Thank you for trying Sticky AMP!!

সিরিয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্ম শিশুটির, হারাল মা–বাবাকে

ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্ম নেওয়া শিশুটির চিকিৎসা চলছে। সিরিয়ার আফরিন শহরের একটি হাসপাতালে

সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে পুরো বাড়ি। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন একজন অন্তঃসত্ত্বা। সেখানেই জন্ম দিয়েছেন ফুটফুটে এক মেয়েশিশু। নবজাতকের জন্মের পরপরই মারা যান ওই নারী। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় শিশুটি। তবে শুধু মাকে নয়, এই পৃথিবীতে আসার দিনই ভূমিকম্পে বাবা ও ভাই–বোনকেও হারিয়েছে শিশুটি।

উদ্ধারকর্মীরা ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপের নিচে যখন সন্ধান পান, তখন মৃত মায়ের পাশে পড়ে ছিল শিশুটি। মায়ের সঙ্গে তার নাড়ি পেঁচানো অবস্থায় ছিল। সেখান থেকে বের করে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। এখন পরিবারের সদস্যদের হারানো এতিম শিশুটির নাম রাখা হয়েছে ‘আয়া’। এর অর্থ ‘অলৌকিক’।

অবাক করা ঘটনাটি ঘটেছে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের জেন্দেরিস শহরে। মা–বাবা মারা যাওয়ায় শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর দাদা সালাহ আল–বাদরানের পরিবারে এনে রাখা হবে। বাদরানের বাড়িও ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে তিনি এখন তাঁবুতে বসবাস করছেন।

শিশুটিকে উদ্ধার করার একটি ছোট্ট ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি চারতলা ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে ধুলার মধ্যে পড়ে আছে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটি। পাশেই পড়ে আছে মায়ের মরদেহ। পরে সেখান থেকে শিশুটিকে বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা।

এখন সিরিয়ার আফরিন শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে শিশু আয়ার। শিশুটির ঠান্ডা লেগেছে, শ্বাসকষ্ট রয়েছে। সেই সঙ্গে শরীরে ক্ষত দেখা দিয়েছে। সেখানে একজন চিকিৎসকের স্ত্রী শিশুটিকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন। চিকিৎসকেরা জানান, শিশু আয়াকে দত্তক নিতে চাইছেন অনেকেই।

Also Read: ভূমিকম্পের ৭৯ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার ২ বছরের শিশু

তুরস্ক ও সিরিয়ায় গত সোমবারের ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেশ দুটির সরকারি সূত্র ও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত তুরস্কে ১৭ হাজার ৬৭৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর সিরিয়ায় মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৭৭ জন। দুই দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৫১।

ভূমিকম্পে তুরস্কের ১০টি ও সিরিয়ার ৪টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুরস্কের সরকারি হিসাবে, দেশটিতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি। আর সিরিয়ায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক এল-মোস্তাফা বেনলামিল জানিয়েছেন, দেশটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ কোটির বেশি মানুষ।

Also Read: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যু ২১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে

উদ্ধারকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রচণ্ড ঠান্ডা, বৃষ্টি, যোগাযোগে বিপর্যয়সহ নানা সমস্যা। আশ্রয়, খাবার, পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুতের অভাবে চরম দুর্দশায় রয়েছেন উপদ্রুত এলাকাগুলোর বেঁচে থাকা মানুষেরা। ফলে তাঁদের মধ্য থেকেও অনেকের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

Also Read: খাদ্যসংকট, বরফঠান্ডায় কাবু গৃহহীন লাখো মানুষ

Also Read: মায়ের দুধে বেঁচে ছিল ১৮ মাসের মাশাল, ৫৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার

Also Read: ৫২ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৫ বছরের শিশুকে জীবিত উদ্ধার

Also Read: ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া শিশুর মুখে ছিপি দিয়ে পানি খাওয়ানোর ভিডিও