Thank you for trying Sticky AMP!!

গোলের পর মরক্কোর মিডফিল্ডার জাকারিয়া আবুখলাল

মরক্কোর কাছে হারল ডি ব্রুইনা–হ্যাজার্ডের বেলজিয়াম

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বেলজিয়াম কখনো আফ্রিকান দেশের বিপক্ষে হারেনি। হারেনি প্রথম রাউন্ডে খেলা নিজেদের শেষ ৮ ম্যাচেই। কিন্তু বিশ্বকাপে নিজেদের ৫০তম ম্যাচটিতে ভেঙে গেল অপরাজেয় ধারা। আজ মরক্কোর কাছে ২–০ গোলে হেরে গেছে গতবারের সেমিফাইনালিস্টরা।

ফেবারিট বিচারে কাতার বিশ্বকাপে এটি তৃতীয় অঘটন। এর আগে আর্জেন্টিনা সৌদি আরবের কাছে, জার্মানি জাপানের কাছে হেরে গিয়েছিল।

‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচটিতে হেরে গেলেও অবশ্য এখনো দ্বিতীয় রাউন্ডের ওঠার পথ খোলা আছে বেলজিয়ামের। প্রথম ম্যাচে কানাডাকে হারানোর সুবাদে দলটির পয়েন্ট ৩। আর ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ড্র করা মরক্কোর পয়েন্ট এখন ৪।

আল থুমামা স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে প্রথমার্ধের বেশির ভাগ সময় বল দখলে রেখেছিল বেলজিয়ামই। ৭০ শতাংশ বল দখলে রেখে নিজেদের রেকর্ডও গড়ে ইউরোপীয় দেশটি। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর আর কখনো ম্যাচের প্রথমার্ধে এত বেশি সময় বল দখলে রাখতে পারেনি তারা।

বল দখলের সূত্রে ম্যাচে গোলমুখে ভীতি ছড়ানো প্রথম বড় আক্রমণটিও করে বেলজিয়ামই। পঞ্চম মিনিটে দুই ভাই এডেন হ্যাজার্ড ও থরগান হ্যাজার্ডের একে অপরকে বল দেওয়া-নেওয়া করে পাঠিয়ে দেন মিচি বাতশুয়াইয়ের কাছে। আগের ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে গোল করা এই ফরোয়ার্ড ডি বক্সের বা দিক থেকে গোলমুখে শট নেন। এগিয়ে এসে কর্নারের বিনিময়ে সেটি প্রতিহত করে দেন মরক্কোর গোলকিপার মুনির মোহাম্মদি।

বেলজিয়াম রক্ষণে বারবার হানা দিয়েছে মরক্কো

এর পরের খেলায় গোলের সম্ভাবনা জাগানো বেশির ভাগ আক্রমণই করে মরক্কো। আগের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করা দলটি এ দিনও মূল দৃষ্টি দেয় রক্ষণে। কিন্তু বল পায়ে পেলে প্রতিপক্ষ রক্ষণে ঢুকে যেতে সময় নেয়নি। বারবার হানা দেওয়ার ধারায় ২১ মিনিটে বেলজিয়াম ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন হাকিম জিয়েশ। তবে চেলসি উইঙ্গারের শট বারের ওপর দিয়ে চলে যায়।

সাত মিনিট পরের আক্রমণটি ছিল আরও সম্ভাবনাময়ী। বেলজিয়াম ডি বক্সে নায়েফ আগুয়ের্দের হেড থেকে বল পেয়ে যান সেলিম আমাল্লাহ। বেলজিয়ামে জন্ম নেওয়া মরক্কোর এই মিডফিল্ডার মাপমতো শট নিতে পারেননি, বল উড়িয়ে দেন ওপর দিয়ে। ৩৫ মিনিটে আরেকটি ভালো সুযোগ নষ্ট করেন আশরাফ হাকিমি। পিএসজি ডিফেন্ডার বল পেয়েছিলেন মাঝমাঠের একটু সামনে। দ্রুতগতিতে ডি বক্সে ঢুকে শট নিলেও বল চলে যায় পোস্টের পাশ দিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধের জোড়া গোলে বেলজিয়ামকে হারিয়েছে মরক্কো

তবে প্রথমার্ধেই একবার বেলজিয়ামের জালে বল পাঠিয়ে দেয় মরক্কো। ডি বক্সের ডান পাশ থেকে নেওয়া জিয়েশের ফ্রি কিক থিবো কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে জালে জায়গা করে। গোলের উৎসবও শুরু করে মরক্কোর খেলোয়াড়রা। তবে ভিএআর চেকে অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। কিক নেওয়ার মুহূর্তে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন রোমেইন সাইস।

স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বিরতিতে যায় বেলজিয়াম।

Also Read: বিশ্বকাপের সবচেয়ে দামি দল কোনটি

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা আর স্বস্তিতে কাটাতে পারেনি দলটি।

প্রথমার্ধের মতো এই অর্ধেও প্রথম বিশ মিনিট উভয় দল বিফল আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণ করে যায়। আক্রমণের ধার বাড়াতে ৬৮ মিনিটে মিডফিল্ডার সেলিমকে তুলে ফরোয়ার্ড আবদেলহামিদ সাবিরিকে নামান মরক্কো কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই। পাঁচ মিনিট বাদেই চলে আসে গোল।

প্রথমার্ধে জিয়েশ যে জায়গা থেকে ফ্রি কিক নিয়ে বল জালে জড়িয়েছিলেন, ওই একই জায়গা থেকে একই ধরনের ফ্রি কিক নেন সাবিরি। কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় জালে। আগের ফ্রি কিকের কার্বন কপি হলেও এ যাত্রায় আর অফসাইড হয়নি।

ম্যাচের পর মায়ের ভালোবাসায় সিক্ত মরক্কো ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমি

গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পর মরক্কো নজর দেয় রক্ষণে। বেলজিয়াম ধার বাড়ায় আক্রমণে। তবে লুকাকু, চার্লস ডি কেতেলারা নামলেও জমাট রক্ষণের সামনে গোলমুখ খুলতে পারেনি বেলজিয়াম। উল্টো যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে আরেকটি গোল হজম করে বসেন কোর্তোয়া। জিয়েশের ক্রস থেকে বল জালে জড়ান জাকারিয়া আবুখলাল।

‘এফ’ গ্রুপে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেছে মরক্কো। ৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বেলজিয়াম। তিনে থাকা ক্রোয়েশিয়ার পয়েন্ট ১, কানাডার শূন্য।

১ ডিসেম্বর গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে বেলজিয়ামের প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া, মরক্কো খেলবে কানাডার বিপক্ষে।