‘আমাদের জুবায়েরপন্থী বলবেন না’

বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কার্যক্রম বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন প্রথম দফার ইজতেমা আয়োজকদের মুখপাত্র মুফতি আমানুল হক
ছবি: প্রথম আলো

তাবলিগ জামাতের মধ্যকার বিরোধের কারণে গত কয়েক বছর ধরে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। এক পক্ষ ঢাকার কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা জুবায়ের ও অপর পক্ষ ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এবার বিষয়টিতে আপত্তি জানিয়েছেন মাওলানা জুবায়েরপন্থীরা। সংবাদ সম্মেলন ডেকে তাঁরা আহ্বান জানিয়েছেন, তাঁদের যেন আর মাওলানা জুবায়েরপন্থী বা জুবায়ের অনুসারী না বলা হয়।

শুক্রবার বিকেলে ইজতেমা মাঠের বিদেশি কামরা সংলগ্ন জেলা প্রশাসকের কন্ট্রোলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন জুবায়েরপন্থীদের ইজতেমা আয়োজকদের মুখপাত্র মুফতি আমানুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামসহ ইজতেমা আয়োজন কমিটির অন্য সদস্যরা।

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘তাঁদের (সাদ অনুসারী) ও আমাদের বিরোধ বা বিভক্তির একটি বড় কারণ, তাঁরা (সাদ অনুসারী) একজন ব্যক্তিকে মেনে চলেন। আর আমরা একটা জামাতকে মেনে চলি, যে জামাতের সবাই মিলে পরামর্শ করেন। কিন্তু আমাদের বলা হয় জুবায়েরপন্থী বা অনুসারী। আমরা এর আগে বিভিন্নভাবে সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ করেছিলাম, যেন আমাদের কোনো পন্থী বা অনুসারী না বলে শুরায়ে নেজাম বলা হয়। কারণ আগামীকাল যদি জুবায়ের সাহেব ইন্তেকাল হয়েও যান, তবুও এ জামাত থেকে যাবে। আমরা জুবায়ের সাহেবকে ফলো করি না, বরং জুবায়ের সাহেবসহ আমরা সবাই পরামর্শ করে একটা জামাত ফলো করি। এ কারণে আমাদের জুবায়েরপন্থী না বলা হোক।’

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধে এবারও ইজতেমা হচ্ছে আলাদাভাবে। প্রথম পর্বে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। পাকিস্তান থেকে আসা মাওলানা আহমদ বাটলার আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুক্রবার ফজরের নামাজের পর শুরু হয়েছে এ পর্ব। রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ পর্বের ইজতেমা। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা হবে ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি। এ পর্বে নেতৃত্ব দেবেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।

সারা বিশ্বেই তাবলিগ জামাতের বিভক্তি দেখা দিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মুফতি আমানুল হক। এ বিষয়ে মাওলানা সাদ অনুসারীদের ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি (মাওলানা সাদ) সারা বিশ্বের মুরব্বিদের পরামর্শের বাইরে গিয়ে কিছু কাজ করছেন। এর মধ্যে একটি, তিনি নিজেকে আমির দাবি করেছেন। দাওয়াতে তাবলিগে নিজের ইচ্ছাতে আমির হওয়া যায় না। সুরারা মিলে আমির নির্বাচন করেন। কিন্তু তিনি সেটা না করেই নিজেকে আমির দাবি করেছেন। তা ছাড়া তিনি এমন কিছু বিতর্কিত বিষয় উত্থাপন করছেন, যার সঙ্গে আলেম–ওলামারা এক হতে পারেননি। তাই বিরোধ তৈরি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে জেলা প্রশাসক আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মূলত নিজেদের জুবায়েরপন্থী বা অনুসারী না বলার আহ্বান জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল প্রথম পক্ষের আয়োজক কমিটি। আমরা তাদের সবরকম সহযোগিতা করেছি।’