Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্যাট হাতে ছন্দে আছেন শুবমান গিল

সময় এখন শুবমান গিলের

এমনটাই তো অনুমিত ছিল!

শুবমান গিল মাঠের চারপাশে নান্দনিক সব শট খেলবেন, পরিণত মস্তিষ্কে ইনিংসগুলো বড় করবেন, ভারতকে পৌঁছে দেবেন জয়ের বন্দরে। এই ভেবেই তো ভারতীয় ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট অনেকেই তাঁকে তুলনা করতেন বিরাট কোহলির সঙ্গে।

গত কয়েক মাসে ব্যাট হাতে স্বপ্নের মতো সময় কাটিয়ে সেই ভাবনাকে আরও দৃঢ় রূপ দিয়েছেন গিল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরশু তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরির পর অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া গিলকে বর্ণনা করতে একটি নাম টেনে এনেছেন—সূর্যকুমার! পান্ডিয়ার মতে, সূর্যকুমার যাদবের মতোই একজন গিল, ভালো বলগুলোকে বাজে বলে পরিণত করে সীমানা পার করার সামর্থ্য আছে যাঁর।

বিরাট কোহলি ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই সফলতম ব্যাটসম্যান। সূর্যকুমার যাদবের গল্পটা আবার একটু ভিন্ন। টেস্টে এখনো সুযোগ হয়নি তাঁর, ওয়ানডে ক্রিকেটে মনে রাখার মতোও কিছুই করেননি। তবে টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ে নতুন এক ‘মানদণ্ড’ তৈরি করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। সূর্যকুমার আর কোহলির সঙ্গে যখন গিলের তুলনা করা হয়, তখন ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর আরও পরিণত হয়ে ওঠার বিষয়টিই ফুটে ওঠে।

Also Read: এবার টি-টোয়েন্টিতেও গিলের সেঞ্চুরি, ভারতের রেকর্ড গড়া জয়

গিলের ক্যারিয়ার খুব বেশি দিনের নয়। ওয়ানডে খেলেছেন মাত্র ২১টি। এরই মধ্যে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ভারতের হয়ে দ্রুততম এক হাজার রানের কীর্তি গড়েছেন। ১৯ ইনিংসে মাইলফলকটি ছুঁয়ে টপকে যান তারকা ব্যাটসম্যান কোহলি ও শিখর ধাওয়ানকে। হাজার রান করতে এই দুজনের লেগেছিল ২৪টি করে ইনিংস। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরির দেখাও পেয়েছেন গিল।

ওয়ানডের ইতিহাসে দ্বিশতক করা সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটারও তিনি। ২৩ বছর ১৩২ দিন বয়সে কীর্তিটি গড়েছেন। চলতি বছরে ওয়ানডেতে গিলের ৬ ইনিংসে রান ৫৬৭। যে গতিতে ছুটছেন, ১৯৯৮ সালে শচীন টেন্ডুলকারের এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ (১৮৯৪) রানের রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে বলে অনুমান করছেন অনেকে।

ওয়ানডের ইতিহাসে দ্বিশতক করা সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার শুবমান গিল

টেস্ট ক্রিকেটেও শুরুটা দারুণভাবে করেছেন গিল। সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষেই পেয়েছেন সেঞ্চুরি। যখন যে সংস্করণে খেলছেন, সেখানেই যেন নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন দারুণভাবে। অবশ্য ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ আগেই দিয়ে রেখেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪০ ম্যাচ খেলে গড় ৫২। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে যা ৫৪। ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে তাই গিলের সামর্থ্য নিয়ে কখনোই প্রশ্ন ছিল না।

Also Read: গিলকে ‘মিনি রোহিত শর্মা’ বলছেন রমিজ

কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে? একটা প্রশ্ন তো ছিলই! প্রশ্নটা ছিল বলেই তো পৃথ্বী শ থাকতে কেন একাদশে শুবমান গিল—নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে এই প্রশ্ন বারবার উচ্চারিত হয়েছে। সেঞ্চুরি করার পর গিল নিজেও এটিকে বিশেষ সেঞ্চুরির তকমা দিয়েছেন। পান্ডিয়া অবশ্য শুরু থেকেই গিলের ওপর ভরসা রেখেছেন, বলেছিলেন প্রথম সুযোগ গিলই পাবেন।

Also Read: দিনে ২৫০ ওভার বাউন্সার খেলিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে গিলকে

নিজেকে নতুন করে চেনানোর ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৩ বলে ১২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন গিল। এই ইনিংস খেলার পথে ১২ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৭টি ছয়। ৩৫ বলে ফিফটি, সেখান থেকে তিন অঙ্কে পৌঁছাতে লেগেছে ১৯ বল। মুখোমুখি হওয়া শেষ ১৮ বলে গিল করেছেন ৫৯ রান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ।

গত বছরের এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিরাট কোহলির করা ১২২ রানকে ছাড়িয়ে গেছেন তরুণ ওপেনার। সুরেশ রায়না, রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল ও কোহলির পর ভারতের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরির কৃতিত্ব এখন গিলের। কীর্তিটি গড়েছেন মাত্র ৪০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেই।

অধিনায়ক পান্ডিয়াও গিলকে তিন সংস্করণের ক্রিকেটার হিসেবেই দেখছেন, ‘গিল টেকনিক্যালি খুবই ভালো। আমার মনে হয়, ভারতের ক্রিকেটের জন্য ও বড় এক সম্পদ হবে।’

Also Read: গিলের ডাবল সেঞ্চুরির পরও কেন খুশি নন তাঁর বাবা

তিন সংস্করণে খেলার প্রশ্ন যখন আসছে, ব্যস্ত সূচিতে তিন সংস্করণে খেলা সম্ভব কি না, এই প্রশ্নও চলে আসে। গিল অবশ্য একাধারে খেলার ক্লান্তি নিয়ে ভাবছেন না, খেলে যেতে চান সব সংস্করণেই, ‘আপনি যখন নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন, আমার মনে হয় না, এখানে অবসাদের কোনো ব্যাপার আছে। আমি সব সময় ভারতের হয়ে খেলতে চেয়েছি। ভারতের হয়ে তিন সংস্করণে খেলতে পারা একটা আশীর্বাদ।’

Also Read: এবার ওয়ানডেতে গিলের ডাবল সেঞ্চুরি