মামা আর কাকাতুয়া

অলংকরণ: শিখা
অলংকরণ: শিখা

সেদিন রফিক মামা একটি কাকাতুয়া পাখি নিয়ে এল। আম্মু তো রেগে আগুন। খাঁচা কোথায় পাই! কী সুন্দর পাখিটা! সবাই বলে রফিক মামার মাথায় নাকি হালকা সমস্যা আছে। তবে আমি আর হাবলু জানি যে পৃথিবীতে মামার মতো ভালো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। মা ধমক দিয়ে বললেন, ‘কী রফিক? এত দাম দিয়ে খামোখা কেন এই পাখিটা আনলি?’ মামা কিছু না বলে শুধুই মেঝের দিকে চেয়ে রইলেন আর মা সারা দিন ওই এক কথা নিয়েই রাগে গজগজ করতে থাকলেন।

পরদিন ভোরে মামা আমাকে আর হাবলুকে ঘুম থেকে ডেকে ছাদে নিয়ে এলেন। তার হাতে সেই কাকাতুয়া পাখিটা। ছাদে এলে তিনি বলতে লাগলেন, ‘কয়েক মাস আগে এটাকে মাঠের কাছের মন্দিরের পেছনে পেয়েছিলাম। ডানা-টানা ভেঙে একেবারে মরো মরো অবস্থা। এরপর থেকে কয়েক মাস কাউকে না বলে এটাকে সুস্থ করে তুলতে লাগলাম। সুস্থ হওয়ার পর গতকাল বাসায় নিয়েছিলাম। কিন্তু আপা তো আমার কথা কানেই তুলল না। আজ এটাকে ছাড়তে এসেছি।’ বলে কাকাতুয়াটাকে ছেড়ে দিলেন। পাখিটা উড়ে যেতে লাগল দিগন্তে। ভোরের প্রথম আলোয় আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম মামার গাল চোখের পানিতে চিকচিক করছে।

কয়েক দিন পর ছাদে উঠতেই আমার চোখ ছানাবড়া। দেখি, মামা ছাদের রেলিংয়ে বসে আছেন। তাঁর কাঁধে সেই কাকাতুয়া পাখিটা!

হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, হবিগঞ্জ