Thank you for trying Sticky AMP!!

নিজের রেস্টুরেন্ট আরএস ৫৩ রেস্টোবার অ্যান্ড লাউঞ্জে রামনরেশ সারওয়ান

ক্রিকেটার সারওয়ানের স্বপ্নপূরণ শপিং মলে

শচীন টেন্ডুলকারের আছে ‘শচিনস’। মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা মিলে দিয়েছেন ‘মিনিস্ট্রি অব ক্র্যাবস।’ বাংলাদেশে সাকিব আল হাসান–ইমরুল কায়েসদেরও আছে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। গায়ানায় এসে জানা গেল, ক্রিকেটারদের রেস্টুরেন্ট ব্যবসা সম্প্রসারিত এখানেও। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সাবেক অধিনায়ক রামনরেশ সারওয়ান বছরখানেক হলো জর্জটাউনে খুলে বসেছেন ‘আরএস ৫৩ রেস্টোবার অ্যান্ড লাউঞ্জ।’ এর বাইরে তাঁর আছে একটি ইন্ডিয়ান–থাই খাবারের রেস্টুরেন্টও।

সারওয়ানের সঙ্গে অন্য ক্রিকেটার–রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের পার্থক্য, প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামের পাশে যে আমাজনিয়া মলে তাঁর এই রেস্তোরাঁর কারবার, সেই আস্ত মলটারই মালিক তিনি। ‘আরএস ৫৩ রেস্টোবার অ্যান্ড লাউঞ্জ’ লাগোয়া অফিস রুমে বসে সারওয়ান চালাচ্ছেন তাঁর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য।

Also Read: খোলস ছেড়ে বের হচ্ছেন লিটন

সারওয়ানের মালিকানাধীন আমাজনিয়া শপিং মল

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৮৭টি টেস্ট, ১৮১টি ওয়ানডে এবং ১৮টি টি–টোয়েন্টি খেলে সারওয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান ২০১৩ সালে। গত জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক হিসেবে যোগ দিলেও পরে ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। স্ত্রী, দুই পুত্র আর এক কন্যাসন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হলেও শপিং মল আর রেস্টুরেন্ট ব্যবসাটা তাঁর জর্জটাউনে বাড়ির কাছেই।

ছুটি কাটাতে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে গায়ানায় আসা সারওয়ানের সঙ্গে কাল দুপুরে আড্ডার মতোই সময় কাটল তাঁর রেস্টুরেন্ট ‘আরএস ৫৩ রেস্টোবার অ্যান্ড লাউঞ্জে’ বসে। সারেওয়ান কথা বলেছেন স্টেলা মারিস প্রাইমারি স্কুলে তাঁর ক্রিকেটের হাতেখড়ি থেকে শুরু করে আবার সেখানে এসেই ক্রিকেটকে বিদায় জানানো পর্যন্ত প্রায় সব প্রসঙ্গেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রেকর্ড ৪১৮ রান তাড়া করে জেতা অ্যান্টিগা টেস্ট, তাঁর ক্যারিয়ারে ব্রায়ান লারার প্রভাব থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী জীবন, বাদ যায়নি কিছুই।

Also Read: সিরিজ জয়ের পর শেষ ম্যাচে হবে ‘পরীক্ষা’

রেস্টুরেন্টের অন্দরসজ্জার ছবি

আরএস ৫৩ রেস্টোবার অ্যান্ড লাউঞ্জ বিশাল সুসজ্জিত এক রেস্টুরেন্ট। ক্রিকেটারদের রেস্টুরেন্ট যে রকম হয়, জায়গায় জায়গায় ক্রিকেটের চিহ্ন। রেস্টুরেন্টের নামের সঙ্গে তো ‘৫৩’ আছেই, দেয়ালে ঝুলছে তাঁর ‘৫৩’ নম্বর মেরুনরঙা সেই ক্যারিবীয় জার্সি। জার্সি নম্বর ‘৫৩’–এর প্রদর্শনী আছে আরও নানাভাবে। রেস্টুরেন্টে যাঁরাই খেতে আসছেন, তাঁদের আরেকটা লক্ষ্য সারওয়ানের জার্সির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা।

সারওয়ানের রেস্টুরেন্টে বসে সারওয়ানের কাছেই জানতে চাইলাম—ক্রিকেটার মাত্রই কেন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আসে? প্রশ্ন শুনে অনির্দিষ্ট হাসিতে তিনি বুঝিয়ে দিলেন এই প্রশ্নের কোনো উত্তর তাঁর কাছে নেই। তবে সারওয়ান ব্যবসায় আসার কারণটা বললেন খোলামেলাভাবেই, ‘খুব অল্প বয়সেই আমি ব্যবসার গুরুত্বটা বুঝে গিয়েছিলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে যখন আসি, বুঝতে পারি এখানে কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়। নিজের ভাগ্যটা অন্যদের গড়তে না দিয়ে নিজেকেই গড়তে হবে।’

Also Read: মিরাজের কাছে চাই আরও কিছু

জর্জটাউনে রেস্টুরেন্টের কাছেই সারওয়ানের বাড়ি

নিজের শহরে একটা শপিং মল করবেন, এই স্বপ্ন সারওয়ান দেখতে শুরু করেন ২০১১ সাল থেকে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে হাত দেন আমাজনিয়া মল নির্মাণের কাজে। কোভিড–বাধা পেরিয়ে যেটি চূড়ান্ত রূপ পায় ২০২১ সালে এসে। গত বছরের ৩০ জুলাই স্বয়ং গায়ানার প্রেসিডেন্ট ইরফান আলীর হাতে ফিতা কেটে মলের উদ্বোধন, উপস্থিত ছিলেন গায়ানা সরকারের আরও অনেক গণ্যমান্য।

দীর্ঘ ১০ বছরের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় সারওয়ান ধন্যবাদ দিয়েছেন তাঁকে যাঁরা সাহায্য করেছেন সবাইকে, ‘এর আগে কানাডায় রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেছিলাম। সেটা দাঁড় করাতে পারিনি। গায়ানায় তেল পাওয়া যাওয়ার পর এখানে ব্যবসা–বাণিজ্যের ভালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যাঁরা আমাকে এই ব্যবসা দাঁড় করানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন, সবার কাছেই আমি কৃতজ্ঞ।’

Also Read: ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে যখন ‘অজেয়’ বাংলাদেশ

আমাজনিয়া শপিং মল

আমাজনিয়া মল আয়তনে খুব বড় নয়। নিচতলায় মাত্র ২৫টির মতো দোকান, দোতলায় ৬টি সিনেমা থিয়েটার, আরএস ৫৩ রেস্টোবার অ্যান্ড লাউঞ্জসহ আরও দু–একটি রেস্টুরেন্ট এবং নিচে পার্কিংয়ের পাশে ফুডকোর্ট। সারা দিনই মোটামুটি জমজমাট থাকে প্রভিডেন্স স্টেডিয়াম আর রামাদা প্রিন্সেস হোটেলের ঠিক মাঝের এই শপিং মল। তবে বিকেলের পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই ভিড়টা বাড়তে থাকে। জমজমাট হয়ে ওঠে সারওয়ানের স্বপ্নের আমাজনিয়া শপিং মল।

* রামনরেশ সারওয়ানের পুরো সাক্ষাৎকারটি পড়ুন কাল ছাপা সংস্করণে।

Also Read: ‘ভারতীয়দের দেশ’ গায়ানাতেও আছে ঈদের ছুটি