উখিয়া থেকে আরও ৬ শতাধিক রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের পথে

চতুর্থ ধাপে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে চট্টগ্রাম হয়ে নোয়াখালীর ভাসানচরের নেওয়া হবে প্রায় ৩৬০০ রোহিঙ্গাকে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে তোলা
প্রথম আলো

নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের চতুর্থ দফার দ্বিতীয় দিনে আজ দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে ১৩টি বাসে করে ৬৪৭ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছেন। বিকেলে আরও হাজারের মতো রোহিঙ্গার চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার চতুর্থ দফার প্রথম দিনে ২ হাজার ১০ জন চট্টগ্রাম হয়ে আজ সোমবার দুপুরে ভাসানচরে পৌঁছেছেন।

আজ বেলা দেড়টার দিকে প্রথম অংশে ১৩টি বাসে করে ৬ শতাধিক রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। বিকেলে দ্বিতীয় অংশে আরও কিছু বাসে করে হাজারের মতো রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হবেন। এ তথ্য মুঠোফোনে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) কমান্ডিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম তারিক। তিনি বলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চতুর্থ দফার দ্বিতীয় দিনে (প্রথম অংশে) ১৩টি বাসে প্রায় সাড়ে ছয় শ রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে রওনা হয়েছেন।

চতুর্থ দফায় স্থানান্তরের জন্য প্রায় ৪ হাজার জনকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ জনকে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৮০৪ জন, ২৯ জানুয়ারি তৃতীয় দফার প্রথম দিন ১ হাজার ৭৭৮ জন ও ৩০ জানুয়ারি (তৃতীয় দফার দ্বিতীয় দিন) ১ হাজার ৪৬৪ জন এবং আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ দফার প্রথম দিনের ২ হাজার ১০ জনকে এ পর্যন্ত ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ৮ হাজার ৬৯৮ জনকে ভাসানচরে আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তর করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এই লক্ষ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া রোহিঙ্গা শিবির থেকে স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক এমন রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

এর আগে ২০২০ সালের মে মাসে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে উদ্ধার করার পর ভাসানচরে নিয়ে যায় সরকার।

কক্সবাজারের ক্যাম্প ছেড়ে নোয়াখালীর ভাসানচর যাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ। গতকাল রোববার সকালে
প্রথম আলো

স্থানান্তর প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সরকারি একটি সংস্থার কর্মকর্তা বলছেন, স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক এমন প্রায় ২৩ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্য থেকে চতুর্থ দফায় স্থানান্তরের জন্য প্রায় ৪ হাজার জনকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ জনকে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এই রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন শিবির থেকে ট্রাক ও বাসে তুলে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে জড়ো করা হচ্ছে।

নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের (প্রকল্প-৩) উপপরিচালক কমান্ডার মো. আনোয়ারুল কবির আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, চতুর্থ দফার (প্রথম দিনে) বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজ করে ২ হাজার ১০ জন রোহিঙ্গা আজ দুপুরে ভাসানচরে পৌঁছেছেন। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তাঁদের নিজ নিজ ঘর বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে।

আরও পড়ুন