Thank you for trying Sticky AMP!!

খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান

উন্নয়নকাজের জট ছাড়াতে পারলে মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা কমবে

কলেজজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মো. রশীদুজ্জামান। দুইবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও একবার পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। খুলনা-৬ আসন (কয়রা-পাইকগাছা) থেকে এবার প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। পাইকগাছায় পরিচিতমুখ হলেও কয়রা উপজেলায় ছিলেন একেবারেই অপরিচিত। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আলোচনাতেও ছিলেন না। কিন্তু তারপরও দলীয়প্রধান তাঁর হাতেই নৌকা তুলে দেন। নির্বাচনসহ এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন মো. রশীদুজ্জামান।

প্রশ্ন

খুলনা-৬ থেকে মোট ১৬ জন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে কি আশাবাদী ছিলেন?

রশীদুজ্জামান: দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্যই দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলাম। খুব বেশি আলোচনায় না থাকলেও মনে মনে বিশ্বাস ছিল, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বিমুখ করবেন না। বাস্তবে তা-ই হয়েছে। তিনি আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবেসে নৌকায় ভোট দিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে সভানেত্রী আমার ওপর যে আস্থা রেখেছিলেন, তা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।

প্রশ্ন

কী কারণে আওয়ামী লীগ থেকে আপনাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন?

রশীদুজ্জামান: ১৯৭৮ সালে কলেজে পড়ার সময় থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। দুইবার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও একবার উপজেলার চেয়ারম্যান হয়েছি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকে বিভিন্ন আন্দোলন করেছি। এর মধ্যে লোনাপানির ঘেরবিরোধী আন্দোলন ছিল অন্যতম। এ ছাড়া আমার নামে ৩৭টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ বেশি ছিল। এসব তথ্য নিশ্চয় দলীয়প্রধান জানতেন। তা ছাড়া তিনি হয়তো চেয়েছিলেন উপকূলীয় এলাকায় লোনা কাদা মেখে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পারবে, এমন কাউকে মনোনয়ন দিতে। সে কারণেই হয়তো তিনি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন।

Also Read: কুড়িগ্রামে কাজের মঙ্গা দূর করতে কর্মক্ষেত্র তৈরি করব

প্রশ্ন

ভোটের প্রচারণায় কোন বিষয়টিকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছিলেন?

রশীদুজ্জামান: জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রচারণাই আমার প্রচারণা। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা, এলাকার উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি, প্রধানমন্ত্রীর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন, সেগুলো সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান করেছি। এবারের নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, সেটি করতে গিয়ে ইউনিয়নে ইউনিয়নে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ আমার ওপর আস্থা রেখে আমাকে ভোট দিয়েছেন। এখন শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়ন করতে অনেক খাটতে হবে।

প্রশ্ন

এলাকার উন্নয়নে কীভাবে কাজ করতে চান? কীভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করছেন?

রশীদুজ্জামান: প্রধানমন্ত্রী এবার আমাদের এলাকায় অনেক বরাদ্দ দিয়েছেন। দুই উপজেলায় অনেক কাজ হয়েছে। তবে অধিকাংশ কাজ অসমাপ্ত। প্রথমে সেই অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চাই। এর মধ্যে কয়রা উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় অর্ধেকই নেই। কৃষি ও ব্যবসার অবস্থাও ভালো নেই। প্রকৃতিগতভাবেও উপজেলাটি খুব বেশি ভালো অবস্থানে নেই। বিভিন্ন জায়গায় বেড়িবাঁধ অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। সড়কগুলোও খারাপ অবস্থায় পড়ে আছে। যেসব ঠিকাদার ওই এলাকায় কাজ করতে গিয়েছেন, তাঁরা সড়ক খুঁড়ে কাজ ফেলে রেখে চলে গেছেন। মোটকথা সেখানে বরাদ্দ আছে, কিন্তু কাজ নেই। আর এগুলো বেশি হয়েছে আমাদের সাবেক এমপির (সংসদ সদস্য) কিনে নেওয়া কাজগুলোতে। তিনি উন্নয়নকাজগুলো কুক্ষিগত করে রেখেছেন, কিন্তু কাজ করেননি। এসব জট আগে ছাড়ানো দরকার। এগুলো ছাড়াতে পারলে মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হবে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত ও সড়ক উন্নয়নের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হবে।

Also Read: বড় ঠিকাদারি সব তাঁর কবজায়

প্রশ্ন

সাবেক সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামানের গত পাঁচ বছরের কাজকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

রশীদুজ্জামান: আমি কোনো মূল্যায়নের মধ্যে যাব না। তিনিও আমাদের দলের লোক। এ কারণে তাঁর সম্পর্কে কিছু বলব না। সাধারণ মানুষের কাছে জানতে চাইলে তা পাওয়া যাবে, আমি এর উত্তর দেব না।

প্রশ্ন

আগের সংসদ সদস্যের অসমাপ্ত কাজগুলো কীভাবে শেষ করতে চান?

রশীদুজ্জামান: দুই উপজেলার ইউএনওদের (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) বলেছি, যেসব ঠিকাদার কাজ করছেন না, তাঁদের নোটিশ করতে, কাজের সময় বেঁধে দিতে। আর তা না হলে ঠিকাদারেরা যেন কাজ স্যারেন্ডার করে দেন।

Also Read: পাইকগাছায় সংসদ সদস্যের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ বন্ধ করে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

প্রশ্ন

সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আপনিও ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণে জড়িত হবেন কি না?

রশীদুজ্জামান: আমি ঠিকাদার নই, এ কারণে নিজের এলাকায় ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করার প্রশ্নও ওঠে না। সরকারি নিয়মকানুন অনুযায়ী যিনি টেন্ডার (দরপত্র) পাবেন, তিনি কাজ করবেন। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তদারক করে কাজটি তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

Also Read: বিদ্রোহী হয়ে জামানত হারানো মো. রশীদুজ্জামান নৌকার প্রার্থী