Thank you for trying Sticky AMP!!

উইকেট নেওয়ার পর নাহিদ রানার উল্লাস

ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে চান নাহিদ

ঘণ্টায় ১৪৯.৭ কিলোমিটার—টিভি স্ক্রিনে গতিটা ভেসে উঠতেই ধারাভাষ্যকার আমির সোহেলের রোমাঞ্চিত কণ্ঠ, ‘বলুন তো, সর্বশেষ ডেলিভারির গতি কত ছিল? ১৪৯.৭ কিলোমিটার! প্রায় ১৫০ ছুঁয়ে ফেলেছিল!’

১৩ ফেব্রুয়ারি রংপুর রাইডার্সের ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসানের বিপক্ষে বলটা করেছিলেন খুলনা টাইগার্সের নাহিদ রানা। সেদিনই প্রথম এবারের বিপিএলে খেলতে নামেন এই ২১ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার। নেমেই টুর্নামেন্টের দ্রুততম গতির বলটা করলেন। নাহিদের সেই বলটিকে যদি কেউ স্পিডোমিটারের ভুল বলে ভেবে থাকেন, সে ভুল দ্রুতই ভেঙেছেন নাহিদ। সেই ওভারেই সাকিব ও শেখ মেহেদী হাসানকে আরও দুটি বল করেছেন ঘণ্টায় ১৪৭ কিলোমিটার গতিতে।

মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে নাহিদের দ্রুতগতির বলের স্ক্রিনশট, ভিডিও ও রিল। দীর্ঘদেহী এই তরুণ বিপিএলে এখন পর্যন্ত দুটি  ম্যাচ খেলে ২ উইকেট নিয়েছেন। তবে এলোমেলো বোলিংয়ে রান দিলেও গতি আর বাউন্স দিয়ে ঠিকই নজর কেড়েছেন। তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, ওশান টমাস, লুক উড, মোহাম্মদ ওয়াসিমের মতো পেসাররা বিপিএলে খেলছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত বিপিএলের দ্রুততম বোলার নাহিদই। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এই তরুণ অবশ্য নিজেকে প্রতিনিয়তই ছাড়িয়ে যেতে চান। নিজের গতির রেকর্ডটা তাই এবারের বিপিএলেই ভাঙতে চান নাহিদ। ছুঁতে চান ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে বল করার রেকর্ড।

গতির ঝড় তোলার লক্ষ্য নাহিদের

অল্প কথার মানুষ নাহিদ কাল ছোট্ট করে সে লক্ষ্যের কথাটাই বললেন, ‘বিপিএলেই করতে চাই (ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে বল)।’ তবে গতিময় বোলিংয়ের রেকর্ড যে বলেকয়ে করা যায় না, সেটা নাহিদের ভালোই জানা। তিনি শুধু নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টাটাই করতে পারেন, ‘এটা অটোমেটিক হয়ে যায়। যখন খেলব, সুযোগ পাব, তখন দেখা যাবে।’ পরে যোগ করেন, ‘জোরে বলে পরিকল্পনা করে করা যায় না। আমি শুধু নিজের ফিটনেসটা ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। দেখি কেমন করতে পারি। একটাই চিন্তা, নিজেকে কীভাবে ফিট রাখা যায়। ফিট থাকলে যেটা হওয়ার সেটা এমনিতেই হয়ে যাবে।’

Also Read: ‘সাকিব চোখে না দেখেও বোলিং করতে পারবে’

গতিময় বোলিংয়ের নেতিবাচক দিকও আছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ছোট্ট বাউন্ডারিতে ব্যাটের কানায় লাগা বলও উড়ে যায় সীমানার বাইরে। গতির সঙ্গে লাইন-লেংথটাও যে ঠিকঠাক রাখতে হয়। নাহিদ নিচ্ছেন সে শিক্ষাটাও, ‘দুটি ম্যাচ খেলেছি। টি-টোয়েন্টিতে তো মার পড়েই। দুটি ওভার খারাপ করেছি দুই দিন। এ ছাড়া সব মিলিয়ে ভালোই হয়েছে।’

বিপিএল দিয়ে আলোচনায় এলেও নাহিদের গতিময় বোলিংয়ের রহস্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট

গত বিপিএল দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আসার আগে নাহিদ নিজেকে চিনিয়েছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। গত দুই মৌসুমে জাতীয় লিগ ও বিসিএলের সেরা পারফর্মারদের একজন তিনি। মাত্র ১৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা নাহিদ এর মধ্যেই ৬৩ উইকেটের মালিক। পাঁচবার ৪ উইকেট ও তিনবার ৫ উইকেট নিয়েছেন। প্রথম শ্রেণির ধারাবাহিকতাই নাহিদকে গত বিপিএলে সুযোগ করে দিয়েছিল। জাতীয় দলের ক্যাম্পেও ডাক পড়েছিল তাঁর।

Also Read: নির্বাচকেরা ‘কী বুঝে’ জাতীয় দল বানান, বোঝেন না সালাউদ্দিন

বিপিএল দিয়ে আলোচনায় এলেও নাহিদের গতিময় বোলিংয়ের রহস্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, ‘আপনি ব্যাটসম্যানদের জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমি দিনের প্রথম বলটা যে গতিতে করি, দিনের শেষ বলটাও একই গতিতে করি।’ ব্যতিক্রমী বোলিং অ্যাকশনও নাহিদের শক্তি। নাহিদের আর্ম রোটেশনের সময় অ্যাকশন থেকে বলটা কোথায় যেন হারিয়ে যায়! নাহিদও অ্যাকশনের এই বৈচিত্র্য দিয়ে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানাতে পছন্দ করেন, ‘হ্যাঁ, এটা আমার জন্য ভালো (হাসি)।’ পরে যোগ করলেন, ‘অ্যাকশন যেহেতু ছোট থেকেই এমন, এটা নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। সবাই উল্টো বলে, এটাই যেন ধরে রাখি। এটাই আমার শক্তি।’

সঙ্গে গতি তো আছেই।