Thank you for trying Sticky AMP!!

থেমে নেই প্রচার-প্রচারণা, নোটিশ দিয়েই ইসির দায় শেষ

সিলেটে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ওই সভায় তিনি নৌকা প্রতীকে তাঁদের সমর্থন চান। গত বুধবার দুপুরে

সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দের আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে নোটিশ পাওয়ার পরও মঙ্গলবার একাধিক সভায় অংশ নিয়ে ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ইসিকে আরও কঠোর ও তৎপর হতে হবে। কেবল পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেই প্রার্থী বা যাঁরা আচরণবিধি ভাঙছেন, তাঁদের হাতে নোটিশ ধরিয়ে দিচ্ছে ইসি। ইসিকে নিজ উদ্যোগে তৎপর হয়ে প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে শাস্তি দিতে হবে। তবেই দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।

Also Read: সিলেটে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ২ মেয়র প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে মেয়র পদে ৭, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৮৫ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২১ জুন ইভিএমে ভোট হবে। গত বুধবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। প্রতীক বরাদ্দ হবে আগামিকাল শুক্রবার। এরপরই প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা শুরু করতে পারবেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এ পর্যন্ত দুজন মেয়র প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে মঙ্গলবার তৎপর ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। তাঁরা একাধিক জায়গায় গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সেসব কর্মসূচিতে তাঁরা সরাসরি নিজেদের প্রতীকে ভোট চান। আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের আগে (শুক্রবার) তাঁরা কোনোভাবেই তা করতে পারেন না। এ ছাড়া মঙ্গলবার আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে গতকাল গণসংযোগে বের হননি জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম (বাবুল)।

Also Read: আচরণবিধি লঙ্ঘন চলছেই, বন্ধে নেই পদক্ষেপ

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মতবিনিময় করেছেন। নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকার একটা রেস্তোরাঁ মিলনায়তনে এ সভা হয়। সভায় ১৪ দলের নেতারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের সঞ্চালনে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। সভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতাদের পরামর্শ ও সমর্থন নিয়ে সিলেট নগরকে আমি একটি আধুনিক ও অগ্রসর নগরে পরিণত করতে চাই।’

পরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার মতবিনিময় সভা, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় এবং জালালাবাদ ইমাম ও মুয়াজ্জিন কল্যাণ পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময়সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেন। সেসব কর্মসূচিতেও তিনি নৌকা প্রতীকে তাঁদের ভোট চান।

Also Read: নির্বাচনী বিধিকে প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন

সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের আগেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে লিফলেট বিতরণ করেন এবং ভোট চান। বুধবার সকালে নগরের শ্যামলী আবাসিক এলাকায়

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গত বুধবার সকাল ১০টা থেকে নগরের ৩২ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা, দোকান ও ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি হাতপাখা প্রতীক-সংবলিত তাঁর দলীয় লিফলেট বিতরণ করে ভোট চান।

এদিকে দুই মেয়র প্রার্থী ছাড়াও নগরের ৪২টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরা পাড়া-মহল্লায় ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দোয়া ও আশীর্বাদ চেয়ে ভোট চাইছেন। বিজয়ী হলে এলাকার উন্নয়নে কী কী করবেন, এর ফিরিস্তিও তাঁরা দিচ্ছেন। কেউ কেউ উঠান বৈঠক ও মতবিনিময় সভা করেও ভোট চাইছেন।

Also Read: প্রতিদিনই আচরণবিধি ভেঙে গণসংযোগ, আওয়ামী লীগের দখলে নির্বাচনী মাঠ

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা শুরু হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধাবোধ করা হবে না।