Thank you for trying Sticky AMP!!

হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন মেসি। গতকাল লুসাইলে

আর্জেন্টিনার এক হারেই ফ্যান টোকেনে রেকর্ড পতন

আর্জেন্টিনা দলের ঘোরবিরোধী মানুষটিও কি ভেবেছিলেন, সৌদি আরবের বিপক্ষে চরমতম দুঃস্বপ্ন অপেক্ষা করছে লিওনেল মেসিদের জন্য? তবে কল্পনাকে হার মানিয়ে এটাই এখন বাস্তব।

লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে গতকাল আর্জেন্টিনাকে ২–১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছে সৌদি আরব। প্রথমার্ধে অধিনায়ক মেসির পেনাল্টি গোলে এগিয়ে গেলেও বিরতির পর পাঁচ মিনিটের ‘মরু–ঝড়ে’ ২ গোল হজম করে স্তব্ধ হয়ে যান ডিয়েগো ম্যারাডোনার উত্তরসূরিরা।

গ্যালারিতে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের মলিন মুখগুলোই বলে দিচ্ছে ম্যাচের ফল

ওই হারের পর বিশ্বজুড়ে অসংখ্য আর্জেন্টাইন ভক্তের হৃদয় তো ভেঙেছেই, বাংলাদেশের কুমিল্লায় এক সমর্থকের মৃত্যুর খবরও সংবাদমাধ্যমে এসেছে। শুধু কি তাই? সর্বোচ্চ ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত ফ্যান টোকেন খুইয়ে দিশাহারা আর্জেন্টিনার পক্ষে বাজি ধরা জুয়াড়িরা। এটিই যে তাঁদের ফ্যান টোকেন ইতিোসে রেকর্ড পতন!

ফ্যান টোকেন হলো ক্রিপ্টোকারেন্সির (ডিজিটাল মুদ্রা বা গুপ্তমুদ্রা) একধরনের মাধ্যম। এই টোকেন সমর্থকদের বিশ্বব্যাপী তাঁদের সঙ্গে দলগুলোকে সংযুক্ত করে।

ক্রিপ্টোকারেন্সির অস্তিত্ব শুধু ইন্টারনেট বা ভার্চ্যুয়াল জগতে, এটা নিশ্চয়ই সবার জানা। সেই ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন ও বিশ্লেষণবিষয়ক ওয়েবসাইটগুলো জানাচ্ছে, সৌদি আরবের কাছে হারের পর আর্জেন্টাইন সমর্থকদের ফ্যান টোকেনের পতন হয়েছে ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত। ‘দ্য ফার্স্ট মিন্ট’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর একটি লেখচিত্র প্রকাশ করেছে।

সে তুলনায় অন্য দুটি ওয়েবসাইট পতনের হার কিছুটা কম দেখিয়েছে। বেইনক্রিপ্টোর হিসাবে যা ২৫ শতাংশ আর কয়েনস্ক্রিডের হিসাবে ৩১ শতাংশ।

Also Read: ‘আমার জন্য কেঁদো না আর্জেন্টিনা’

নভেম্বর মাসে মোট ৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের ফ্যান টোকেন বিক্রি হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ টোকেন বিক্রির পরিমাণ ১৭৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ফুটবল বিশ্বকাপের কারণেই যে ক্রিপ্টোকারেন্সির রমরমা অবস্থা, সেটি না বললেও চলছে। নির্দিষ্ট কিছু ম্যাচের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র টোকেনের দাম তো হুহু করে বেড়েছে। আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা মেসির পেছনে অত্যধিক মাত্রায় বাজি ধরার কারণে টোকেন সংকটে পড়েছিলেন। সে কারণে স্বতন্ত্র টোকেনধারীদের কাছ থেকে বেশি দামে টোকেন কিনতে হয়েছে।

এটা অনেকটাই ডলার–সংকটের মতো। বাংলাদেশে সংকট দেখা দেওয়ায় যেমন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ডলার, ঠিক একইভাবে সৌদির বিপক্ষে ম্যাচের আগে হাতে থাকা সব টাকায় অতিরিক্ত দামে ফ্যান কয়েন কিনেছিলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা। ম্যাচের শুরুতেই মেসি গোল করে দলকে এগিয়ে দেওয়ার পর নিশ্চিত জয় ধরে আরও বেশি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন তাঁরা। আর্জেন্টিনা জিতলে প্রচুর লাভবান হয়ে যেতেন দলটির সমর্থকেরা। কিন্তু অপ্রত্যাশিত, অনাকাঙ্ক্ষিত, অকল্পনীয় হারের পর উল্টো এখন ফতুর হওয়ার দশা!

Also Read: চোয়াল ভেঙে গেছে সৌদির সেই ডিফেন্ডারের

ক্রিপ্টোকারেন্সি গবেষণা সংস্থা ডেলফি ডিজিটাল জানায়, সবুজ টোকেনগুলো লাল হয়ে ঝরে পড়ায় সপ্তাহ শেষ না হতেই ফুটবল সূচক ২১ শতাংশ কমেছে। আর্জেন্টিনার অগণিত ভক্তের সর্বনাশে স্বাভাবিকভাবেই গুটিকয়েক সৌদি সমর্থকের এখন পৌষ মাস। তাঁদের অবিনিময়যোগ্য টোকেনের (এনএফটি) ফ্লোর প্রাইস ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ফ্লোর প্রাইস হলো এমন পণ্য বা সেবা, যার দাম সরকার নির্ধারণ করে দেয়। এই দাম কখনো কমে না, শুধু বাড়ে।

সৌদি আরাবিয়ান ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন ছিল কাল

সামগ্রিকভাবে টোকেনগুলোর দাম ম্যাচের ফল বা কোনো দলের বিশেষ পারফরম্যান্স দ্বারা প্রভাবিত হয়। সৌদি আরব মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল দেওয়ায় আর্জেন্টিনার ফ্যান টোকেনে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধস নেমেছে।