Thank you for trying Sticky AMP!!

শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় বসতে রাজি মস্কো

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ

কেউ যদি ইউক্রেন নিয়ে আলোচনায় বসতে চায়, তবে তাদের কথা শুনতে প্রস্তুত মস্কো। ইউক্রেন যুদ্ধের ১০ মাস উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এ কথা বলেছেন।

লাভরভ বলেছেন, ইউক্রেন অভিযোগ করে আসছে, রাশিয়া তার সশস্ত্র বাহিনী পুনর্গঠনের জন্য সময় পেতে আলোচনা চাইছে। তাদের এ অভিযোগ অযৌক্তিক। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া পশ্চিমাদের সঙ্গেও আলোচনায় ফিরতে ইচ্ছুক। তবে তার জন্য গত ডিসেম্বরে মস্কো যে নিরাপত্তা প্রস্তাব দিয়েছে, সেগুলো আলোচনার যোগ্যতা নিয়ে তাদের মানসিকতা বদলাতে হবে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর বিরুদ্ধে এমনভাবে চীনে উত্তেজনা বাড়ানোর অভিযোগ করেছেন, যা রাশিয়ার জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ন্যাটোর কারণে দক্ষিণ চীন সাগর এখন উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চল হয়ে উঠেছে। এর আগে তারা ইউক্রেনে উত্তেজনা বাড়াতে এ কাজ করেছিল। এই উসকানিকে চীন কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে, আমরা তা জানি। আমরা বুঝতে পারছি, এ অঞ্চলে ন্যাটো আগুন নিয়ে খেলছে, যা রাশিয়ার জন্য হুমকি ও ঝুঁকি তৈরি করছে। এ কারণেই রাশিয়া চীনের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়াচ্ছে ও যৌথ মহড়া করছে।

লাভরভ বলেন, পশ্চিমারা ভারতে রাশিয়ার প্রভাব কমানোর চেষ্টা করছে। তিনি ন্যাটোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা ভারতকে রাশিয়া ও চীনবিরোধী জোটে টেনে আনার চেষ্টা করছে।

লাভরভ আরও বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে মস্কো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে ইচ্ছুক। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমাদের সংশ্লিষ্টতা উপেক্ষা করে পারমাণবিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়। কারণ, তারা ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে, ইউক্রেনের গণতন্ত্রকে বাঁচানো তাদের লক্ষ্য নয়। তাদের লক্ষ্য যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে হারানো, রাশিয়াকে ধ্বংস করা।

কিন্তু রাশিয়ার এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। ইউক্রেনের মিত্রদের ভাষ্য, তারা কিয়েভকে অস্ত্র দিচ্ছে মূলত রুশ আগ্রাসন থেকে তাদের আত্মরক্ষার জন্য।

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এখনো বিপর্যস্ত

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের অর্ধেক এখনো মেরামত করা যায়নি। গত সপ্তাহে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালায়। এতে দেশটির লাখো মানুষ বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্ধকারে রয়েছে। ইউক্রেনের ডিটেক নামের প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, ইউক্রেনের মোট বিদ্যুৎ খাতের ৪০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অন্তত ১২ জনের বেশি কর্মী নিহত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, জ্বালানি অবকাঠামোতে ক্রমাগত রুশ বাহিনীর হামলার ফলে ইউক্রেনজুড়ে নির্বিচার ব্যাপক মানবিক দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গের অভিযোগ, ইউক্রেন যুদ্ধে শীতকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার রকেট লাঞ্চার ব্যবস্থা (এলআরইউ) সরবরাহ করেছে ফ্রান্স। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেস্কি রেজনিকভ গত বুধবার টুইটে এ তথ্য জানান। এর আগে তিনি যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিতে জার্মানির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর দেশের বাহিনী ‘কঠিন’ পরিস্থিতিতে রয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর দেশগুলোর প্রতি আরও অস্ত্রসহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘রুশ বাহিনী পূর্বাঞ্চলের লুহানস্কে হামলা জোরদার করেছে। আগামী দিনগুলোয় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে বড় হামলার পরিকল্পনা করছে তারা। এ কঠিন পরিস্থিতিতে ন্যাটোর দেশগুলোর প্রতিশ্রুত অস্ত্র ও ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা মেরামতের যন্ত্রাংশ আমাদের প্রয়োজন।’

Also Read: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভাগ্য নির্ধারণ করবে যে ঘটনা

Also Read: ইউক্রেন টিকে থাকবে, চালিয়ে যাবে যুদ্ধ: জেলেনস্কি–পত্নী