Thank you for trying Sticky AMP!!

গাজী আশরাফ হোসেন

প্রত্যাশার বাইরে এমন জয়

ইংল্যান্ডের সফর ঘিরে প্রত্যাশা থেকে থাকলে সেটি ছিল ওয়ানডেতে। টি-টোয়েন্টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কতটুকু হবে, সেটিই ভাবনার বিষয় ছিল। শেষ ওয়ানডে জয়ের পর একটু ভালো করার প্রত্যাশা থাকলেও ৩-০ হবে, সেটি কল্পনাতীত ছিল। সবাইকেই চমকে দিয়েছে এ ফল।

২০১৫ সালে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশ ওদের কাঠামোতে একটা ঝাঁকুনি দিয়েছিল। এবার আরেকটি দিল—তাদের দল, প্রস্তুতি নিয়ে। ওরা একটা প্রস্তুতি ম্যাচও খেলার প্রয়োজন বোধ করেনি। এটা ভাবার সময় এসেছে যে খেলোয়াড়েরা মেশিন নয়। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার আছে।

Also Read: বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ধবলধোলাই করার পথে আরও যত রেকর্ড সাকিবদের

আমাদের এখানে তো ওরা আসতেও চায় না, ওদের ওখানে আমন্ত্রণ জানানো তো আরও পরে। বৈষম্যমূলক একটা ধারণা আছে তাদের। সেসবের একটা জবাব দিয়েছে আমাদের খেলোয়াড়েরা। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ যে আমাদের সঙ্গেও খেলা উচিত, সে বার্তা দেওয়া গেছে। সেটি শুধু ইংল্যান্ড নয়, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের ক্ষেত্রেও। আমাদের বোর্ডও হয়তো এখন এসব ব্যাপারে আরেকটু জোরালোভাবে কথা বলতে পারবে।

চট্টগ্রামের উইকেট ভালোই ছিল, সেখানে ইংল্যান্ডের ওভাবে গুটিয়ে যাওয়া ওদের না যতটা ব্যর্থতা, তার চেয়ে বেশি আমাদের বোলারদের কৃতিত্ব। এ সিরিজে বাংলাদেশ যেমন রান তাড়া করে জিতেছে, ডিফেন্ড করেও জিতেছে। এ জয়ের তৃপ্তিটা তাই আলাদা।

Also Read: নাজমুলের জন্য একটি প্ল্যাকার্ড এবং চন্দ্রবিন্দুর সেই গানের লাইন

ইংল্যান্ডকে কাল শেষ টি–টোয়েন্টি ম্যাচে হারানোর পর হাত মেলাচ্ছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা

দ্বিতীয় ম্যাচেও যেমন অমন পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে উন্নতি চোখে পড়ছে। জস বাটলারকে হাসান মাহমুদের বোল্ড করা, শেষ ম্যাচে লিটনের রানে ফেরা, মোস্তাফিজের আঁটসাঁট বোলিং, মিরাজের অমন ফিল্ডিং—এমন দলীয় সমন্বয় মনে হয় এর আগে দেখিনি। সাকিবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কথা তাই বলতেই হবে। ক্রিকেটারদের মধ্যে যে দল ও দেশের জন্য খেলার ঐক্য আছে—সেটি তারা করে দেখিয়েছে। এটি দেখতে পেরে সাবেক একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমি গর্বিত।

Also Read: আমিও ভাবিনি, আপনিও ভাবেননি, ভাবেনি কেউই

Also Read: সাকিবদের চাওয়া ‘একটু বেশি বোনাস’, বোর্ড সভাপতি বললেন, ‘দেখব’

আমরা এখন জানি, কন্ডিশনের সুবিধা একটু নিয়েই জেতা যায়, পুরো নির্ভর করতে হয় না। এখন তাই দেশের বাইরে জয়ের দিকে তাকানো উচিত। দেশেও তাই আরও ভালো স্পোর্টিং উইকেট গড়তে হবে। নতুন একটা দল নিয়েই সিরিজ জিতলাম। খেলোয়াড়দের উৎকর্ষের জন্য সর্বশেষ বিপিএলের মতো ভালো উইকেট দরকার।

সাকিব যে খেলোয়াড়দের সমর্থন আদায় করে নিতে পেরেছে, তাকে অভিনন্দন। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিশ্চয়ই দলকে উজ্জীবিত করেছে। এখন হাথুরুসিংহের উদ্দেশ্য ভিন্ন রকম হওয়া উচিত। দেশের মাটিতে জয়ের পর্ব শেষ। এখন দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। বিদেশে নিয়মিত জয়ের দিকে তাকাতে হবে।

টি–টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ট্রফি নিয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্‌যাপন

এমন দিনে একটা ব্যক্তিগত স্মৃতিও মনে পড়ছে। ১৯৯৮ সালে পরের বছরের বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি সফরে গিয়েছিলাম ইংল্যান্ডে। ব্রিস্টলে একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছিলাম। কাউন্টি এক দলের সঙ্গে বাজেভাবে হেরেছিলাম। ড্রেসিংরুম পাশাপাশি ছিল। ইংল্যান্ডের এক খেলোয়াড় আউট হয়ে ফিরে এসে শব্দ করে বলল, ‘ওয়েস্ট অব আ ডে।’ এ কথাটি আমার কানে এখনো বাজে।

এমন একটা দিনে তাই অনেক আপ্লুত আমি।

Also Read: বাংলাদেশই এশিয়ার সেরা ফিল্ডিং দল, দাবি সাকিবের