Thank you for trying Sticky AMP!!

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ইলেক্টোরাল বন্ড অসাংবিধানিক বললেন সুপ্রিম কোর্ট, ধাক্কা খেল মোদি সরকার

নির্বাচনের ঠিক আগে বড় ধাক্কা খেল ভারতের কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। ইলেক্টোরাল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থা অসাংবিধানিক বলে রায় দিলেন সুপ্রিম কোর্ট।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এ রায় দিয়ে জানান, বেনামি নির্বাচনী বন্ডের ফলে নাগরিকদের তথ্য জানার অধিকার হরণ হচ্ছে। ফলে সংবিধানের ১৯ (১) (ক) ধারা ভঙ্গ হচ্ছে। তাই অবিলম্বে এ প্রকল্প প্রত্যাহার করতে হবে।

নরেন্দ্র মোদি সরকার ২০১৮ সালে এ ব্যবস্থা চালু করেছিল। সরকারের দাবি ছিল, ফলে নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ হবে। নির্বাচনী তহবিলে স্বচ্ছতা আসবে। মামলার বিরোধিতা করে সরকার সর্বোচ্চ আদালতকে জানিয়েছিল, রাজনৈতিক দল কে, কার কাছ থেকে কত টাকা পাচ্ছে, তা জানার অধিকার ভোটারদের থাকতে পারে না।

মামলাকারীদের বক্তব্য, ফলে অস্বচ্ছতা থেকেই যাচ্ছে। পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যবস্থা চালু নেই। কোন করপোরেট সংস্থা কোন দলকে অর্থ সাহায্যের বিনিময়ে কী সুবিধা আদায় করছে, তা জানার উপায় থাকছে না।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছেন, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে অবিলম্বে এ ব্যবস্থায় অর্থ সংগ্রহ বন্ধ করে দিতে হবে। এত দিন ধরে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বন্ড মারফত কার কাছ থেকে কত টাকা সংগ্রহ করেছে, কোন দল কার কাছ থেকে কত অর্থ পেয়েছে, সব জানাতে হবে।

এযাবৎ বন্ড মারফত রাজনৈতিক দলগুলো যত অর্থ সংগ্রহ করেছে, দেখা গেছে, তার সিংহভাগ (প্রায় ৯০ শতাংশ) পেয়েছে শাসক দল বিজেপি। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফমর্সের (এডিআর) সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২–২৩ অর্থবর্ষে জাতীয় দলগুলো বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও করপোরেট সংস্থা থেকে ৮৫০ কোটি টাকার বেশি অর্থিক অনুদান পেয়েছে। এর শীর্ষে রয়েছে বিজেপি। এই অর্থের মধ্যে শুধু তাদের প্রাপ্তি ৭১৯ কোটি ৮০ লাখ রুপি। কংগ্রেস পেয়েছে ৮০ কোটি রুপির মতো।

রায়ে সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেন, রাজনৈতিক দল দুটি কারণে রাজনৈতিক দলকে অর্থ দেয়। একটি কারণ সমর্থনের জন্য। আবার ওই সাহায্যের মধ্য দিয়ে পারস্পরিক দেওয়া–নেওয়াও হতে পারে। বিচারপতিরা বলেন, কালো টাকা বন্ধের দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। দাতাদের চরিত্র রক্ষার দাবিও সমর্থনযোগ্য নয়।

রায়ে বলা হয়েছে, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে দাতা ও গ্রহীতাদের সব তথ্য অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে সেসব তথ্য ৩১ মার্চের মধ্যে তাদের ওয়েবসাইটে তুলে দিতে হবে, যাতে সবাই সব জানতে পারে।

এ ব্যবস্থা অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলকে ব্যক্তি বা সংস্থা সরাসরি টাকা দিতে পারবে না। সাহায্য করতে গেলে বন্ড মারফত করতে হবে। বন্ডের মূল্য ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লাখ, ১০ লাখ ও ১ কোটি টাকা। রাজনৈতিক দল নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে টাকা নিতে পারবে। কিন্তু কে কাকে কত টাকা দিচ্ছে, তা সাধারণ মানুষ জানতে পারবে না। সব তথ্য জমা থাকবে স্টেট ব্যাংকের কাছে।

বিরোধীদের বক্তব্য, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক যেহেতু কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন, তাই সরকার সব তথ্য জানার অধিকারী। সে ক্ষেত্রে সরকার ইচ্ছামতো দাতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ছাড়াও ওই বেঞ্চের ছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বি আর গাভাই, জে বি পর্দিওয়ালা ও মনোজ মিশ্র। পাঁচ বিচারপতির সিদ্ধান্তই সর্বসম্মতভাবে গৃহীত।

Also Read: দলের খরচ চালাতে জনতার দুয়ারে কংগ্রেস