Thank you for trying Sticky AMP!!

খাবার, পানি ছাড়াই দিন পার করছে আফগানরা

গত দুই দশকের মধ্যে এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখেনি আফগানিস্তানের মানুষ

খাবার, পানি ও আশ্রয় ছাড়াই দিন পার করছে আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষজন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ত্রাণের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। কিন্তু গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত তাদের অনেকের কাছে কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। এ পরিস্থিতির মধ্য তাদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে বৃষ্টি ও বন্যা। দেশটির তালেবান সরকার আরও বৈদেশিক সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এরই মধ্যে পাকতিকা প্রদেশের গায়ান জেলায় গতকাল শুক্রবার নতুন করে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছে। খবর আল–জাজিরা ও এএফপির

কাবুল থেকে ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত পাকতিকা অঞ্চলে গত বুধবার ভোরে ভূমিকম্প আঘাত হানে। ৫ দশমিক ৯ রিখটার স্কেলের ওই ভূমিকম্পে অন্তত ১ হাজার লোক নিহত হয়। অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকটি জেলায় ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে। নিহত মানুষদের দাফন করার মতো সরঞ্জামও পাওয়া যাচ্ছে না সেখানে।

পাকতিকা প্রদেশের একটি গ্রামের বাসিন্দা জায়তুল্লাহ ঘুরজিওয়াল (২১) বলেন, ‘কোনো কম্বল, তাঁবু বা কোনো আশ্রয় নেই। পুরো পানি সরবরাহব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। সত্যিকার অর্থে খাওয়ার মতো কিছুই নেই।’

পাকতিকা প্রদেশের তথ্যবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা আমিন হুজাইফা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের কাছে সাহায্য পৌঁছাতে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যা বাধা সৃষ্টি করছে। ভূমিকম্পে মুঠোফোনের টাওয়ার পড়ে ও বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে এসেছে।

ভূমিকম্প আঘাত হানা এলাকাগুলোয় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে পাহাড়ের ঢালে থাকা গ্রামগুলোর জন্য পাথর ও ভূমিধসের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। ওই অঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে প্রায় ২০ জনের বসবাস।

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, আফগানিস্তানের এ ভূমিকম্পে ১ লাখ ১৮ হাজারের বেশি শিশুর ওপর প্রভাব পড়বে। অনেক শিশুর এখন বিশুদ্ধ খাবার পানি, খাদ্য ও নিরাপদে ঘুমানোর জায়গা নেই।

এই বিপর্যয় আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সাহায্যনির্ভর এই দেশ থেকে গত বছরের আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর অনেক সাহায্যকারী সংস্থা নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। বুধবারের ভূমিকম্পের আগে জাতিসংঘ আফগানিস্তানের মানবিক সংকটের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল। তবে ভূমিকম্পের পর অনেক দেশ এখন তালেবান সরকারকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে। তবে তালেবান এ সাহায্য কীভাবে ব্যবহার করবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

তালেবান সরকারের মুখপাত্র বিলাল কারিমি বলেন, ‘অনেক দেশ আমাদের সাহায্য করেছে এবং পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। বিদেশ থেকে যে সাহায্য আসবে, তা বিতরণে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হবে।’

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানদের জন্য সাহায্য করতে জাতিসংঘ পুরোপুরি সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, তালেবান সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, পাকতিকার গায়ান জেলায় গতকাল নতুন করে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল পাকিস্তান–আফগানিস্তানের সীমান্ত এলাকায়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। এ ভূমিকম্পে পাঁচজন নিহত হয়েছে।

Also Read: ভূমিকম্পে পরিবারের ১৯ জনকে হারিয়েছেন আফগান নারী