Thank you for trying Sticky AMP!!

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার টি–টোয়েন্টি সিরিজ জেতার সুযোগ বাংলাদেশের

আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের হাতছানি

বর্ষা এলেই সিলেটের ছবিটা বদলে যায়। বৃষ্টির ছোঁয়ায় সবুজ পাতা হয়ে ওঠে আরও সতেজ। চা–বাগান, সবুজ টিলার সারি আর ভরা হাওর যেন রূপের পসরা সাজিয়ে বসে। ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’র এই সিলেটকে ‘বর্ষার রানি’ বলা হয় হয়তো এ কারণেই।

জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও সিলেটে এলে চারপাশটা ঘুরে দেখতে চান। গতকাল দিনটা ছুটি পাওয়ায় তাই দলের অনেকেই ঘুরতে বেরিয়েছেন। শরীফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ যেমন তাঁদের পরিবারসহ রাতারগুল ঘুরে এসেছেন।

সাকিব আল হাসানকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে হোটেল থেকে বের হতে দেখা গেছে। গায়ে সাদা টি-শার্ট, মাথায় কালো ক্যাপ। দেখে মনে হয়েছে, কোনো কাজে বের হয়েছেন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। সাকিবের কাছে ছুটির দিনে এই ব্যস্ততার কারণ জানতে চাইলে মজা করে বললেন, ‘আমি সব সময়ই ফ্রি (হাসি)।’ কথা শেষ হতে না হতেই সাকিবের গাড়ি এসে হাজির। মুখে বললেও তিনি যে দলের বাকিদের মতো ফ্রি নন, তা বোঝা যাচ্ছিল।

Also Read: শেষ ওভারে বাংলাদেশের নাটকীয় জয়

শুধু কালকেই নয়, বাংলাদেশ দল এই টি-টোয়েন্টি সিরিজটাই খেলছে ছুটির আমেজে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগের দিনও খেলোয়াড়েরা অনুশীলন করেছেন খোশমেজাজে। সেদিন রাতে ক্রিকেটারদের একটা দল একসঙ্গে নতুন বাংলা সিনেমা সুড়ঙ্গ দেখেছে। আফগানদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচটা জেতার পর হোটেলে ফিরেই আবার হোম থিয়েটারে আরেকটি নতুন সিনেমা প্রিয়তমা। আফগানদের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর ম্যাচটা শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টা পরের ঘটনা এটি।

প্রথম টি–টোয়েন্টির একটি মুহূর্ত

জাতীয় দলের কোচরাও যে যার মতো বিনোদন খুঁজে নিচ্ছেন। দুই দিন আগেই অকল্যান্ডে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের রাগবি চ্যাম্পিয়নশিপ টেস্ট ম্যাচ হয়ে গেল। পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড স্বাভাবিকভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থক। তিনি নাকি জার্সি-টার্সি পরে টিভির সামনে বসেছিলেন ম্যাচটা দেখতে। ওদিকে আড্ডা জমিয়ে তুলতে প্রধান কোচ হাথুরুসিংহে নিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের পক্ষ।

মাঠের পারফরম্যান্সেও দলের অন্দরে এমন চাপমুক্ত পরিবেশের ছাপ দেখা যাচ্ছে! বাংলাদেশ দলের বিশ্বাস, এমন নির্ভার থাকতে পারার কারণেই আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। এভাবেই যদি সেরা ক্রিকেটটা বেরিয়ে আসে, তাহলে ক্ষতি কী! যে আফগানদের বিপক্ষে আগের নয়বারের দেখায় একবারও বাংলাদেশের রান ১৫০ ছাড়ায়নি, তাদের বিপক্ষেই কিনা এবার সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৫৪ রান তাড়া করে জয়! বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আফগান বোলিংয়ের বিপক্ষে এই রান তাড়া করে জেতা বিশেষ কিছুই।

Also Read: ‘এ রকম জয় আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়’

বাংলাদেশ দলের জন্য অবশ্য শুধু জয়ই শেষ কথা নয়, ক্রিকেটারদের দেখে নেওয়ার বিষয়ও আছে। আজকের ম্যাচটি এ বছর বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। দলে থাকা লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে সুযোগ দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জায়গা ছাড়তে হতে পারে নাসুমকে। প্রথম ম্যাচে খেলা মোস্তাফিজুর রহমানের জায়গায় সুযোগ হতে পারে হাসান মাহমুদের।

সিরিজে পিছিয়ে থাকা আফগানদের গল্পটা ভিন্ন। গতকাল দলের কয়েকজন ক্রিকেটার ঐচ্ছিক অনুশীলন করেছেন। গত বছরও বাংলাদেশ সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটা হারের পর দ্বিতীয়টিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজ ড্র করেন রশিদরা। এবারও নিশ্চয়ই সে লক্ষ্য আফগানদের। সে জন্য আফগানদের দরকার টপ অর্ডারে রান। দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও হজরতউল্লাহ জাজাই তো আছেনই, তিনে ইব্রাহিম জাদরান কেমন করেন, তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে আফগানদের ভাগ্য। একটি ভালো শুরু আর স্কোরবোর্ডে মাঝারি মানের রানই রশিদদের জন্য যথেষ্ট, শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের এই দলটার মানসিকতা এমনই।

নতুন মানসিকতার এই বাংলাদেশ দল অবশ্য এসব নিয়ে ভাবছে না। কাল শরীফুলের কথাটা শুনলেই বুঝবেন দলের ভাবনাটা কেমন, ‘আফগানিস্তান যতই র‌্যাঙ্কিংয়ে আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকুক না কেন, আমরাও লড়াই করতে নামব। তাদের চোখে চোখ রেখে চেষ্টা করব, দেখা যাক কী হয়।’

সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে ম্যাচসেরা তাওহিদ হৃদয়

মাঠের রোমাঞ্চকর ক্রিকেটটা সাধারণত এমন মানসিকতার ফল। ফলাফল যা–ই হোক, বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি খেলাটা এখন দর্শক মাঠে টানে, শহরে হইচইয়ের জন্ম দেয়। টিভি পর্দায় ভিড় বাড়ায়। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের খেলার আসল উদ্দেশ্য তো এটাই!

Also Read: ১০-এ ১০ হৃদয়