। সেই আসরে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বল হাতে ২৯ রানে ১ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেছিলেন ২০ বলে ২৩ রান। ফাইনালে তামিমের ৬১ বলে ১৪১ রানের ইনিংসের সামনে সাকিব আরও একবার নিষ্প্রভ। বল হাতে ৪৫ রানে ১ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেছিলেন মাত্র ৩।

Also Read: বিপিএলসেরা সাকিব, ছক্কায় হৃদয়– ভবিষ্যদ্বাণী ড্যারেন স্যামির

২০২২ বিপিএলে আবারও ফাইনাল খেলেন সাকিব। সেবার ফরচুন বরিশালের হয়ে। সেই আসরে ব্যাট হাতে লিগ পর্বে টানা ৫ ফিফটি করা সাকিব ফাইনালে করেন ৭ বলে ৭ রান। বল হাতে ৩০ রানে নেন ১ উইকেট। হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ বের হয়ে যায় বরিশালের। ২০২৩ সালে বরিশালের হয়ে এলিমিনেটরে সাকিব ব্যাটিংয়েই নামেননি। তবে বল হাতে ২৭ রানে নিয়েছিলেন ২ উইকেট।

লিগ পর্বে তামিমকে আউট করার পর সাকিব

এবারের বিপিএলে কুমিল্লার বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ারে সাকিব আউট হয়েছেন মাত্র ৫ রান করে। দল হিসেবেও রংপুর হেরেছে টানা দুই ম্যাচে। আজ বাঁচা–মরার লড়াই। সেটা বরিশালের বিপক্ষে। নানা ঘটনার পরিক্রমায় যে ম্যাচ তাঁর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এমন লড়াইয়েই নাকি সেরাদের সেরাটা বের হয়ে আসে। আজ কি সাকিবও তাঁর সেরাটা দেবেন? ফিরে আসবে ২০১২-১৩ বিপিএলের সাকিব? নাকি আরও একবার...

Also Read: ছক্কায় ছক্কায় নতুন সাকিব