Thank you for trying Sticky AMP!!

ফুটবল নয়, আন্দ্রেই শেভচেঙ্কোর মনে এখন শুধুই দেশের মানুষের নিরাপত্তা

নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু ঠেকানোই এখন তাঁর কাজ

আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো ইউক্রেনের সেরা ফুটবলার। তাঁর আগে-পরে এমন কারও আবির্ভাব হয়নি দেশটি থেকে। শুধু ফুটবল কেন, সব খেলা মিলিয়েই সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদদের ক্ষুদ্র তালিকায় জায়গা তাঁর। খেলোয়াড় হিসেবে দেশকে নিজের শ্রেষ্ঠ সময় উপহার দিয়েছেন, কোচ হয়েও দেশকে ইউরোতে নিয়ে গেছেন। কিন্তু গত কিছুদিন ফুটবল নিয়ে ভাবার সময়ই পাচ্ছেন না।

Also Read: যুদ্ধের মধ্যে খেলতে চাইছে না ইউক্রেন

এ মাসের শুরুতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনে। প্রায় এক মাস হতে চলল, এখনো যুদ্ধ চলছে। এ অবস্থায় ফুটবল নয়, শেভচেঙ্কো ভাবছেন দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া ও তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা নিয়েই এখন তাঁর যত চিন্তা।

ইউক্রেন জাতীয় দলের হয়ে ৪৮টি গোল শেভচেঙ্কোর

ডেইলি মেইলে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শেভচেঙ্কো। সাবেক চেলসি তারকার সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক লিভারপুল তারকা ও বর্তমান বিশ্লেষক জেমি রেডন্যাপ। সাক্ষাৎকারে যুদ্ধ শুরু হওয়ার খবর কীভাবে জেনেছেন, সেটাও বলেছেন শেভচেঙ্কো, ‘আমি ঘুমাচ্ছিলাম। একটা ফোন এল। আমার মায়ের ফোন। বললেন, যুদ্ধ শুরু হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করিনি রাশিয়া এই পথে এগোবে এবং যুদ্ধ শুরু করবে। আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছি।’

Also Read: কিয়েভ থেকে রিও—ব্রাজিলের ১১ ফুটবলার যেভাবে প্রাণ নিয়ে দেশে ফিরলেন

যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলছিলেন, বেসামরিক মানুষ এই হামলার ভুক্তভোগী হবেন না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সাধারণ মানুষ, এমনকি শিশুরাও প্রাণ হারিয়েছেন যুদ্ধে। বিদ্যালয়, হাসপাতাল—হামলা থেকে বাদ পড়েনি কিছু।

এসি মিলানের জার্সিতে ব্যালন ডি'’অর জিতেছিলেন শেভচেঙ্কো

শেভচেঙ্কো তাই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের বাঁচানোতেই বেশি নজর দিচ্ছেন, ‘আমি চার সন্তানের পিতা, জেমি তোমারও তিনটি সন্তান আছে। আমাদের পক্ষে এটা সহ্য করা সম্ভব নয়। নিষ্পাপ শিশুরা মারা যাচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়া। এ নিয়েই আমি কাজ করছি, এ যুদ্ধ থামাতে চাইছি। এ যুদ্ধের কোনো মানে হয় না।’

Also Read: রাশিয়ার আক্রমণে ইউক্রেনে নিহত দুই ফুটবলার

যুদ্ধে প্রাণ হারানো স্বাভাবিক ঘটনা, এটা মেনে নিতে রাজি শেভচেঙ্কো। কিন্তু বিনা কারণে নিরপরাধ শিশুর মৃত্যু সহ্য হচ্ছে না সাবেক ফুটবলারের, ‘আমি শুধু একটা জিনিস চাই, আমার দেশে শান্তি ফিরে আসুক। নিষ্পাপ মানুষের মৃত্যু বন্ধ হোক, শিশুদের মৃত্যু বন্ধ হোক। সবাই জানি, যুদ্ধ মানেই নিষ্ঠুরতা। কিন্তু এটা সহ্য করা সম্ভব নয়।’

যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ডাগআউটেই ব্যস্ত ছিলেন শেভচেঙ্কো

রাশিয়ার হুমকির মুখেও নতি শিকার করেননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্কই পুতিনের ক্রোধের কারণ। তবে শেভচেঙ্কো মনে করেন, জেলেনস্কি তাঁর দেশের মানুষের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি চাইলেই পালাতে পারতেন কিন্তু পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন, তিনি থাকছেন এবং আমাদের দেশকে রক্ষা করতে হবে। এটা ইউক্রেনের মানুষকে একতাবদ্ধ করেছে। তিনি তাদের সঙ্গে রয়ে গেছেন এবং আমরা হাল ছাড়ব না। আমরা আমাদের পছন্দের জন্য লড়ব, আমাদের স্বাধীনতার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য লড়ব। যখন আপনি দেখেন, একটা মানুষ কোনো অস্ত্র ছাড়াই ট্যাংক থামাতে এগিয়ে যাচ্ছে, এটা কত শক্তিশালী এক বার্তা। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব। আমরা কেউ রাশিয়াকে চাই না।’