Thank you for trying Sticky AMP!!

উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির মুখে থাকা ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন লোকজন। শনিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাদেরটেক গ্রামে

সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি

সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাদেরটেক গ্রামের ১৫টি বসতবাড়ি এবং গ্রামের পাশের করচার হাওরের বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে উজানের ঢল ওই এলাকায় থাকা গজারিয়া রাবার ড্যাম উপচে মানুষের ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়ে। পরে ড্যামের পাশের সড়কের দুটি অংশ ভেঙে যায়।

আজ শনিবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ৫০টি পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দিয়েছেন। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেছেন, করচার হাওরের ভেতরের অংশের ধান কাটা আগেই শেষ। এখন উঁচু অংশে কিছু ধান আছে। ঢলের পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় মানুষের ঘরবাড়ির ক্ষতি হলেও ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি।

Also Read: ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় উদ্বেগ হাওর বাঁচাও আন্দোলনের

ভাদেরটেক গ্রামটি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নে পড়েছে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরে আলেম জানান, সুনামগঞ্জে চার দিন ধরে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামায় এলাকার চলতি নদে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল রাতে ভাদেরটেক গ্রামের পাশের গজারিয়া রাবার ড্যাম উপচে প্রবল বেগে পানি ঢোকে মানুষের ঘরবাড়িতে। এতে ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও কিছু বাড়িঘর ঝুঁকিতে আছে।

আজ দুপুরে ইউএনও সাদি উর রহিম জাদিদ জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সফর উদ্দিনসহ তাঁরা এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ির মালিকদের তালিকা করেছেন। পরে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।

ভাদেরটেক গ্রামের বাসিন্দা আবদুস ছাত্তার বলেন, ‘কদিন থেকে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় পানি বাড়তে থাকে। গতকাল রাতে বাঁধ উপচে প্রথমে পানি ঢোকে। পরে ঢলের পানির তোড়ে পাশের সড়ক ভেঙে যায়। এরপর মানুষের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নেয়। আমার নিজের ঘরটিও রক্ষা করতে পারিনি।’

একই গ্রামের হারানো মোহন মিয়া বলেন, ‘একপলকে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। এখন বউ-বাচ্চা নিয়ে কোথায় থাকব, ভাবতে পারছি না।’ কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, এখন যেসব ধান আছে, সেগুলো উঁচু জমিতে। এগুলো দেরিতে লাগানো, পাকেও দেরিতে। এখন ঢল আসায় আধা পাকা ধানই কাটতে হচ্ছে। আরেক কৃষক লেবু মিয়া জানান, তাঁর ৬০ শতক জমির ধান ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে।

Also Read: ডুবছে হাওর, কাঁদছেন কৃষক

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, সুনামগঞ্জে এবার ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। ধান কাটা প্রায় শেষ। এখন হাওরের উঁচু অংশে ১২ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে এসব ধান কাটাও শেষ হয়ে যাবে।