টেকনাফ থেকে তৃতীয় দফায় উখিয়ায় গেল আরও ৬৬৬ জন রোহিঙ্গা

রোহিঙ্গা ক্যাম্প
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর ২৩ নম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির থেকে আজ বুধবার আরও ১৫০টি পরিবারের ৬৬৬ জন রোহিঙ্গাকে উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর আগে প্রথম দফায় ১৩ জানুয়ারি ১৪৪টি পরিবারের ৬৭০ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ১৪ জানুয়ারি ১৪১টি পরিবারের ৬৬৭ জন রোহিঙ্গাকে নেওয়া হয়েছে উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী শরণার্থীশিবিরে।

এ নিয়ে মোট ৪৩৫টি পরিবারের ২ হাজার ৩ জন রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী শরণার্থীশিবিরে স্থানান্তর করা হলো। বিষয়টি আজ বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও বাহারছড়ার শামলাপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ (সিনিয়র সহকারী সচিব) পুলক কান্তি চক্রবর্তী। তিনি বলেন, আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১৮টি ট্রাকে রোহিঙ্গাদের মালামাল ও ১২টি বাসে রোহিঙ্গাদের উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী শিবিরে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ শিবিরে বসবাসরত সব রোহিঙ্গাকে উখিয়ার বিভিন্ন শিবিরে স্থানান্তর করা হবে। এ শিবিরে ১২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছিল। স্থানান্তর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

বাহারছড়া ইউপির চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন বলেন, টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর ২৩ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরটির অবস্থান মেরিন ড্রাইভ ও সমুদ্রসৈকতসংলগ্ন এলাকায়। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং পর্যটন এলাকা হিসেবে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে শিবিরটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কারণেই বাহারছড়ার শামলাপুর ক্যাম্পটি খালি করে রোহিঙ্গাদের উখিয়াসহ অন্য ক্যাম্পে নেওয়া হচ্ছে।

এ নিয়ে মোট ৪৩৫টি পরিবারের ২ হাজার ৩ জন রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী শরণার্থীশিবিরে স্থানান্তর করা হলো।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানায়, সরকারের নির্দেশনায় শামলাপুরের এ শিবির খালি করে রোহিঙ্গাদের উখিয়ার বিভিন্ন শিবিরে নেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩ দফায় মোট ৪৩৫টি পরিবারের ২ হাজার ৩ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাহারছড়ার শামলাপুর ২৩ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের বিভিন্ন ব্লক থেকে উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী শিবিরে যেতে ইচ্ছুক এমন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে স্থানান্তর করা হয়েছে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের মাধ্যমে এ স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

নিজ ইচ্ছায় স্থানান্তর হওয়া রোহিঙ্গা নারী হুমায়রা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর তিন ছেলেসহ স্বামী-স্ত্রী পাঁচজন মিয়ানমারের অং দং এলাকা থেকে নৌকায় করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা। এরপর শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাস করে আসছিলেন। এর মধ্যে আরও দুই সন্তানের জন্ম হয়েছে। বর্তমানে পরিবারের সদস্যসংখ্যা সাত। উন্নত বসবাসের জন্য উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে চলে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন

শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরের দলনেতা (মাঝি) আবুল কালাম বলেন, এ শিবির থেকে উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে পর্যায়ক্রমে সব রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হবে। এ শিবিরের রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে বাহারছড়ার পাহাড়ের পাদদেশে পালিয়ে থাকছে। পাশাপাশি বিভিন্ন নৌকায় শ্রমিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন। এতে করে এলাকায় অপরাধ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই রোহিঙ্গাদের শিবিরের মধ্যে রাখতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।