Thank you for trying Sticky AMP!!

সেঞ্চুরির পর শুবমান গিল

বিশাখাপট্টনম টেস্ট: গিলের সেঞ্চুরির পর ‘বাজবলের’ সামনে সবচেয়ে ‘বড়’ চ্যালেঞ্জ

‘বাজবল’ (বেন স্টোকস অধিনায়ক ও ব্রেন্ডন ম্যাককালাম কোচ) শুরু হওয়ার পর জেতা ১৪টি টেস্টের ৮টিতেই রান তাড়া করেছে ইংল্যান্ড। রান তাড়ায় তারা ‘ভীত’ নয়, সেটি প্রমাণ করেছে আগেই। তবে সেই বাজবলের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—বিশাখাপট্টনমে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডকে করতে হবে ৩৯৯ রান। শুবমান গিলের সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানে অলআউট হয়ে যাওয়া ভারত স্টোকসের দলকে বড় একটা চ্যালেঞ্জই ছুড়ে দিয়েছে। সে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বেন ডাকেটের উইকেট হারিয়ে ৬৭ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে ইংল্যান্ড। ম্যাচ জিততে আরও ৩৩২ রান দরকার ইংলিশদের। ২৯ রানে অপরাজিত জ্যাক ক্রলির সঙ্গী ‘নাইটহক’ রেহান আহমেদ।

ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি অবশ্য ‘বাজবল’-যুগেই—২০২২ সালে এজবাস্টনে ভারতেরই দেওয়া ৩৭৮ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেছিল দলটি। আর ভারতের মাটিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি আবার ইংলিশদের বিপক্ষেই—২০০৮ সালে স্বাগতিকেরা ছুঁয়ে ফেলেছিল ৩৮৭ রানের লক্ষ্য। এবার দুই রেকর্ডই ভাঙতে হবে ইংল্যান্ডকে।

সেই রেকর্ড রান তাড়ায় জ্যাক ক্রলি ও ডাকেট শুরুটা ইতিবাচকই করেন, ১০.৩ ওভারের মধ্যেই ওপেনিং জুটিতে ওঠে ৫০ রান। তবে শেষ বেলায় সে জুটি ভাঙেন অশ্বিন। ডাকেট আরেকবার সামনে ঝুঁকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ক্লোজ ইনে, উইকেটকিপার শ্রীকর ভরত সামনে ডাইভ দিয়ে নেন দারুণ ক্যাচ। ইংল্যান্ড এরপর পাঠায় রেহানকে, দিনের শেষ ৩ বলে যিনি মারেন ২টি চার—এর মধ্যে একটিতে ইনসাইড এজ হতে গিয়ে বেঁচে যান, আরেকটিতে আউটসাইড এজে পান বাউন্ডারি।

সকালে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রোহিতকে বোল্ড করেন অ্যান্ডারসন

এর আগে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের হাইলাইটস ছিল গিলের সেঞ্চুরি, যে ইনিংসটি গ্যালারিতে বসে দেখেছেন তাঁর বাবা। সর্বশেষ ১২ ইনিংস আগে ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন তিনি, দলে জায়গা নিয়েও আলোচনা চলছিল। আজ সকালে নেমেছিলেন জেমস অ্যান্ডারসনের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে রোহিত শর্মা বোল্ড হওয়ার পর, অ্যান্ডারসনের পরের ওভারে প্রথম ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান যশস্বী জয়সোয়ালকেও ফিরতে দেখেন গিল। তবে প্রথম সেশন পুরোটা ইংল্যান্ডের হয়নি গিলের সঙ্গে শ্রেয়াস আইয়ারের ১১২ বলে ৮১ রানের জুটিতে।

Also Read: উইলিয়ামসনের ব্র্যাডম্যান-কোহলিকে ছাড়ানোর দিনটি নিউজিল্যান্ডের

সে জুটি ভাঙে স্টোকসের দারুণ এক ক্যাচে। টম হার্টলিকে তুলে মারতে গিয়ে মিসটাইমিং করে ফেলেছিলেন শ্রেয়াস, মিড অফ থেকে অনেকটা পেছনে ছুটে ডাইভ দিয়ে সেটি নেন কদিন আগেই হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করানো ইংল্যান্ড অধিনায়ক। রজত পাতিদার অবশ্য গিলকে সেভাবে সঙ্গ দিতে পারেননি, রেহানের নিচু হওয়া বলে উইকেটকিপার বেন ফোকসের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

জয়ের জন্য নতুন রেকর্ড গড়তে হবে ইংল্যান্ডকে

৬০ রানে বিরতিতে যাওয়া গিল এরপর অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে গড়েন ৮৯ রানের জুটি। দ্বিতীয় সেশনে সে জুটি ইংল্যান্ডকে হতাশ করে বেশ কিছুক্ষণ। শুরুতে গিল নড়বড়ে ছিলেন, ভাগ্যের সহায়তাও পান—ইনসাইড এজে বেঁচে যান এলবিডব্লু থেকে, যে রিভিউ তিনি নিয়েছিলেন ব্যাটিং সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করে। স্লিপে ক্যাচও তুলেছিলেন, তবে ঠিক নাগাল পাননি রুট।

অ্যান্ডারসনের দারুণ বোলিংয়ে বাড়তি একজন পেসারের অভাব ইংল্যান্ড বোধ করেছে কি না, তারাই বলতে পারবে। তবে এদিন রুটের বোলিং পায়নি তারা, খেলা শুরুর আগে অনুশীলনে আঙুলে আঘাত পাওয়া রুট একই জায়গায় আবার চোট পান ফিল্ডিংয়ের সময়। এরপর উঠেই যান তিনি। তাঁর ব্যাটিংয়ের ব্যাপারে অবশ্য কোনো আনুষ্ঠানিক আপডেট জানানো হয়নি এখনো।

Also Read: অলরাউন্ডার অ্যাবটে সিরিজ জয় অস্ট্রেলিয়ার

দ্বিতীয় সেশনে অবশ্য বেশ নিয়ন্ত্রিত ছিল গিলের ইনিংস, আক্রমণও করেন। ১৩২ বলে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত শোয়েব বশিরকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাট-প্যাডের ছোঁয়ায় ধরা পড়েন ফোকসের হাতে, যে উইকেট ইংল্যান্ড পায় রিভিউ নিয়ে। হার্টলির বলে এরপর এলবিডব্লু হন অক্ষর, সে উইকেটও ইংল্যান্ড পায় রিভিউ নিয়ে। তবে চা-বিরতিতে ভারত যায় দারুণ অবস্থানে থেকেই, ৪ উইকেট হাতে রেখে তাদের লিড ছিল ৩৭০ রান।

বিরতির পর অবশ্য দ্রুত ২ উইকেট হারায় তারা, এরপরই ঢুকে যায় খোলসের মধ্যে। টেস্ট ইতিহাসে ১ ওভারে সর্বোচ্চ রান তোলা যশপ্রীত বুমরাকেও ঠিক ভরসা করছিলেন না রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ফল—২৬ বল খেলে কোনো রান না করেই আউট বুমরা। অশ্বিন ৬১ বলে ২৯ রান করে অবশেষে ক্যাচ দেন ফোকসের হাতে, যিনি শুরুতে স্লিপে জ্যাক ক্রলির হাতে ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান। ২৫৫ রানে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়ে যায় ভারত, যে দিন তারা শুরু করেছিল ১৭১ রানে এগিয়ে থেকে

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৩৯৬ ও ৭৮.৩ ওভারে ২৫৫ (জয়সোয়াল ১৭, রোহিত ১৩, গিল ১০৪, শ্রেয়াস ২৯, পাতিদার ৯, অক্ষর ৯, ভরত ৬, অশ্বিন ২৯, কুলদীপ ০, বুমরা ০, মুকেশ ০* ; অ্যান্ডারসন ২/২৯, বশির ১/৫৮, রেহান ৩/৮৮, রুট ০/১, হার্টলি ৪/৭৭)।
ইংল্যান্ড: ২৫৩ ও ১৪ ওভারে ৬৭/১ (ক্রলি ২৯*, ডাকেট ২৮, রেহান ৯*; বুমরা ০/৯, মুকেশ ০/১৯, কুলদীপ ০/২১, অশ্বিন ১/৮, অক্ষর ০/১০)
—তৃতীয় দিন শেষে।