Thank you for trying Sticky AMP!!

আপাতত কোচিং থেকে দূরে আছেন জিনেদিন জিদান

পিএসজি নাকি জুভেন্টাস, কোথায় যাচ্ছেন জিদান?

ক্লাবের প্রসঙ্গ উঠলে পিএসজি, আল নাসর ও জুভেন্টাস; জাতীয় দলের প্রসঙ্গ উঠলে ফ্রান্স, ব্রাজিল এমনকি সৌদি আরব—২০২১ সালে সদিচ্ছায় রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার পর জিনেদিন জিদানকে কতবারই তো এসব দলের সম্ভাব্য প্রধান কোচ বানিয়ে দিয়েছে ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যম।

মেসি–নেইমারদের কোচ হতে ক্লাবটির কর্ণধার ও কাতারি আমির তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে দেখা করতে কাতারে গেছেন জিদান, এমন গুজবও রটেছে। তবে তিনি কিংবা তাঁর এজেন্ট বরাবরই এসব খবরকে ‘ভুয়া’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। জিদানের কোচ হওয়ার গুঞ্জন উঠলেই তাই ধরে ধরে বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর নাম সূত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হয়।

জিদানের কোচিংয়ে ফেরার গুঞ্জন কিছুদিন বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি আবার শুরু হয়েছে। এবার আর উড়ো নয়, বিশ্বস্ত সূত্র থেকে খবর এসেছে বলেও দাবি করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো। তা কোন দলের কোচ হচ্ছেন ৫০ বছর বয়সী কিংবদন্তি? ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘আরএমসি স্পোর্টস’ বলছে জুভেন্টাসের নাম, লে’কিপের দাবি পিএসজি। তবে ইতালিয়ান দৈনিক ‘লা স্তাম্পা’ আবার দাবি করেছে, পিএসজি ও প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবের চেয়ে জুভেন্টাসকেই পছন্দ জিদানের। জুভেন্টাসের কয়েকজন খেলোয়াড়কে নিয়ে তাঁর মধ্যে নাকি কৌতূহল কাজ করছে। সাবেক ক্লাবের হারানো গৌরবও ফিরিয়ে আনতে চান তিনি।

দি মারিয়াদের কোচ হবেন জিদান?

২০০১ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার আগে পাঁচ মৌসুম জুভেন্টাসে খেলেছেন জিদান। ইতালিয়ান ক্লাবটিতে থাকতেই বিশ্ব ফুটবলে হয়ে উঠেছিলেন বড় নাম। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপের পর জিতেছেন ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ ও ফিফা কনফেডারেশন্‌স কাপ। ২২ বছর পর সেই জুভেন্টাসেই প্রধান কোচ হয়ে ফিরতে পারেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার, দাবি ‘লা স্তাম্পা’র।

সম্ভাব্য সেরা ঠিকানা বেছে নিতে সঠিক মুহূর্তের অপেক্ষা করছিলেন জিদান। সেই সময়টা এসে গেছে বলে জানিয়েছে ‘আরএমসি স্পোর্টস’। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্ভাব্য সেরা ঠিকানার নাম জুভেন্টাস। তুরিনের বুড়িদের দলে কোচ হয়ে ফেরার কারণগুলোও ব্যাখ্যা করেছে ‘আরএমসি স্পোর্টস’। অন্যতম কারণ ইতালিয়ান সিরি ‘আ’–তে ১৫ পয়েন্ট ফিরে পাওয়া।

দলবদল নিয়ে মিথ্যাচারের দায়ে গত জানুয়ারিতে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন জুভদের এ শাস্তি দেয়। রাতারাতি তারা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ তিন থেকে দশে নেমে যায়। এতে করে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা একরকম অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ ছাড়া ক্লাবটির বর্তমান ও সাবেক পরিচালকদের কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

Also Read: ব্রাজিলের কোচ হওয়ার কোনো আগ্রহ নেই জিদানের

১৯৯৬ সালে শেষবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে জুভেন্টাস। পরের ২৭ বছরে ১২ জন কোচ পাল্টিয়েও ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরা হয়নি। জুভেন্টাস এবার এমন একজনকে কোচ হিসেবে চাইছে, যাঁর সিভিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে চূড়ান্ত সফলতার কথা লেখা আছে।

তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করার পর সম্প্রতি ১৫ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে জুভেন্টাস। আবার উঠে এসেছে লিগ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ তিনে। মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রির অধীনে দলটি দারুণ ছন্দে আছে। তাই সেরা চারে থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা নিশ্চিত করা তাদের জন্য খুব একটা কঠিন কাজ হওয়ার কথা নয়। এমনটা হলে জিদানের কোচ হতে কোনো আপত্তি থাকবে না বলে জানিয়েছে ‘আরএমসি স্পোর্টস’।

সেই ১৯৯৬ সালে শেষবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে জুভেন্টাস। পরের ২৭ বছরে ১২ জন কোচ পাল্টিয়েও ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরা হয়নি। জুভেন্টাস এবার এমন একজনকে কোচ হিসেবে চাইছে, যাঁর সিভিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে চূড়ান্ত সফলতার কথা লেখা আছে। রিয়াল মাদ্রিদকে হ্যাটট্রিক শিরোপা জিদানের চেয়ে এ পদে ভালো আর কে আছেন!

কোচিং থেকে সরে আসার পর পরিবারকে নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন জিদান

ওদিকে লে’কিপ বলছে, অনেক দিন লেগে থাকার পর এবার নাকি জিদানকে রাজি করানোর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী পিএসজি। ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হতেই নাকি এত দিন অন্য কোনো দলের দায়িত্ব নেননি তিনি। তবে ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ) দিদিয়ের দেশমের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করায় আপাতত জিদানের জাতীয় দলের কোচ হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। দ্রুত কোচিংয়ে ফিরতে ক্লাব ফুটবলকেই বেছে নিতে চাইছেন সাবেক অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।

Also Read: ফুটবলের আইন কার্যকরে সহায়তা করবেন জিদান-মরিনিও

খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে মোট চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ রিয়াল মাদ্রিদকে উপহার দিয়েছেন জিদান

ক্রিস্তোফ গালতিয়েরের অধীনে এক ফ্রেঞ্চ লিগ আঁ ছাড়া কোনো প্রতিযোগিতাতেই ভালো করতে পারছে না পিএসজি। কারিকারি অর্থ ঢেলেও ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ মুখ থুবড়ে পড়ায় জিদানকে গুরুদায়িত্ব দিতে চাচ্ছে প্যারিসিয়ানরা। তবে লে’কিপ এও জানিয়েছে, পিএসজি প্রজেক্ট জিদানের কাছে ‘সন্দেহপ্রবণ’ মনে হয়েছে। ড্রেসিংরুমে অস্থিরতা ও দ্বন্দ্বের কারণও নাকি এটা। এর চেয়ে জুভেন্টাসের প্রজেক্ট জিদানের কাছে টেকসই মনে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত পিএসজি যদি জিদানের মন গলাতে না পারে, তাহলে জোসে মরিনিওকে আনার চেষ্টা করবে।

আবার পিএসজিকে আরেক দফা ‘না’ বলে জিদান জুভেন্টাসেরই কোচ হচ্ছেন, এই নিশ্চয়তাও দিচ্ছে না ‘আরএমসি স্পোর্টস’। কারণ, ফরাসি কিংবদন্তিকে কোচ করে আনতে হলে আলেগ্রির ছাঁটাই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। ক্লাবটির সঙ্গে ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে তাঁর। এর আগে তাঁকে বরখাস্ত করলে অতিরিক্ত ২৩৫ কোটি টাকা দিতে হবে জুভেন্টাসকে। বৈশ্বিক মন্দার এ সময়ে ইতালির ঘরোয়া ফুটবলের সফলতম ক্লাবটি এত টাকা গচ্চা দেবে কিনা, সে প্রশ্নও উঠছে।

তা ছাড়া জুভেন্টাসেরই কয়েকজন পরিচালক আলেগ্রিকে কোচ হিসেবে রেখে দেওয়ার পক্ষে। দ্বিতীয় দফা জুভদের কোচ হয়ে ফেরা আলেগ্রির অধীনে এ মৌসুমে ইউরোপা লিগ ও ইতালিয়ান কাপের সেমিফাইনালে উঠেছে। আর সিরি ‘আ’–তে তো ১৫ পয়েন্ট ফিরে পেয়ে আবার শীর্ষ তিনে উঠে এসেছে। এমন সাফল্যের পরও আলেগ্রিকে সরানোর কোনো যুক্তি দেখেন না একাধিক পরিচালক।

Also Read: আল নাসর কোচ হিসেবে রোনালদোর পছন্দ জিদান