Thank you for trying Sticky AMP!!

মেয়র-কাউন্সিলরের অভিষেক অনুষ্ঠানে উঠল ‘জলমগ্ন’ রাজশাহীর প্রসঙ্গ

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র–কাউন্সিলরদের অভিষেক অনুষ্ঠানে মেয়রের মেয়ে আনিকা ফারিহা জামান নগরের জলাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলেন। রোববার দুপুরে

ভারী বৃষ্টিতে সম্প্রতি রাজশাহী মহানগরের বেশ কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। জলমগ্ন শহর নিয়ে তখন নগরবাসীর অনেকে নানা প্রশ্ন তুলেছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে এ নিয়ে নানা মন্তব্য করেন। আজ রোববার দুপুরে নগর ভবনের পশ্চিম পাশে মেয়র ও কাউন্সিলরদের অভিষেক অনুষ্ঠানে আবার সেই প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে দুজন কাউন্সিলর এবং মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়ে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য আনিকা ফারিহা জামান জলমগ্ন শহর নিয়ে কথা বলেন। তাঁদের ভাষ্য, এক দিনের বৃষ্টিতে প্রাকৃতিক কারণে কিছু এলাকায় পানি জমেছিল। সেই পানি এক দিনের বেশি থাকেনি; কিন্তু মানুষ আবেগে এটি নিয়ে নানা কথা বলেছেন।

Also Read: সুন্দর শহরখ্যাত রাজশাহী যেসব কারণে বৃষ্টিতে জলমগ্ন হলো

৪ অক্টোবর রাত থেকে পরদিন বিকেল পর্যন্ত রাজশাহীতে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়। টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে রাজশাহী শহর। আবহাওয়া কার্যালয়ের তথ্যমতে, ১০ বছরের মধ্যে রাজশাহীতে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়। বৃষ্টিতে শহরের রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়ে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর নির্বাচনী পরীক্ষাও এক দিনের জন্য স্থগিত করা হয়। দুর্ভোগের মধ্যে নগরের পাড়া-মহল্লায় লোকজনকে জাল নিয়ে মাছ ধরতেও দেখা যায়।

সিটি কর্তৃপক্ষ তখন বলেছিল, যত্রতত্র বাড়ি নির্মাণের কারণে ড্রেনের ওপর বালু ফেলে রাখা, ড্রেনগুলো চার বছর ধরে পরিষ্কার না করা এবং পানি নির্গমনের খালে বাঁধ দিয়ে পাট জাগ দেওয়ায় শহর জলমগ্ন হয়ে পড়ে।

Also Read: রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত, জলমগ্ন রাস্তায় মাছ শিকার

অভিষেক অনুষ্ঠানে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আবদুল মমিন বলেন, ‘আমাদের একটা বিষয়ে খুব কষ্ট লেগেছে। এত উন্নয়ন করার পরও আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি এক দিন হয়েছিল। এক দিন শুধু পানি জমে ছিল। ফেসবুকে দেখা গেছে, অনেকেই তা নিয়ে আমাদের কটূক্তি করতেও ছাড়েননি।’ তিনি বলেন, ‘যদি ৭ দিন, ১০ দিন থাকত, তাহলে আপনারা বলতে পারতেন মেয়র কী উন্নয়ন করেছেন। এক দিন পানি জমে ছিল, এটা নিয়ে আমাদের কটূক্তি শুনতে হয়েছে।’

১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে কয়েক দিন আগে জনদুর্ভোগ দেখা দিলে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ; মানুষের পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। উন্নয়নের জোয়ার চলছে রাজশাহীতে। অনেকেই আইন না মেনে রাস্তার মধ্যে ইট, বালু ও মাটি রেখেছেন; ড্রেনের মধ্যে রেখেছেন। বৃষ্টিতে তা ধুয়ে ড্রেনে পড়ে গিয়ে ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই বাসাবাড়ির ময়লা সিটি করপোরেশনের ভ্যানে না দিয়ে ড্রেনে বা রাস্তায় ফেলছে। নাগরিক দায়িত্ব এভাবে অবহেলা না করলে রাজশাহী বাসযোগ্য করা যাবে।’

মেয়রের মেয়ে আনিকা ফারিহা জামান বলেন, ‘এক দিনের বৃষ্টিতে রাজশাহীর মানুষ এত বেশি ইমোশনাল হয়ে গেল, তারা জাল দিয়ে মাছ ধরা শুরু করেছে, নৌকা নামিয়ে দিয়েছে, নৌকায় করে চলাচল শুরু করে দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে তো আমরা পারব না। আমরা হয়তো রাশিয়া, ইউএসএ—এসব জায়গার চিত্রগুলো দেখি না। আমরা হয়তো দেখি না রংপুর, কুড়িগ্রাম, সিলেটে যখন কী পরিমাণ পানি আসে; তারা বানের জলে ভেসে কী কষ্ট করে। এই রাজশাহীতে এক দিনের মধ্যে কিন্তু সেই পানি নেমে গেছে।’