Thank you for trying Sticky AMP!!

সবার জন্য বিন্যাস ও সমাবেশ (পর্ব–৩)

বছরজুড়ে গণিত অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি

গত পর্বের সমস্যাটা নিয়ে আরও একটু চিন্তা করে দেখি। এবার ভাবুন তো, আমরা যেহেতু ক থেকে গ–তে মোট n×m ভাবে আসতে পারি, তাহলে গ থেকে ঘ–তে যাওয়ার জন্য আবার k–সংখ্যক রাস্তা থাকলে আপনি ক থেকে কয়ভাবে ঘ–তে যেতে পারবেন? একটু জটিল হয়ে গেল, তাই না? না, ব্যাপারটা মোটেও জটিল হয়নি। আপনি কিন্তু ইতিমধ্যে জানেনই যে ক থেকে গ–তে আসা যায় n×m ভাবে। এবার যেহেতু এই n×m সংখ্যক রাস্তার প্রতিটির জন্য গ থেকে ঘ–তে যাওয়ার জন্য k সংখ্যক রাস্তা আছে, তাহলে মোট (n×m)×k ভাবে আপনি ক থেকে ঘ–তে যেতে পারবেন।

এখানে দেখুন তো, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে আমরা আসলে কী করেছি? যতগুলো রাস্তা আছে, সেগুলোকে গুণ করেছি, তা–ই না? হ্যাঁ, এটাই হচ্ছে বিন্যাসের গুণের নিয়ম। এখানে আরেকটি জিনিস খেয়াল করুন, আপনি যখন ক থেকে ঘ–তে আসছেন, তখন কিন্তু খ ও গ হয়ে আসতে হয়েছে। কোনোটি বাদ দিয়ে আসা সম্ভব নয়। বিন্যাসের গুণের নিয়মটা অনেকটা এ রকমই, কোনো একটি বিশেষ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য যদি মাঝখানে কিছু কাজ করতে হয়, যাদের জন্য অপশন আছে যথাক্রমে n1, n2, n3, n4,… nk এবং এদের কোনোটি বাদ দিয়ে দিলে কাজটি আর সম্পূর্ণ হবে না। সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কাজটি মোট  n1×n2×n3×… ×nk ভাবে করা যাবে।

এবার আসা যাক আরেকটি সমস্যা নিয়ে।

এখানে মনে করুন, আপনার বাসা হচ্ছে খ জায়গায়। আপনার বার্গার খেতে ইচ্ছা করছে আর বার্গার পাওয়া যায় ক ও গ জায়গায়। খ থেকে ক–তে যাওয়ার জন্য ৩টি রাস্তা আছে, আবার খ থেকে গ–তে যাওয়ার জন্য ২টি রাস্তা আছে। তাহলে বলুন তো, আপনি কতগুলো ভিন্ন রাস্তা দিয়ে বার্গার খেতে যেতে পারবেন? এবারও একটু নিজে চিন্তা করে নিন আগে, তারপর সমাধান দেখুন।

এখানে আপনার টার্গেট হলো বার্গার খাওয়া আর তার জন্য আপনি ক অথবা গ যেকোনো জায়গায় গেলেই কিন্তু হচ্ছে। যেহেতু খ থেকে ক–তে যাওয়া যায় তিনটি উপায়ে, আর গ–তে যাওয়া যায় দুটি উপায়ে, তাহলে আপনি মোট ৩+২=৫টি ভিন্ন রাস্তা দিয়ে গিয়ে বার্গার খেতে পারবেন। এখানে দেখুন, আমাদের কাছের উপায়গুলো কিন্তু যোগ হচ্ছে। কেন এখানে যোগ হচ্ছে আর আগের সমস্যাটিতে গুণ হয়েছিল, কিছু কি অনুমান করতে পারলেন? না পারলেও সমস্যা নেই, আমি বলে দিচ্ছি।

দেখুন এই সমস্যায় সব কটি কাজই যে করতে হবে, এমনটা কিন্তু নয়।এখানে যেকোনো একটা করলেই হচ্ছে। যেহেতু আপনার কাজ বার্গার খাওয়া আর এই বার্গার খাওয়ার জন্য যেকোনোটায় গেলেই কিন্তু হচ্ছে, ক ও গ দুটিতেই যেতে হবে না। আর আগের সমস্যায় আপনাকে যখন ক থেকে গ–তে যেতে হয়েছিল, তখন কিন্তু অবশ্যই খ হয়ে যেতে হয়েছিল অর্থাৎ ওই সমস্যায় সব কটি জায়গা হয়েই যেতে হয়েছিল। তাই ওখানে গুণ হয়েছিল আর বার্গারের সমস্যাটিতে যোগ হয়েছে। আশা করি, আপনারা মূল পার্থক্যটি বুঝতে পেরেছেন যে কখন উপায়গুলো যোগ হয় আর কখন গুণ হয়। এখন থেকে যোগ আর গুণ নিয়ে আর মনে হয় ঝামেলায় পড়তে হবে না। পরবর্তী পর্বে বিন্যাস নিয়ে আরও বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব, দেখব কখন যোগ আর গুণ দুটোই হবে। তত দিন পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

Also Read: সবার জন্য বিন্যাস ও সমাবেশ (পর্ব–২)

Also Read: শুধু বিজ্ঞানের ছাত্রদের জন্য নাকি সবার জন্যই দরকারি?