Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রফিটা ভারতের হাতেই ওঠা উচিত

প্রায় দেড় মাস অপেক্ষার পর আজ সেই ম্যাচ—বিশ্বকাপ ফাইনাল। ফাইনালে সেরা দুটি দলই এসেছে, তবে পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে ভারত যে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে, তা নিয়ে সংশয় নেই। অস্ট্রেলিয়ারও সেটি অজানা থাকার কথা নয়।

ভারত পুরো টুর্নামেন্টেই দাপটের সঙ্গে খেলে এসেছে। সেমিফাইনালেও বুঝতে দেয়নি যে সেটি নকআউট ম্যাচ। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—কোনো জায়গাতেই ঘাটতি নেই। সেভাবে কোনো দুর্বলতাই চোখে পড়েনি দলটার।

Also Read: ভারতের ড্রেসিংরুমে ‘হাসিখুশি মুখ আছে, চিন্তিত মুখও আছে’

আমি গত ২০-২৫ বছরে কোনো দলের ব্যাটসম্যান-বোলারদের একটানা এভাবে ফর্ম ধরে রাখতে দেখিনি। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের নতুন উচ্চতায় উঠে গেছে ভারতের ব্যাটসম্যান-বোলাররা। অন্য দলগুলোর সঙ্গে নিজেদের বড় একটা ব্যবধান তৈরি করে ফেলেছে, যেটি অন্যদের জন্য শিক্ষাও। ভারত আজ শিরোপা জিতলে শুধু বিশ্বকাপই জিতবে না, অনেক কিছুতেই নতুন মাত্রা যোগ করবে। দলের অন্যতম শক্তি মনে করা হচ্ছিল স্পিন বিভাগকে, বিশেষ করে খেলাটা যখন ভারতের মাটিতে। তবে পেসাররা এত ভালো করেছে যে স্পিন একটু অপরীক্ষিতই থেকে গেছে। সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই তারা আরও অবদান রাখতে পারত।

বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলছে ভারত। গতকাল ভারতের অনুশীলনে কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা

বিশ্বকাপে এবার বৈচিত্র্যময় পিচ দেখেছি। পিচ অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়া একাদশ নির্বাচনে বেশ সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। তবে ভারত বলতে গেলে একই একাদশ খেলিয়ে যাচ্ছে। এই টুর্নামেন্টে চোখ রেখে বললে আহমেদাবাদে অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়া করতে চাওয়ার কথা নয়। টসে জিতলে দুই দলই আগে ব্যাটিং করতে চাইবে। ভারত আগে ব্যাটিং করলে অনেক ভয়ংকর, বোর্ডে বেশি রান থাকলে তাদের বোলাররা আরও বেশি ভয়ংকর। অস্ট্রেলিয়াও আগে ব্যাটিং করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তারা আগে ব্যাটিং করলে খেলার মধ্যে বেশ একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার আভাস মিলবে। কিন্তু ভারত আগে ব্যাটিং করলে অস্ট্রেলিয়ার জন্য কঠিন হয়ে যাবে।

Also Read: ফিরেই পারফর্ম করা সহজ নয়, শামিকে নিয়ে রোহিত

ভারত যদি দ্রুত কয়েকটি উইকেট না হারায়, তাহলে এই ব্যাটিং কম্বিনেশনকে আটকানো কঠিন। তারা পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে খেলতে দারুণ দক্ষ। সেমিফাইনালে উইকেট থেকে নতুন বলের বোলাররা যেমন সহায়তা পেয়েছে, অস্ট্রেলিয়া হয়তো তেমন কিছুই আশা করবে। ভালো ক্যাচ, দুই-একটি রানআউট ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। ভারতের ব্যাটসম্যান বা বোলাররা বেশি ভুল করলে সেটিই কাল হতে পারে তাদের জন্য। প্রথম ১০ ওভারে ভুল করলে সেটার চড়া মূল্য দিতে হতে পারে দুই দলকেই।

অস্ট্রেলিয়া চতুর্থ পেসার হিসেবে মার্কাস স্টয়নিস বা ক্যামেরন গ্রিনকে খেলাতে পারে মারনাস লাবুশেনের জায়গায়। ভারতের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যান ডানহাতি, ফলে ট্রাভিস হেড ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে দিয়ে কাজ চালানো একটু কঠিন হবে। সেমিফাইনালে অ্যাডাম জাম্পার ব্যর্থতা চোখে লেগেছে। এমন ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই তাঁর কাছে দলের প্রত্যাশা বেশি থাকবে।

ফাইনালেও আক্রমণাত্বক থাকবেন ট্রাভিস হেড

আক্রমণাত্মকই খেলার বার্তা দিয়েছেন ট্রাভিস হেড। ডেভিড ওয়ার্নারও তা–ই। যশপ্রীত বুমরার বিপক্ষে কী করেন, সেটি দেখার বিষয়। তবে নিউজিল্যান্ডের মতো তিনি মোহাম্মদ সিরাজের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। আগে ব্যাটিং করলে তাঁরা আক্রমণাত্মক খেলবেন সন্দেহ নেই, পরে খেললে হয়তো আগে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করবেন। স্টিভেন স্মিথের জন্য এবারের বিশ্বকাপ স্মরণীয় করে রাখতে সেরা একটি মঞ্চ হবে আজকের ফাইনাল।

Also Read: রোহিত জানেন অস্ট্রেলিয়া কী করতে পারে

দুই দলের অধিনায়কই দারুণ বিচক্ষণ। ম্যাচটি উপভোগ্য হবে বলেই আমার বিশ্বাস। সার্বিক বিবেচনায় যে স্বাগতিক ভারতই ফেবারিট, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ৪০-৪৫ দিন ধরে যেভাবে তারা পারফর্ম করেছে, ট্রফিটা তাদের হাতেই ওঠা উচিত। তবে প্রতিটি দলেরই খারাপ দিন আসে, অস্ট্রেলিয়া ভারতের সে রকম দিনই আশা করবে আজ। আবার অস্ট্রেলিয়া বেশ প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ফাইনালে এসেছে। তারা এর আগে যে ছোটখাটো ভুলগুলো করেছে, ফাইনালে সেগুলো করবে না বলেই মনে হয়।

গাজী আশরাফ হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক