পানিফল চাষে অরুণের সাফল্য

দীঘিনালা উপজেলার মধ্য বোয়ালখালী অনাথ আশ্রম এলাকার রত্ন মোহন মেম্বার পাড়ায় পুকুর থেকে পানিফল তুলছেন অরুণ মিত্র চাকমাl প্রথম আলো
দীঘিনালা উপজেলার মধ্য বোয়ালখালী অনাথ আশ্রম এলাকার রত্ন মোহন মেম্বার পাড়ায় পুকুর থেকে পানিফল তুলছেন অরুণ মিত্র চাকমাl প্রথম আলো

পুকুর থেকে পানিফল তুলছিলেন অরুণ মিত্র চাকমা (৩৯)। শিঙাড়ার মতো দেখতে ফলগুলোর কোনোটি সবুজ, কোনোটির রং লাল। পুকুরের পাড়ে বসে ফলগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করছিলেন তাঁর স্ত্রী পদ্মশ্রী চাকমা। পানিফলের খোসা ছাড়ালে হালকা মিষ্টি বাদামের মতো সাদা শাঁস।

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার মধ্য বোয়ালখালী অনাথ আশ্রম এলাকার রত্ন মোহন মেম্বার পাড়ার বাসিন্দা অরুণ মিত্র চাকমা প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো এই ফল এবার বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছেন। তাঁর পুকুরের এই ফল উপজেলার হাটবাজারে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রিও হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৪০ কেজি ফল বিক্রি করেছেন তিনি। ফলন এখনো পুরোপুরি তোলেননি তিনি। আশা করছেন, এই মৌসুমে ২০-৩০ হাজার টাকা লাভ হবে তাঁর।

গত ২৮ নভেম্বর রত্ন মোহন মেম্বার পাড়ায় গেলে অরুণ মিত্র চাকমা বলেন, জামালপুর থেকে পানিফলগাছের লতা এনে পুকুরে লাগিয়েছেন তিনি। তাঁর সাফল্য দেখে অনেকেই এখন পানিফল চাষ করতে চাইছেন।

 অরুণ মিত্র চাকমা আরও বলেন, ‘পানিফল চাষ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। গত বছর ইটের ভাটায় কাজ করতে আসা মোতালেব নামে এক শ্রমিক আমাকে এ ফলটি সম্পর্কে ধারণা দেন। তিনি আমার পুকুরটি দেখে বলেন, পুকুরে মাছ চাষ করার পাশাপাশি পানিফল চাষ করা যাবে। এরপর তাঁর মাধ্যমে জামালপুর থেকে ২০টি পানিফলের লতা এনে পুকুরে লাগাই। কার্তিক মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফলন আসতে শুরু করেছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এম এম শাহনেওয়াজ বলেন, পানিফল একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। এটি হাওর-বাঁওড়সমৃদ্ধ এলাকায় বেশি চাষ হয়। এই ফলে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। পানিফল চাষ খুবই লাভজনক।

শিঙাড়ার মতো দেখতে ফলগুলোর কোনোটি সবুজ, কোনোটির রং লাল l প্রথম আলো
শিঙাড়ার মতো দেখতে ফলগুলোর কোনোটি সবুজ, কোনোটির রং লাল l প্রথম আলো

পানিফলের গুণাগুণ সম্পর্কে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের পরামর্শক পলাশ নাগ বলেন, পানিফলে ক্যালসিয়াম, লোহা, আমিষ, চর্বি, খাদ্য আঁশ, খনিজ পদার্থ, শর্করাসহ সাতটি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটি শরীর গঠন ও রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।