Thank you for trying Sticky AMP!!

এমন উদ্‌যাপনের মুহূর্ত আজ একটু পরপরই পেয়েছে রংপুর রাইডার্সের খেলোয়াড়েরা

সিলেটের গোলাপি সমুদ্রে মাশরাফিদের বিপক্ষে রংপুরের জয়

সিলেট স্ট্রাইকার্স ও রংপুর রাইডার্সের খেলা ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু গ্যালারি তখনো অর্ধেকটাই ফাঁকা। তবু মনে হচ্ছিল গ্যালারিভর্তি দর্শক চিৎকারে কাঁপছে স্টেডিয়াম। কিছুক্ষণ পর বোঝা গেল, দর্শকদের হইচই শুধু গ্যালারি থেকে আসছে না। স্টেডিয়ামের সামনে ও পেছনের দুই গেট দিয়ে মাঠে প্রবেশ করা দর্শকদের হইচইয়ে যেন কাঁপছিল লাক্কাতুরা স্টেডিয়াম। মাঠে প্রবেশ করা দর্শকের ভিড় দেখে নিরাপত্তাকর্মীরাও সতর্ক হলো। মিনিট বিশেকের মধ্যে সিলেট স্টেডিয়ামের গ্যালারি গোলাপি রং ধারণ করে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের জার্সির সে রং ছড়িয়ে পড়ে মাঠের পাশের টিলাতেও।

বিপিএলের কোনো দলের জন্য এমন একতরফা সমর্থন শেষ কবে দেখা গিয়েছিল, সেটা গবেষণার বিষয়। রংপুর রাইডার্সের একটা ব্যানার ছাড়া গ্যালারির সবখানেই যে সিলেটের দাপট! কিন্তু ২২ গজের গল্পটা ছিল অন্যরকম। নিজেদের ‘হাউসফুল’ দর্শকের সামনে এবারের বিপিএলে সবচেয়ে বাজে ব্যাটিংটাই করল মাশরাফির দল। রংপুরের দুই নতুন বলের বোলার শেখ মেহেদী হাসান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইর বোলিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে সিলেট। স্কোরবোর্ডে ১৮ রান তুলতেই ৭ উইকেট নেই বিপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দলটির! বিপিএলের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড (৪৪) না হয়ে যায়। কিন্তু হলো না।

Also Read: সিলেটে লেগেছে বিপিএলের রং

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ গোলাপি সমুদ্রে রূপ নিয়েছে

সেখান থেকে সিলেটেরই ঘরের ছেলে তানজিম হাসানকে নিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি প্রতিরোধ গড়েন। ৪১ রান করেন তানজিম, মাশরাফি করেছেন ২১। আর তাতেই পুরো ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে ৯২ করে সিলেট। যা ১৫.৪ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে টপকে যায় রংপুর।

গতকালই সিলেটের এই ম্যাচের উইকেট দেখে বড় স্কোরের সম্ভাবনাটা উড়িয়ে দিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। বল কিছুটা থেমে আসবে, বাঁক খাবে—এমনই ছিল মাশরাফির ধারণা। তবে সেটা যে ১৮ রানে ৭ উইকেট হারানোর মতো নয়, রংপুরের রান তাড়ায় তা বোঝা গেছে। সিলেটের ছোট্ট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রংপুরের ওপেনার রনি তালুকদার খেলেছেন স্বাভাবিক গতিতে। তাঁর ৩৮ বলে ৪১ রানের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত সহজেই জিতেছে দলটি। ২টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল রনির ইনিংসে। মাঠ ভর্তি সিলেটের সমর্থকদের সামনে জয়ের পর রংপুরের ক্রিকেটার ও ম্যানেজমেন্টে সদস্যরা সিলেট স্টেডিয়ামে আসা সমর্থকদের অভিবাদনের জবাব দিয়েছেন।

৪ উইকেট নিয়েছেন রংপুরের ওমরজাই

ক্ষতি যা হওয়ার তা অবশ্য সিলেটের ইনিংসের প্রথম ৮ ওভারেই হয়েছে। রংপুরের আফগানি পেসার ওমরজাই নতুন বলটা সুইং করিয়েছেন দুই দিকে। আর মেহেদী পেয়েছেন বাঁক ও বাউন্স। সিলেটের টপঅর্ডার সে সময়টা রয়েসয়ে খেলেনি। দুই ওপেনার টম মুরস ও নাজমুল হোসেন ব্যাট আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছেন কঠিন কন্ডিশনেও। দুজন উইকেটও হারিয়েছে সে চেষ্টায়। তৌহিদ হৃদয়ও ওমরজাইর বলে শাফল করে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লু হন। সিলেট বড় ধাক্কাটা খায় মুশফিকের বিদায়ে। চতুর্থ ওভারে হৃদয়কে আউট করার পরের বলেই গুড লেংথ থেকে ভেতরে আসা দুর্দান্ত ডেলিভারিতে মুশফিককে বোল্ড করেন ওমরজাই। আরেক টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান জাকির হাসানের ইনিংসও দীর্ঘ হয়নি। জাকিরের বিদায়ে পাওয়ার প্লেতে বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৫ উইকেট হারায় সিলেট, দলের রান তখন মাত্র ১৬।

Also Read: আর এক ম্যাচ জিতলেই নাদালকে ছুঁয়ে ফেলবেন জোকোভিচ

বিপর্যয়ের মুখে ৪১ রান করেছেন তানজিম হাসান

রংপুরের দুই ফাস্ট বোলার হারিস রউফ ও হাসান মাহমুদ এসে সিলেটের ক্ষতটা আরও গভীর করেন। দুজনই তাদের প্রথম ওভারে সিলেটের শেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটসম্যান থিসারা পেরেরা ও ইমাদ ওয়াসিমকে আউট করেন। সিলেট তখন বিপিএলের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় । সেটি দূর করেন তানজিম। রউফের গতি ও বাউন্স সামলাতে হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের এই পেসারকে। রউফের একটি বল তানজিমের মাথায়ও আঘাত করেছিল। সে রউফের পরের বলেই বাউন্ডারি মারেন তানজিম। সেটি দেখে রউফের বাহবাও পান এই তরুণ। মাশরাফির সঙ্গে ৪২ বল খেলে ৪৮ রান যোগ করেন তিনি। হাসানের ইয়র্কারে বোল্ড হওয়ার আগে তানজিমের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬ বলে ৪১ রান, ৫টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। মাশরাফি ২১ বলে ২১ রান করেন। সিলেটের স্কোরকার্ডে এই দুজনই রানটাকে দুই অঙ্কের ঘরে নিয়েছেন।

Also Read: রোনালদো নাজারিওর জাদুতেই এমন গোল রদ্রিগোর