ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত দুই নেতার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা

গুলিস্তানে ডিএসসিসির উচ্ছেদ অভিযান চলার সময় অস্ত্র হাতে হকারদের ধাওয়া করেন সাব্বির হোসেন (বাঁয়ে) এবং আশিকুর রহমান  l ফাইল ছবি
গুলিস্তানে ডিএসসিসির উচ্ছেদ অভিযান চলার সময় অস্ত্র হাতে হকারদের ধাওয়া করেন সাব্বির হোসেন (বাঁয়ে) এবং আশিকুর রহমান l ফাইল ছবি

রাজধানীর গুলিস্তানে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করার ঘটনার চার দিন পর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত দুই নেতার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত সোমবার রাতে ওই দুজনসহ অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় এই মামলা করে পুলিশ।
মামলায় আসামি হিসেবে ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন এবং ওয়ারী থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে হকারদের ওপর হামলা, মারধর ও গুলিবর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নান।
গুলিস্তানে ফুটপাত ও সড়ক থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় একই রাতে মো. সিরাজ নামের এক হকার পল্টন থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
২৭ অক্টোবর ওই অভিযানে ফুটপাত ও সড়ক থেকে পাঁচ শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ সময় ডিএসসিসির কর্মচারী ও একদল যুবকের সঙ্গে হকারদের দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ওই যুবকদের মধ্য থেকে সাব্বির ও আশিকুর আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ফাঁকা গুলি ছোড়েন। অস্ত্র হাতে তাঁদের ছবি ২৮ অক্টোবর প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়।
সোমবার সাব্বির ও আশিককে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।
শাহবাগ থানায় করা মামলায় বলা হয়েছে, ২৭ অক্টোবর দুই থেকে আড়াই শ হকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে জড়ো হয়ে মিছিল করেন ও স্লোগান দেন। পুলিশের সদস্যরা তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টায় ছিলেন। তখন সিটি করপোরেশনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা প্রায় ২০টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে হকারদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। এ সময়ই দুই ছাত্রলীগ নেতা হত্যার উদ্দেশ্যে মিছিলকারীদের গুলি করলে মিছিলকারী হকাররা আত্মরক্ষার্থে মাটিতে শুয়ে পড়েন। ওই ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গী আরও ৫০-৬০ জন হকারদের মারপিট ও ধাওয়া করলে তাঁরা সিটি করপোরেশনের কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান। সাব্বির, আশিকুরসহ ওই ৫০-৬০ জন লাঠিসোঁটাসহ মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিছিলকারীদের ওপর আক্রমণ, মারধর ও হত্যা করার উদ্দেশ্যে গুলি করে অপরাধ করেছেন।
এজাহারে মামলা করতে বিলম্বের কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, বিবাদীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে গ্রেপ্তার অভিযান চালানোর জন্য মামলা করতে দেরি হয়েছে।
গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে ওই দুজনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলাটি হয়েছে।
তবে শাহবাগ থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অস্ত্র উদ্ধার না হলে সাধারণত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয় না। মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।