Thank you for trying Sticky AMP!!

১২৫ বল খেলে দুজন যোগ করেন ১৩৫ রান

সাকিব, হৃদয়ের হৃদয় ভাঙার পরও বাংলাদেশের রেকর্ড

একটু অবাক করার মতোই ছিল সিদ্ধান্তটা। তামিম ইকবাল ও লিটন দাসকে বাংলাদেশ দল হারায় ব্যাটিং পাওয়ার–প্লেতেই। ক্রিজে তখন বাঁহাতি নাজমুল হোসেন। এ সময় মুশফিকুর রহিম ব্যাটিংয়ে নামবেন, এটাই প্রত্যাশিত ছিল। আর বাংলাদেশ দল সাধারণত ক্রিজে বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয় খুব পছন্দ করে। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটা হওয়ার কথা পরীক্ষা–নিরীক্ষার, সে জন্যই হয়তো চারে দেখা গেল সাকিব আল হাসানকে।

মুশফিকের জায়গায় সাকিব নামায় আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নির খুশিই হওয়ার কথা। ক্রিজে একই সময় দুজন বাঁহাতি যে পেয়ে গেলেন তিনি! বোলিং পরিকল্পনা সাজানোটা একটু সহজই হবে আইরিশদের। অভিজ্ঞ অফ স্পিনার অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন তো আছেনই। দরকার পড়লে হ্যারি টেক্টরকেও বোলিংয়ে আনা যাবে।

সাকিব অবশ্য আইরিশ অফ স্পিনের চ্যালেঞ্জ সামলানোর প্রস্তুতিটা নিয়েই রেখেছিলেন। আইরিশদের ২০ ওভারের অফ স্পিন খেলার কথা ভেবে গতকালের অনুশীলনে সুইচ হিট, রিভার্স সুইপ, ল্যাপ সুইপ অনুশীলন করেছেন সময় নিয়ে। আজ তাঁর ইনিংসের শুরুটাও হয়েছে স্বাচ্ছন্দ্যেই। নাজমুলও ভালোই খেলছিলেন। কিন্তু ১৭তম ওভারে ম্যাকব্রাইনের আর্ম বল উড়িয়ে দেয় তাঁর স্টাম্প। টার্নের আশায় ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হন এই বাঁহাতি।

Also Read: দুবাইফেরত সাকিব যখন ডানহাতি ব্যাটসম্যান

আরও একটি উইকেটের পতন এবং আরও একবার চমক। এবারও মুশফিক নামলেন না! ক্রিজে এলেন অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। দারুণ ছন্দে থাকা এই তরুণ ব্যাটসম্যানকে সঙ্গে নিয়েই সাকিব গড়লেন ম্যাচের সবচেয়ে বড় জুটি। সেটাও এল দ্রুতগতিতে।

১২৫ বল খেলে দুজন যোগ করেন ১৩৫ রান। মাঝের ওভারে দুজনের গড়ে দেওয়া মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইনিংস শেষে বাংলাদেশের রানটা গিয়ে দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ৩৩৮, যা ওয়ানডে ইতিহাসেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

৯৩ রান করেছেন সাকিব

রানের পাহাড় গড়লেও বাংলাদেশ দলে ইনিংসে ছিল সেঞ্চুরির আক্ষেপ। দুই–দুইবার যে সে সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া হয়ে গেছে! সেঞ্চুরির সুবাস ছড়াতে ছড়াতে সাকিব আউট হয়ে গেছেন ৯৩ রান করে। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেক ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা থেকে মাত্র ৮ রান দূরে থাকতে আউট হয়ে যান হৃদয়ও। আর তাতে ওয়ানডেতে এই প্রথম একই ম্যাচে বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান আউট হলেন নার্ভাস নাইনটিতে। সব সংস্করণ মিলিয়েও বাংলাদেশের ইনিংসে এটা এ রকম দ্বিতীয় ঘটনা।

Also Read: এই ডাবলেও দ্রুততম সাকিব

দারুণ খেলতে থাকা সাকিব ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সাত হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করে এগোচ্ছিলেন দশম সেঞ্চুরির দিকে। ইনিংসের ৩৪তম ওভারে ৭৬ বলে ৬৭ রানে ব্যাট করছিলেন সাকিব। টেক্টরের করা পরের ওভারে ৫টি চার মারেন সাকিব। ওই ওভারের চতুর্থ বলটিও চার হতে পারত। সোজা ব্যাটে উড়িয়ে মারা বলটা লং অফ-লং অনের মাঝে পড়েই থেমে যায়। নইলে সেই ওভারের সব বলেই বাউন্ডারি হতে পারত। সাকিব সে ওভারেই ২২ রান নিয়ে পৌঁছে যান আশির ঘরে।

সেঞ্চুরি পাননি হৃদয়ও

বলবার্নিও সাকিবকে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে দেখে পরিকল্পনা বদলান। স্পিন থামিয়ে দুই প্রান্ত থেকেই পেস বোলার নিয়ে আসেন। কাজেও দিয়েছে সে পরিকল্পনা। সাকিব এরপর আর কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত গ্রাহাম হিউমের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান তিনি। সাকিবের ৮৯ বলে ৯৩ রানের ইনিংসটিতে ৯টি চার ছিল।

Also Read: তৌহিদ হৃদয়ের রূপান্তরের গল্প

উইকেটে থিতু হওয়ার পর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন হৃদয়ও। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিজের ব্যাটিং–সামর্থ্য দেখিয়েছেন। কিন্তু বড় ইনিংস খেলার সুযোগ পাননি। ৫০ ওভারের ম্যাচে পাঁচে খেলার সুযোগ পেয়ে এই তরুণ ব্যাটসম্যান দেখালেন তাঁর শটের ভান্ডার। কিন্তু তাঁর ইনিংসও ৯০–এর ঘরে এসে শেষ দেখে ফেলে সেই হিউমের বলেই। ৮৫ বলে হৃদয়ের ৯২ রানের ইনিংসটিতে ছিল ৮টি চার ও ২টি বিশাল ছক্কা।

বাংলাদেশের রানটাকে বাড়াতে সাহায্য করেছে মুশফিকের ২৬ বলে ৪৪ রানের ইনিংসটিও। ৩টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিল তাঁর বিস্ফোরক ইনিংসে। ১৬৯ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি থেমেছে হিউমেরই বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে। ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন হিউম।