ভিসার আবেদনের জন্য কী লাগবে

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের একটি দৃশ্য। ছবি: ইন্টারনেট
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের একটি দৃশ্য। ছবি: ইন্টারনেট

অভিবাসন খ্যাত দেশ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাস ও কাজের সুযোগ নিয়ে আসছে নতুন দুটি ভিসা। এর মধ্যে একটি হচ্ছে স্কিলড ওয়ার্ক রিজওনাল সাবক্লাস ৪৯১ ভিসা। অন্যটি স্কিলড এমপ্লয়ার স্পনসরড সাবক্লাস ৪৯৪ ভিসা।

এর আগের লেখায় পড়ুন:  সাবক্লাস ৪৯১ ভিসা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আজকের লেখায় সাবক্লাস ৪৯৪ ভিসার মূল বিষয়গুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।

আগামী ১৬ নভেম্বর দেশটির বর্তমান প্রচলিত আঞ্চলিক ভিসা সাবক্লাস ১৮৭ বাতিল করবে অভিবাসন বিভাগ। আর নতুন ভিসায় প্রতিবছর ৯ হাজার আবেদন মঞ্জুর করবে দেশটি।

সাবক্লাস ৪৯৪ ভিসাটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের স্পনসরড ভিসা। অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার সচল ও অনুমোদিত কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক মনোনীত হলে তবেই পাওয়া যাবে এ ভিসা। বলা যায়, দেশটির চলতি আঞ্চলিক ভিসা সাবক্লাস ১৮৭ ভিসার বদলে আসছে ভিসাটি। পাশাপাশি ৪৯৪ ভিসাটি আঞ্চলিক বা রাজ্যভিত্তিক ভিসা। অর্থাৎ এ ভিসা অস্ট্রেলিয়ার নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য। বড় মহানগর সিডনি, মেলবোর্ন, পার্থ, ব্রিসবেন ও গোল্ড কোস্ট ছাড়া দেশটির যেকোনো জায়গার জন্য প্রযোজ্য।

এই ভিসার মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। এই পাঁচ বছরের মধ্যে তিন বছর অস্ট্রেলিয়ার কোনো আঞ্চলিক অঞ্চলে বসবাস করার পর ভিসাধারীরা ২০২২ সালে চালু হতে যাওয়া সাবক্লাস ৪৯১ স্থায়ী ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এই ভিসা প্রাপ্তির আবশ্যিক শর্ত সাবক্লাস ১৮৭ ভিসার মতোই। এই ভিসায় আবেদনের বয়সসীমা ৪৫ বছর। ইংরেজি ভাষা দক্ষতায় কমপক্ষে আইইএলটিএস ৬ বা সমমানের হতে হবে। সেই সঙ্গে থাকতে হবে উপযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার স্কিল অ্যাসেসমেন্ট ও নিজ পেশায় অন্তত তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা।

তবে ভালো দিক হচ্ছে, এই ভিসায় প্রায় ৬৭৩টি মনোনীত পেশা থাকবে। যা কিনা অস্ট্রেলিয়ার চাহিদাপূর্ণ সাধারণ প্রায় সব ধরনের পেশা অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ফলে প্রায় সব ধরনের পেশাজীবী মানুষ এই ভিসায় আবেদন করতে পারবেন।

ভিসা মঞ্জুর হলে ভিসার মেয়াদে আঞ্চলিক শহরেই বসবাস ও কাজ করতে হবে। তবে ভিসাধারী চাইলে আঞ্চলিক এক এলাকা থেকে অন্য অঞ্চলে কাজ ও বসবাস করতে পারবেন। তবে কোনোভাবেই উল্লিখিত বড় শহরে বসবাস করতে পারবেন না।

এই ভিসাও প্রচলিত সাবক্লাস ৪৮২ আবেদনের প্রক্রিয়ার মতো তিন ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার সচল ও অনুমোদিত কোনো ব্যবসা স্পনসর করার জন্য স্পনসরশিপ আবেদন করবে। এরপর ভিসাপ্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে নমিনেশনের আবেদন করতে হবে। এরপর আবেদন করতে হবে মূল ভিসার জন্য।

প্রতীকী ছবি। ছবি: ইন্টারনেট
প্রতীকী ছবি। ছবি: ইন্টারনেট

প্রথমে এই ভিসা কিছুটা সহজ হবে বলে মনে করা হলেও এখন দেখা যাচ্ছে সে রকম নয়। ভিসাটির আবেদন–প্রক্রিয়া দ্রুত হওয়া ও অনেক বেশি পেশা অন্তর্ভুক্ত ছাড়া তেমন কোনো সুবিধা থাকছে না। বরং পাঁচ বছরের অস্থায়ী ভিসা ও কঠোর নিয়ম মেনে তিন বছর দেশটির আঞ্চলিক এলাকায় কাজ ও বসবাস করার পর স্থায়ী ভিসার জন্য ভিসাধারীরা আবেদন করতে পারবেন।

তাই এখন যাঁদের ইংরেজি ভাষা দক্ষতায় কমপক্ষে আইইএলটিএস ৬ বা সমমানের রয়েছে, উপযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার স্কিল অ্যাসেসমেন্ট ও নিজ পেশায় অন্তত তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা এবং কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্পনসর করতে প্রস্তুত রয়েছে, তাদের ১৬ নভেম্বরের আগেই সাবক্লাস ১৮৭ ভিসায় আবেদন করাই ভালো হবে। এই ভিসার তথ্য অভিবাসন বিভাগের ওয়েবসাইটে <www.immi.homeaffairs.gov.au> হালনাগাদ করবে অভিবাসন বিভাগ।

আর সবকিছুর সারমর্ম হলো, কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্পনসর করলে সাবক্লাস ৪৯৪ ভিসাধারীরা প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছর অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করতে পারবেন। এরপর যদি সব শর্ত সঠিকভাবে পূরণ করেন, তাহলে তিন বছর পর স্থায়ী বসবাসের জন্য নতুন সাবক্লাস ১৯১ ভিসায় আবেদনের সুযোগ পাবেন।

কাউসার খান: অভিবাসন আইনজীবী, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।
ই–মেইল: <[email protected]>