Thank you for trying Sticky AMP!!

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলে ছিলেন হেলস

টেস্ট নয়, বয়স থাকলে এখন শুধু টি-টোয়েন্টি খেলতেন হেলস

বয়স থাকলে এখন আর দীর্ঘ সংস্করণের ক্রিকেট নিয়ে মাথা ঘামাতেন না অ্যালেক্স হেলস। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী ব্যাটসম্যান বলেছেন, তাঁর সব মনোযোগ থাকত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ঘিরেই। এ জন্য টেস্ট ক্রিকেটে খেলার মায়াও ছেড়ে দিতেন তিনি।

ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগগুলোয় মনোযোগ দেবেন বলে ৩৪ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হেলস। ১১ টেস্টের সর্বশেষ ম্যাচটি খেলেছিলেন ২০১৬ সালে। তবে এ সংস্করণকে মোটেও মিস করেননি তিনি। তাঁর মতে, টেস্ট খেলা ও না খেলার সুবিধা-অসুবিধার হিসাব করেই এমন মনে হয়েছে তাঁর।

যদি এ সময় ক্যারিয়ার শুরু হতো, তাহলে তাঁর সিদ্ধান্ত হতো সমারসেটের উইল স্মিডের মতো। ২১ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান সীমিত ওভারের ক্রিকেটের দিকে মনোযোগ দিতে নিজ কাউন্টির সঙ্গে শুধু সীমিত ওভারের চুক্তি করেছেন, যেটি কার্যত তাঁর দীর্ঘ সংস্করণের ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছে। স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হেলস বলেছেন, তিনিও স্মিডের মতোই সিদ্ধান্ত নিতেন, ‘আমি যেভাবে খেলি, আমার সহজাত যে খেলা ও টেকনিক, তাতে আমার সব প্রচেষ্টা নিশ্চিতভাবেই টি-টোয়েন্টিকে ঘিরে থাকত। আমি উইল স্মিডের মতো করতাম। সে যা করেছে, তাতে তাকে দোষ দেওয়া যায় না, বরং সাহসী একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করি, এটি কাজে দেবে তার।’

২১ বছর বয়সী উইল স্মিড সীমিত ওভারের ক্রিকেটের দিকে মনোযোগ দিতে নিজ কাউন্টির সঙ্গে শুধু সীমিত ওভারের চুক্তি করেছেন

ক্রিকেটের এখনকার যে ধরন, তাতে আলাদা সংস্করণের জন্য বিশেষায়িত আলাদা খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে বলেই মনে করেন হেলস, ‘এখন খেলার যে অবস্থা, তাতে তিন সংস্করণেই দুর্দান্ত এমন খেলোয়াড় দিন দিন আরও কম পাওয়া যাবে। অবশ্যই তিন সংস্করণেই দারুণ—এমন কয়েকজন আছে। তবে বিশেষ করে গত বছর পাঁচেক খেলাটি যেদিকে গেছে, তাতে আপনি আরও বেশি বিশেষায়িত খেলোয়াড় দেখতে পাবেন।’

Also Read: অ্যালেক্স হেলসরা এভাবেই ফিরে ফিরে আসেন

নিজের উদাহরণ দিয়ে হেলস এরপর ব্যাখ্যা করেন, ‘আলাদা সংস্করণের জন্য টেকনিক ও স্কিল সব সময়ই আলাদা মনে হয়েছে আমার। (টি-টোয়েন্টিতে) বোলাররা স্লো বল করে, স্টাম্পের অনেক বাইরে করে, ইয়র্কার করে, স্লো বাউন্সার দেয়। এরপর চার দিনের ম্যাচে তারা অফ স্টাম্পের চূড়া তাক করে বোলিং করে। তিন সংস্করণেই আপনার স্কিল দারুণ থাকবে, এটি আসলে বেশ কঠিন।’

এমনিতে লাল বলেও নটিংহামশায়ারে বেশ আক্রমণাত্মকই ছিলেন হেলস। তবে ইংল্যান্ডের হয়ে যখন টেস্ট খেলেছিলেন, তখন ভিন্ন ঘরানার ব্যাটিং করতে হয়েছিল তাঁকে। বাজবলের যুগে হলে কি টেস্ট খেলার ব্যাপারে মানসিকতাটা ভিন্ন থাকত তাঁর? হেলস সে সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেননি। ইংল্যান্ডের সাম্প্রতিক ব্যাটিং নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডে ব্যাটিং ওপেন করতে গিয়ে আমার সহজাত খেলার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। এখানে ব্যাটিং ওপেন করাটা বেশ কঠিন। জ্যাক (ক্রলি) ও বেন (ডাকেট) যেভাবে খেলেছে, সেটি দেখে অবিশ্বাস্য লেগেছে। যেভাবে নেমে তারা নিজেদের শট খেলেছে।’

ইংল্যান্ডের হয়ে ১১টি টেস্ট খেলেছেন হেলস

এরপরই একটু আক্ষেপও করেছেন, ‘হয়তো ফিরে তাকালে মনে হবে, আমি একটু নিজের মতো করে খেলতে পারলে আরেকটু সফল হতাম। আমার আসলে মনে হয়, মিডল অর্ডারে আরও মানিয়ে নিতে পারতাম আমি…তবে আমাকে সব সময়ই ওপেনিংয়ে জোর করা হয়েছে, যেটি হয়তো আমার স্বাভাবিক খেলার বিরুদ্ধে। এখন বাজবলের সময়ে কি আমার সুযোগ থাকত? কে জানে?’

Also Read: অ্যাডিলেডে যেসব রেকর্ড ভাঙলেন হেলসরা

তবে সব মিলিয়ে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো আক্ষেপ করছেন না তিনি, ‘বিশ্বকাপ জেতাটা আমার জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন। ২০১৯ সালে যা ঘটেছিল, এরপর তো ভেবেছিলাম আমি আর কখনোই সুযোগ পাব না। এরপরও বিশ্বকাপ জেতা—কোনো ক্রীড়াবিদের জন্য শীর্ষে থেকে বিদায় বলা, নিজের মতো করে বিদায় বলাটা খুব বেশি ঘটে না। ত্রিশের মাঝামাঝি এসে কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে থেকে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলাটা কঠিন। এর জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সুযোগ ছাড়াটা আর্থিক দিক দিয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত, বয়স যখন বাড়ছে। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে এটিকেই ঠিক সিদ্ধান্ত মনে হয়েছে আমার।’