Thank you for trying Sticky AMP!!

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নতুন করে জীবন গড়ার লড়াই

শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ঘরবাড়ি। তালেবান সদস্য ও গ্রামবাসী মিলে খালি হাতে সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশের বারনাল জেলায়

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ি গ্রাম উচকাই। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা বেশ ভঙ্গুর। ভাঙাচোরা, সংকীর্ণ ও ধুলাময় পাহাড়ি রাস্তার কারণে পার্শ্ববর্তী শহর থেকেও এখানে আসতে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। কয়েক দিন ধরে দুর্গম এই গ্রাম কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। নেই বিদ্যুৎ, পানি ও খাবার। দেশটিতে গত বুধবার ভোরে সংঘটিত ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের পর এ গ্রামের বাসিন্দারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে উচকাই গ্রামের অবস্থান। কাজেই এখানকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সহজেই অনুমান করা যায়। ভূমিকম্পে গ্রামটির ঘরবাড়ি, কারখানা, দোকান ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু এই গ্রামেই নিহত হয়েছেন ৩৫ জনের বেশি। ভূমিকম্পে দেশটিতে মোট নিহত ব্যক্তির সংখ্যা সহস্রাধিক।

গ্রামটির বেঁচে যাওয়া মানুষেরা এখন ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নতুন করে জীবন গড়ার লড়াই শুরু করেছেন। কিন্তু আবাস হারিয়ে তাঁদের এখন বেঁচে থাকার জন্য ত্রাণসহায়তার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কখনো কখনো সেটাও পাচ্ছেন না তাঁরা। গ্রামের ২৩ বছর বয়সী বাসিন্দা রাকিম জান বলেন, ‘আশা করি, আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরকার কিংবা বিশ্ব সম্প্রদায় দ্রুত সরবরাহ করবে।’

Also Read: খাবার, পানি ছাড়াই দিন পার করছে আফগানরা

বুধবারের ভূমিকম্পে রাকিমদের একতলা বাড়িটি ধ্বংস হয়ে গেছে। পরিবারের ১১ জন সদস্যকে হারিয়েছেন তিনি। রাকিম বলেন, ‘গ্রামের প্রতিটি পরিবার কাউকে না কাউকে হারিয়েছে। এখন বড় ১০টি তাঁবুতে আরও ৪টি পরিবারের সঙ্গে আশ্রয় নিয়েছি। সেখানে ১৫ জন নারী ও ২০ শিশু রয়েছে।’

দুর্গম গ্রামটিতে সরকারি সহায়তা পৌঁছেছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। রাকিম জান বলেন, ‘আমাদের তাঁবু, খাবার ও ময়দা দেওয়া হয়েছে। তবে খাবারের পরিমাণ খুবই কম। এসব সহায়তা দিয়ে কত দিন টিকে থাকা যাবে, তা নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন অনেকেই।’

উচকাই গ্রামে ত্রাণসহায়তা পৌঁছে দিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। জরুরি চিকিৎসাসেবা দিয়েছে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস। এ ছাড়া কাবুলের এক ব্যবসায়ী দুর্গম এই পাহাড়ি গ্রামে ত্রাণসহায়তা দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার এই ত্রাণ নিয়ে একটি ট্রাক গ্রামটিতে পৌঁছালে সেখানে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসী ট্রাক থেকে ত্রাণসামগ্রী ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

Also Read: খালি হাতে চলছে উদ্ধার, ত্রাণের জন্য হাহাকার

গ্রামের বাসিন্দা কাওসার উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, এখন যেসব ত্রাণ আসছে, তা অপ্রতুল। বিতরণকারীরা ত্রাণ দেওয়ার চেয়ে ছবি তুলতেই বেশি আগ্রহী মনে হচ্ছে। এতে ত্রাণ বিতরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে। তাঁরা তাঁবু ও খাবার দিচ্ছে। কিন্তু কেউ কেউ আফগানদের রক্ত নিয়ে ব্যবসায় নেমেছে।

Also Read: ভূমিকম্পে পরিবারের ১৯ জনকে হারিয়েছেন আফগান নারী

Also Read: বিদেশের কাছে ত্রাণ চায় তালেবান