Thank you for trying Sticky AMP!!

২১টি বাসে ১০৭৩ রোহিঙ্গার চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা

স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে বাসে করে চট্টগ্রাম যাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। আজ মঙ্গলবার

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরগুলো থেকে পঞ্চম দফায় (প্রথম অংশ) ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে ১ হাজার ৭৩ জন রোহিঙ্গা। পঞ্চম দফায় তিন হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের অতিরিক্ত সচিব শামসুদ্দৌজা নয়ন।

আজ মঙ্গলবার বেলা একটায় উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের পথে ১ হাজার ৭৩ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে ২১টি বাস। আজই আরও একটি দলের ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে এই রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবির থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আনা হয়।

Also Read: উখিয়া থেকে আরও ৬ শতাধিক রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের পথে

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বছর ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর ৩ হাজার ৪৪৬ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। এরপর নতুন বছরে ২৯ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপের প্রথম অংশে ১ হাজার ৭৭৮ জন এবং ৩০ জানুয়ারি দ্বিতীয় অংশে ১ হাজার ৪৬৩ জনকে ভাসানচরে নেওয়া হয়। এরপর চতুর্থ দফায় ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি দুই দলে ৩ হাজার ২০ জন পৌঁছায় সেখানে। এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় ৯ হাজার ৭০৭ জন রোহিঙ্গা বর্তমানে ভাসানচরে বসবাস শুরু করেছে। কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া রোহিঙ্গা শিবির থেকে স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদেরই শুধু ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে রোহিঙ্গা শিবির ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ের সামনে প্রয়োজনীয় মালামালসহ ভিড় করেছেন রোহিঙ্গারা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরে

এর আগে গত বছর মে মাসে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে উদ্ধার করার পর প্রথম ভাসানচর নিয়ে যায় সরকার।

জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গতকাল বিকেল থেকেই রোহিঙ্গারা সপরিবারে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আসতে থাকে। আজ দুপুরে বাসে তাঁরা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। রাতে তারা চট্টগ্রামের বিএএফ শাহীন কলেজের ট্রানজিট ক্যাম্পে পৌঁছাবে। সেখান থেকে পরদিন নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় তাদের ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

ভাসানচরে যেতে রোহিঙ্গা শিবির থেকে ছোট ছোট যানবাহনে উঠতে রোহিঙ্গাদের ভিড়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরে

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোয় বাস করছে। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

Also Read: তৃতীয় দফার দ্বিতীয় দিনে উখিয়া ছাড়ল ৯৪৪ রোহিঙ্গা

এরই সূত্র ধরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

Also Read: টেকনাফ থেকে তৃতীয় দফায় উখিয়ায় গেল আরও ৬৬৬ জন রোহিঙ্গা