যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিস পুলিশের সেই বিশেষ ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের মেমফিস পুলিশের বিশেষ ‘স্করপিয়ন ইউনিট’ স্থায়ীভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এই ইউনিটের কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক বিবৃতিতে স্করপিয়নের বাকি ইউনিটগুলোও ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মেমফিস পুলিশ বিভাগ।
‘স্ট্রিট ক্রাইমস অপারেশন টু রেস্টর পিস ইন আওয়ার নেইবারহুডস’ বোঝাতে সংক্ষেপে স্করপিয়ন (Scorpion) নামটি ব্যবহার করা হয়। এটি ইউনিট পুলিশের ৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। নির্দিষ্ট এলাকায় অপরাধ সংঘটনের মাত্রা কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে এই ইউনিট গঠন করা হয়েছিল।
গত ৭ জানুয়ারির এক ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর দেখা যায়, বিলুপ্ত ঘোষিত এই ইউনিটের কর্মকর্তারা ওই দিন ২৯ বছর বয়সী টায়ার নিকোলসকে সড়কে ফেলে পেটাচ্ছেন ও লাথি মারছেন। গ্রেপ্তারের তিন দিন পর তিনি মারা যান।
বিবৃতিতে মেমফিস পুলিশ বিভাগ বলেছে, সবার স্বার্থে এই ইউনিটকে স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘কয়েকজনের জঘন্য কর্মকাণ্ডে স্করপিয়নের নামে অসম্মানের ছায়া নেমে এসেছে। তাই এটি অপরিহার্য যে, আমরা মেমফিস পুলিশ বিভাগ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষোভ প্রশমনের প্রক্রিয়ায় যেন সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করি।’
ডাকাতি, গাড়ি চুরিসহ সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের বড় ধরনের অপরাধ দমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে ২০২১ পুলিশের স্করপিয়ন ইউনিট চালু করা হয়। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগে নিকোলসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
নিকোলসের মৃত্যুর ঘটনায় যে পাঁচ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘দ্বিতীয়-ডিগ্রির হত্যার’ অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁরা সবাই কৃষ্ণাঙ্গ। টেনেসির আইনে ‘দ্বিতীয়-ডিগ্রির হত্যা’কে জেনেশুনে অন্যকে ‘হত্যা’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা পূর্বপরিকল্পিত নয়। তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলো হলো—জেনেশুনে গুরুতর আক্রমণ, গুরুতর অপরাধজনিত অপহরণ, পেশাগত অসদাচরণ ও নিপীড়ন।
সাবেক এই পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা হলেন— তাদারিয়াস বেন, ডেমেট্রিয়াস হ্যালি, ডেসমন্ড মিলস জুনিয়র, এমিট মার্টিন তৃতীয় ও জাস্টিন স্মিথ। কারা নথি অনুযায়ী, পাঁচ কর্মকর্তার চারজনকেই শুক্রবার সকালে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
নিকোলসকে পেটানোর ভিডিও প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও হয়েছে। আরও বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থা রয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে পুলিশ কর্মকর্তাদের হাতে জর্জ ফ্লয়েড (৪৬) নামের আরেক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার শিকার হন। জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগে ২৫ মে তাঁকে আটক করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরের পুলিশ। আটকের সময় ফ্লয়েডের ঘাড় হাঁটু দিয়ে সড়কে চেপে ধরেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। এ সময় নিশ্বাস নিতে পারছিলেন না বলে জানান ফ্লয়েড। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।