Thank you for trying Sticky AMP!!

দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় মাওলানা সাদকে আনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে: ধর্মমন্ত্রী

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক। বৃহস্পতিবার দুপুরে ইজতেমা মাঠের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কক্ষে

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে আগামীকাল শুক্রবার শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এ পর্বে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে আনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইজতেমা মাঠ পরিদর্শন করতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

ফরিদুল হক খান বলেন, ‘মাওলানা সাদ সাহেবকে আনার জন্য তাঁর পক্ষের লোকজন কাজ করছেন। সরকারের সঙ্গেও তাঁদের কথা চলছে। আমরাও আলোচনা করছি। সমঝোতার মধ্যে হয়তো তাঁকে (মাওলানা সাদ) আনা সম্ভব হতে পারে। আমরা সেই চেষ্টাটাই করছি।’

Also Read: বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদের আসার সুযোগ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের আয়োজনে ১৯৬৩ সাল থেকে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০১৮ সালে তাবলিগের বর্তমান আমির ভারতের দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে আমির মানা না-মানাকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত। ওই বছর ইজতেমায় অংশ নিতে বাংলাদেশে এসে বিরোধের মুখে ফিরে যান সাদ কান্ধলভী। বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তুরাগ ময়দানে সংঘর্ষে নিহত হন এক মুসল্লি। এরপর ২০১৯ সাল থেকে দুই পক্ষ আলাদাভাবে ইজতেমা শুরু করে।

দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় অংশ নিতে টঙ্গীর তুরাগতীরে মুসল্লিদের ঢল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ইজতেমা মাঠে

সেই বিরোধের জেরে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। গত রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে তাবলিগের প্রথম পক্ষ বা বাংলাদেশি মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীদের ইজতেমা। আগামীকাল শুরু হবে দ্বিতীয় পক্ষ বা মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের ইজতেমা। তবে ২০১৮ সালে বিরোধের মুখে ফিরে যাওয়ার পর আর ইজতেমায় অংশ নেননি সাদ কান্ধলভী। এ নিয়ে বারবার সাদ অনুসারীদের পক্ষ থেকে তাঁকে আনার দাবি জানালেও কোনো সমাধান মেলেনি। এর মধ্যে গতকাল বুধবার সকালে সাদ কান্ধলভীকে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ইজতেমা মাঠের মূল ফটকে সাধারণ মুসল্লি পরিষদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

Also Read: ‘আমাদের জুবায়েরপন্থী বলবেন না’

এ ব্যাপারে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘মাওলানা সাদের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হ্যাঁ বা না নেই। তবে এটা করতে গেলে সরকারের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে, কিছু নিয়ম আছে, সে নিয়মের মধ্যেই সবকিছু করতে হয়। এখানে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষে যাঁরা আছেন, কোনো কারণে যাতে বিশৃঙ্খলা না হয় বা কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেদিকে তাঁদের দায়িত্ব থাকে। তারপরও আমি বলব, পরশু রাতে মাওলানা আশরাফ মাদানী সাহেব এসেছিলেন। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা আমরা রেকর্ড করেছি। তাঁর বক্তব্য চুলচেরা বিশ্লেষণ করে আলোচনার মাধ্যমে দেখব, কিছু করা যায় কি না।’

দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় অংশ নিতে বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানে করে মুসল্লিরা নামছেন ইজতেমা মাঠের চারপাশে। বৃহস্পতিবার দুপুরে

দুই পক্ষের বিরোধ নিরসনের বিষয়ে ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের মধ্যকার যে বিরোধ, তা নিরসনের আপ্রাণ চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে আজকেও মিটিং হচ্ছে। মিটিংটা হয়ে গেলে আমরা দুই পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ করব, তাদের নিয়ে বসব। আল্লাহপাকের হুকুম হলে আবার দুই পক্ষ মিলেও যেতে পারে।’

Also Read: বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা

মন্ত্রী ইজতেমার মাঠে প্রবেশ করলে তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মামুনুল করিম। এ সময় দ্বিতীয় পক্ষের ইজতেমা আয়োজকদের মুরব্বিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে জেলা প্রশাসকের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফরিদুল খান।

এদিকে বেলা একটার দিকে দেখা যায়, দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় অংশ নিতে এরই মধ্যে ইজতেমা মাঠে জড়ো হয়েছেন হাজারো মুসল্লি। মাঠ প্রায় ভরে গেছে। দলে দলে মুসল্লিরা আসছেন ইজতেমা মাঠের দিকে। বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানে করে মুসল্লিরা নামছেন ইজতেমা মাঠের চারপাশে। পরে গাট্টিবোঁচকা নিয়ে দলে দলে প্রবেশ করছেন ইজতেমা মাঠে।

Also Read: ইজতেমা মাঠ পূর্ণ, সড়ক-মহাসড়কে জুমার নামাজ পড়লেন মুসল্লিরা