ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া ডাকঘরের ছাদের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে গেছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া ডাকঘরের ছাদের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে গেছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো

ভেজা স্যাঁতসেঁতে ছাদ। পলেস্তারা খসে ছাদের রড বেরিয়ে গেছে। দেয়ালেও বড় বড় ফাটল। এই চিত্র বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা ডাকঘরের। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সরেজমিনে গত বৃহস্পতিবার দেখা যায়, ডাকঘরের পলেস্তারা খসে ছাদের কয়েকটি স্থানে ঢালাইয়ের রড বের হয়ে গেছে। ছাদের বিমে ফাটল ধরেছে। সিলিং ফ্যানের হুকগুলোয় মরিচা ধরেছে। গত বছর হুক খুলে একটি সিলিং ফ্যান খুলে নিচে পড়ে যায়। তবে ওই দুর্ঘটনায় কেউ আহত হননি। এরপর সব ফ্যান খুলে রাখা হয়। কর্মকর্তারা এখন টেবিল ফ্যান ব্যবহার করেন। কার্যালয়টির দেয়ালেও বড় বড় ফাটল ধরেছে। ভবনের মেঝের ঢালাই উঠে গিয়ে তা দেবে গেছে। বর্ষার সময় কার্যালয়ের কাগজপত্র সব সময় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। বৈদেশিক ও ই-মোবাইলে টাকা লেনদেনের জন্য সম্প্রতি ডাক বিভাগ কম্পিউটার দিয়েছে এ কার্যালয়ে। সেটিও পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। তিন কক্ষের এ জরাজীর্ণ ডাকঘরটিতে কার্যক্রম চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কার্যালয়ের পাশে পোস্টমাস্টারের আবাসিক ভবন। ওই ভবনটিরও একই অবস্থা।
গত বৃহস্পতিবার ডাকঘরে সঞ্চয় হিসাবের টাকা নিতে আসেন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক রণজিৎ সাহা। তিনি বলেন, প্রতি মাসে একবার পোস্ট অফিসে আসতে হয়। ভবনের ভেতরে বেশিক্ষণ থাকলে বুকের ভেতর ধড়ফড় করে। খানিক পরপর ছাদ থেকে বালু ঝুরঝুর করে মাথায় পড়ে। দেয়ালের ফাটল দিয়ে বাইরে থেকে অনায়াসে সাপ ঢুকে পড়তে পারে।
জোগারপাড়ার আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘বেশি লাভের আশায় ব্যাংকে টাকা না রেখে পোস্ট অফিসে রেখেছি। অনেক দিন ধরে পোস্ট অফিসের এ অবস্থা। দেখে মনে হয় পোস্ট অফিসের কর্মকর্তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন। দুর্ঘটনায় গ্রাহক মারা গেলে তাঁদেরই বা কী!’
কর্মরত পোস্টমাস্টার আহম্মদ আলী বলেন, তিনি আড়াই বছর ধরে এ কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। চিঠিপত্রের কাজের চেয়ে এখানে টাকা লেনদেনের ভিড় বেশি। এ কার্যালয়টি প্রায় দেড় যুগ আগে নির্মাণ করা হয়। চাকরি করেন বলে সবকিছু মেনে নিতে হচ্ছে। কোনো সুস্থ মানুষ এসব ভবনে থাকবেন না। তিনি একাধিকবার ভবনের এ দুর্দশা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল মেলেনি।
বগুড়া প্রধান ডাকঘরের তত্ত্বাবধায়ক (সুপারিনটেনডেন্ট) আফজাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, দুপচাঁচিয়া ডাকঘর ভবনের অবস্থা রাজশাহী প্রধান ডাকঘরের ভবন নির্মাণ বিভাগে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই সংস্কারের কাজ করা হবে।