Thank you for trying Sticky AMP!!

‘কোনো রাজনীতিক নেই, যাঁর কাছে জনগণের ভাবনার কথা বলা যাবে’

বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে লাঠিটিলাসহ সিলেটের বন-টিলা–হাওর রক্ষায় ‘নাগরিক ভাবনা’ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল। বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের মিরাবাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁয়

দেশে বর্তমানে প্রকৃত রাজনীতিক খুঁজে পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্ট ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল।

তিনি বলেছেন, ‘রাজনীতিকেরা নীতিনির্ধারণ করেন। কিন্তু কোনো রাজনীতিক নেই, যাঁর কাছে গেলে জনগণের ভাবনার কথা বলা যাবে এবং সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। তাঁদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। যদি রাজনীতিকেরা নির্বাচনকে নির্বাচন মনে করেন, তাহলে নির্বাচনের আগে হয়তো আমাদের একটা সুযোগ থাকলেও থাকতে পারে। সে সময় রাজনীতিকেরা ভোট চাইলে জনগণের ভাবনার বিষয়টি জানাতে হবে।’

Also Read: অপরিকল্পিত বিনিয়োগ ঝুঁকি তৈরি করছে দেশের পর্যটনশিল্পে

বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরের মিরাবাজার এলাকার একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত ‘নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। ‘হাওর–টিলা-বন রক্ষা করে পর্যটন’ বিষয়কে সামনে রেখে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বাপা এবং পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট সিলেট এ সভার আয়োজন করে।

সুলতানা কামাল বলেন, ‘দেশে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, যা পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। যাতে আমাদের আহত, বিরক্ত হতে হচ্ছে। আমরা যে প্রাকৃতিক পর্যটনের কথা বলছি, সেগুলোর সঙ্গে যার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কোনো মিল নেই। বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ-প্রতিবেশ। এর থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের নিজেদের জোর বাড়াতে হবে। জনগণের পক্ষ থেকে একটি কার্যপত্র তৈরি করতে হবে। যাতে আমরা রাজনীতিক কিংবা নীতিনির্ধারকদের কাছে দফায় দফায় দাবি উপস্থাপন করতে পারি। রাজনীতিকদের সদিচ্ছা আদায় করে নিতে হবে।’

Also Read: পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সুপরিকল্পনার অভাবই বড় বাঁধা

সভায় পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি, স্থপতি ও নগর–পরিকল্পনাবিদ জেরিনা হোসেনের সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচকের বক্তব্য দেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরিফ জামিল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মোহাম্মদ জহিরুল হক।

বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, বাপা সিলেটের সভাপতি জামিল আহমদ চৌধুরী, সহসভাপতি নাজিয়া চৌধুরী এবং উদীচী সিলেটের সভাপতি এনায়েত হোসেন মানিক।

Also Read: পরিবেশ ধ্বংস করে পর্যটন নয়

সভায় পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠক ও নানা শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য দেন। এ সময় বক্তারা আলোচনায় পরিবেশবিনাশী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, প্রকৃতি কেন্দ্র করে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে ওঠে। কিন্তু সেটি পরবর্তী সময়ে পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে কোনো ব্যবস্থাপনা থাকে না। দেশের কোথায় কোন পর্যটনকেন্দ্রে কতজন যাওয়া উচিত, সেটিরও কোনো দিকনির্দেশনা নেই। যদি উন্নত দেশগুলোতে এর নির্দিষ্ট একটি নির্দেশনা আছে। ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভাগাড় তৈরি করা হয়। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে যাতে পলিথিন একেবারেই ব্যবহার করা না হয়, সে পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য সরকারিভাবে সদিচ্ছার প্রয়োজন।

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে শরিফ জামিল বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের নামে আমরা পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংস করে ফেলছি। আমরা সংরক্ষণের নামে নষ্ট করছি। হাওরের মধ্যে এখন জিপিএস নিয়ে চলতে হচ্ছে। কারণ, এখন হাওর আর আগের হাওর নেই। সেখানে ইট-পাথরের কাঠামো হচ্ছে। সংরক্ষিত বন, হাওর আমরা নষ্ট করে ফেলছি। এর থেকে উত্তরণ প্রয়োজন।’

Also Read: সিলেটে 'ফটককৌশলে' সাবাড় টিলা